Sports News

‘স্টিল ডার্বি’ জিতল জামশেদপুর, টানা দ্বিতীয় হার বেঙ্গালুরুর

‘স্টিল ডার্বি’ বলা হচ্ছিল। জেএসডব্লু স্টিল না টাটা স্টিল? লড়াইও হল একই রকম, ইস্পাত-কঠিন। বেঙ্গালুরু এফসি বল ধরে খেলল, নিজেদের পায়ে বলের দখল রেখে। স্টিভ কোপেলের দলও খেলল যেভাবে তাদের কোচ খেলাতে চাইলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:৪৩
Share:

ষষ্ঠ ম্যাচে চতুর্থবার ক্লিনশিট রেখে গেল জামশেদপুর।

বেঙ্গালুরু এফসি - ০ জামশেদপুর এফসি - ১

Advertisement

(ত্রিনদাদে পে. ৯০+২)

ঘরের মাঠে পরপর দুটি ম্যাচে হারল বেঙ্গালুরু এফসি। দু’বারই খেলার শেষের দিকে ভুল করে। আগের ম্যাচে ৮৯ মিনিটে চেন্নাইয়িন এফসি-কে জিতিয়েছিলেন ধনপাল গণেশ। এ দিন পরিবর্ত সামিঘ দ্যুতিকে ফাউল করে পেনাল্টি দিয়েছিলেন রাহুল ভেকে, ৯০ মিনিটে। চার মিনিটের ইনজুরি টাইমের দ্বিতীয় মিনিটে ত্রিনদাদে এনে দিলেন জামশেদপুরকে প্রতিযোগিতায় তাদের দ্বিতীয় গোল এবং তিন পয়েন্ট। চতুর্থ হিরো ইন্ডিয়ান সুপার লিগে তাদের দ্বিতীয় জয় পেয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে উঠে এল জামশেদপুর। আর, সপ্তম ম্যাচে তৃতীয় হার বেঙ্গালুরুর। আবারও লিগ তালিকায় শীর্ষে উঠতে ব্যর্থ অ্যালবার্ট রোকার দল।

Advertisement

এই ম্যাচকে ‘স্টিল ডার্বি’ বলা হচ্ছিল। জেএসডব্লু স্টিল না টাটা স্টিল? লড়াইও হল একই রকম, ইস্পাত-কঠিন। বেঙ্গালুরু এফসি বল ধরে খেলল, নিজেদের পায়ে বলের দখল রেখে। আগের ম্যাচের হার বোধহয় দুটি দলকেই বাড়তি সতর্ক রেখেছিল। ষষ্ঠ ম্যাচে চতুর্থবার ক্লিনশিট রেখে গেল জামশেদপুর। প্রাপ্তি তিন পয়েন্ট, প্রতিযোগিতার সবচেয়ে ভারসাম্যযুক্ত দলের ঘরের মাঠ থেকে।

প্রথমার্ধে বেঙ্গালুরুর সত্তর শতাংশের বেশি বলের দখল ছিল। কিন্তু সেই আধিপত্য তাদের খেলায় ছিল না কারণ, বলের দখল নিজেদের পায়ে রাখলেও সেভাবে বিপক্ষ গোলমুখ খুলে ফেলতে পারেননি সুনীল ছেত্রীরা। ছয় ম্যাচে ছয় গোল পাওয়া মিকু বার দুই গোল করার জায়গায় পৌঁছতে চেয়েছিলেন। সুব্রত পাল একবার তাঁর দূরপাল্লার শট বাঁচিয়ে দেন, আর একবার তাঁর পাঠানো সেন্টারে পার্টালুর হেডও সুব্রতর নির্ভরযোগ্য হাতে বন্দি হয়। ২৩ মিনিটে এদু গার্সিয়ার পা থেকে বল পেয়ে গোলের কাছাকাছি গেলেও সুনীলের শট সাইডনেটে। ঘরের মাঠ শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে বেঙ্গালুরুকে মনে হচ্ছিল অপ্রতিরোধ্য।

৩৮ মিনিটে চোট পাওয়ায় মেহতাব হোসেনকে তুলে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন কোচ কোপেল। মনে করা হচ্ছিল, বেঙ্গালুরু এর পর আরও বেশি আক্রমণে আসবে। বেঙ্গালুরুর আক্রমণভাগের ফুটবলাররাও খেই হারিয়ে ফেলছিলেন বিপক্ষের ডিফেন্সিভ থার্ডে পৌঁছে।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে অবশ্য জামশেদপুর হঠাৎই ম্যাচে আধিপত্য দেখাতে শুরু করেছিল। পরপর দু-মিনিটে দুবার সুযোগ পেয়েছিল এগিয়ে যাওয়ার। প্রথমে ৫৪ মিনিটে যখন বিকাশ জাইরুর ক্রস বেঙ্গালুরু রক্ষণের ফুটবলারদের এড়িয়ে পৌঁছে গিয়েছিল কেরভেনস বেলফোর্টের পায়ে। হাইতির ফুটবলার ছ-গজের বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন। আগুয়ান গুরপ্রীতকে পরাস্ত করতে বলে পা-ও লাগিয়েছিলেন বেলফোর্ট। কিন্তু গুরপ্রীতের পায়ে লেগে বল ফিরে এসেছিল। ঠিক তার দু-মিনিট পরই আবার সুযোগ পেয়েছিল জামশেদপুর। এবার শৌভিকের হেড থেকে বেলফোর্ট সাজিয়ে দিয়েছিলেন ফারুখকে। কিন্তু, দ্বিতীয় টাচ বড় হয়ে যাওয়ায় কোনও অসুবিধা হয়নি গুরপ্রীতের। আর তৃতীয় সুযোগ পেয়েছিল কোপেলের দল, ৬১ মিনিটে। বেলফোর্ট এবার সাজিয়ে দিয়েছিলেন ডানদিক থেকে উঠে-আসা জেরিকে। কিন্তু এগিয়ে এসে কোণ ছোট করে দিয়েছিলেন গুরপ্রীত। ফলে জেরির ডানপায়ের শট দূরের পোস্টের বাইরে দিয়েই চলে গিয়েছিল।

আরও পড়ুন:

কিংবদন্তিদের তালিকায় সেরা পাঁচে কোহালি, ধোনি

ম্যাচের সেরা সুযোগ অবশ্য নষ্ট করেন সুনীলই। ৭৭ মিনিটে অফসাইডের ফাঁদ এড়িয়ে তিনি বল পেয়েছিলেন পায়ে, সামনে শুধুই সুব্রত। কিন্তু সুনীলের শট সোজা সুব্রতর বুকে লেগে কর্নার হয়। ম্যাচে বেশ কয়েকবার বক্সে ভেসে আসা বল ধরতে যতটা আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছিল সুব্রতকে, অন্য দলের গোলরক্ষকরা উদ্দীপ্ত হতেই পারেন ভারতের প্রাক্তন এক নম্বর গোলকিপারকে দেখে।

বেঙ্গালুরু এই মরসুমে আইএসএল-এ কোনও ম্যাচ ড্র করেনি আগে। চারটি ম্যাচে জয় ছিল, দুটি হার। জামশেদপুর আবার রক্ষণাত্মক ছিল প্রতিযোগিতার শুরু থেকেই। পাঁচ ম্যাচে মাত্র একটিই গোল হজম করেছিল জামশেদপুর, এই ম্যাচের আগে। বোঝা সহজ ছিল, ঠিক কতটা দুর্ভেদ্য জামশেদপুরের রক্ষণ। খেলার শেষে নিজেদের গোলসংখ্যা একটি বাড়িয়ে ফিরল ‘টাটা স্টিল’, ‘জেএসডব্লু’ বেঙ্গালুরু-কে তাদের দুর্গে হারিয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন