জঙ্গলমহলে ফুটি নিয়ে মাতামাতি। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
ডিম্বাকৃতি একটা বল হাতে মাঠ দাপাচ্ছেন ধর্মেন্দ্র, জগদীশ, কল্যাণ, সৌরভ, জাফরুদ্দিনরা। কখনও শট মারছেন বলে। কখনও বা ড্রিবলিং করে হ্যান্ড পাস। রাগবি, ফুটবল, ভলিবল, বাস্কেটবল আর হাইজাম্পের মিশেলে নতুন খেলায় মেতে। নাম ‘ফুটি’। যে খেলায় এখন আগ্রহ তুঙ্গে জঙ্গলমহলে।
ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন গ্রামের স্কুল ও কলেজ পড়ুয়ারা ভাল ফুটবল খেলেন। কেউ কেউ জাতীয় স্তরে ও জঙ্গলমহল কাপে খেলেছেন। এখন তাঁরাই ফুটির অনুশীলনে ঘাম ঝরাতে ব্যস্ত। আগামী দিনে রাজ্য ও জাতীয় স্তরে খেলার সুযোগ পেতে। জাতীয় দলে জায়গা করে নিতে পারলে বিদেশের মাটিতেও খেলার সুযোগ মিলবে। আর বিদেশে ভাল পারফরম্যান্স দেখালে সুযোগ মিলতে পারে অস্ট্রেলিয়ার নানা ক্লাবে খেলার।
অস্ট্রেলিয়ায় প্রচণ্ড জনপ্রিয় ফুটি। খেলাটার নিয়মকানুন অনেকটাই রাগবির মতো। বল রাগবি বলের ছোট সংস্করণ। ফুটির দু’টি দলে ২২ জন করে ৪৪ জন খেলোয়াড় থাকেন। তবে মাঠে নামেন দু’পক্ষের ১৮ জন করে। বাকিরা রিজার্ভে। মাঠের পরিধিও হয় ডিম্বাকৃতি। দৈর্ঘ্য ১৩৫-১৮৫ মিটার। প্রস্থ ১১০ থেকে ১৫৫ মিটার। দু’দিকে ৪টি করে ৮টি গোল পোস্ট। এর মধ্যে দু’দিকে দু’টি করে চারটি ২৪ ফুট পোস্ট। বাকি চারটি ১৮ ফুট। পায়ে কিক করে উঁচু পোস্টে গোল দিতে পারলে ৬ পয়েন্ট। ছোট পোস্টগুলোতে কিক বা হাত দিয়ে গোলে এক পয়েন্ট।
আগামী ৪ ডিসেম্বর টিটাগড়ে হবে ‘ফুটি’র রাজ্য চ্যাম্পিয়নশিপ। পশ্চিমবঙ্গের ছয় জেলা প্রতিযোগিতায় নামবে। তার পরই জানুয়ারিতে হাওড়ায় জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ। যাতে ৭টি রাজ্যের দল যোগ দেবে।
জঙ্গলমহলে ‘অস্ট্রেলিয়ান রুলস ফুটবল’-চর্চা শুরু ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়া ধর্মেন্দ্র স্পোর্টস অ্যাকাডেমির উদ্যোগে। ‘ফুটি অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল’ (এফএবি) এবং ‘অস্ট্রেলিয়ান রুলস ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া’ (এআরএফএআই) সহযোগিতায় রয়েছে।
খেলাটা বছর বছর দশেক আগে কলকাতার কিছু ক্রীড়াসংস্থার কর্মকর্তাদের প্রচেষ্টায় প্রথম শুরু হয়। তার বছর খানেক পর ২০০৮-এ ভারতীয় দল মেলবোর্নে আন্তর্জাতিক চ্যাম্পিয়নশিপে যায়। তিন বছর অন্তর অস্ট্রেলিয়ায় আন্তর্জাতিক স্তরে ফুটি টুর্নামেন্ট হয়। ২০১১, ২০১৪ সালেও ভারতীয় দল আন্তর্জাতিক চ্যাম্পিয়নশিপ খেলেছে।