সিএবিতে এ বার নামফলক বিতর্ক

কথা উঠেছে, কয়েকটি সংস্থায় কর্তারা তাঁদের সুবিধা মতো লোঢা কমিটির সুপারিশ কার্যকর করছেন। পুরো দস্তুর তা মেনে নেওয়া হচ্ছে না। এর ফলে সংস্থার অভ্যন্তরেই বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:১১
Share:

বিতর্ক: সরানো হল যুগ্ম সচিব সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম ফলক। নিজস্ব চিত্র

গত দু’দিন ধরে টিকিট বণ্টন নিয়ে নাটক চলছে সিএবি-তে। তারই মধ্যে তৈরি হল আরও এক বিতর্ক। সিএবির বিদায়ী যুগ্ম-সচিব সুবীর (বাবলু) গঙ্গোপাধ্যায়ের ঘরের দরজার বাইরে লাগানো নামফলকটি সরিয়ে দেওয়া হল বৃহস্পতিবার।

Advertisement

কাজের সূত্রে বেশ কয়েক দিন শহরের বাইরে ছিলেন সুবীরবাবু। বৃহস্পতিবারই কলকাতায় পৌঁছে সিএবি এসেছিলেন। নিজের ঘরে প্রবেশ করতে গিয়েই তাঁর চোখে পড়ে এই ঘটনা। লোঢা কমিটির পারমর্শ মানলে ক্রিকেট সংস্থায় তাঁর মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে। সেই কারণেই তাঁর নাম যুগ্ম-সচিবের ঘর থেকে সরিয়ে দেওয়া হল কি না, প্রশ্ন উঠেছে। তবে এ বিষয়ে আগে থেকে কিছু জানতেন না বলে দাবি বাবলুবাবুর। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিএবি-র বিরুদ্ধে আমার কোনও বক্তব্য নেই। তবে আমি জানতে চাই, লোঢা কমিটির নিয়মের মধ্যে কি আমি একাই পড়ি? আমার ক্ষেত্রে এই নিয়ম কার্যকর করা হলে বাকি কর্তাদের ক্ষেত্রেও যেন একই নিয়ম মানা হয়।’’

নিজের বক্তব্যে সরাসরি কোনও কর্তার নাম নিতে চাননি সুবীরবাবু। তবে সিএবির প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে এ বিষয়ে তাঁর কথা হয়েছে কি না জিজ্ঞাসা করা হলে সুবীরবাবু বলেন, ‘‘ওঁর সঙ্গে কথা হয়নি কিন্তু সিএবি-তে প্রেসিডেন্ট ও সচিবের অজান্তে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে আমি বিশ্বাস করি না।’’ লোঢা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, তিন বছরের একটি মেয়াদ শেষ করার পরেই যেতে হবে ‘কুলিং অফ’ পর্বে। অর্থাৎ, তিন বছর পূর্ণ হয়ে গেলেই টানা আর সেই পদে থাকতে পারবেন না কেউ। সংস্থায় ৯ বছর হয়ে গেলে আর কেউ কোনও পদেই থাকতে পারবেন না বলে লোঢা কমিটির সুপারিশে জানানো হয়েছিল।

Advertisement

কথা উঠেছে, কয়েকটি সংস্থায় কর্তারা তাঁদের সুবিধা মতো লোঢা কমিটির সুপারিশ কার্যকর করছেন। পুরো দস্তুর তা মেনে নেওয়া হচ্ছে না। এর ফলে সংস্থার অভ্যন্তরেই বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। ভারতীয় বোর্ডের অধীন কয়েকটি রাজ্য সংস্থা লোঢা কমিটির সুপারিশ পুরোপুরি কার্যকর করলেও সিএবি তা করতে চায়নি।

বাবলুবাবুর ঘরের দরজা থেকে নামফলক খুলে দেওয়া নিয়ে জানতে চাওয়া হলে যুগ্ম-সচিব অভিষেক ডালমিয়া কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। সৌরভকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি এ ব্যাপারে কিছু জানতাম না।’’ তবে ভাইস-প্রেসিডেন্ট সমর পাল এ দিন বলে দিলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার সিএবি-তে আসার পরেই আমি দেখেছি নামফলকের জায়গাটা ফাঁকা। আগে থেকে সত্যি কিছু জানতাম না। কিন্তু সুবীরবাবুকে অনেক দিন আগেই ঘর ছাড়তে বলা হয়েছিল। তিনি কর্ণপাত করেননি।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘অকারণে একটি ঘর আগলে রাখার তো কোনও মানে হয় না।’’

নামফলক বিতর্কের পাশাপাশি টিকিট বণ্টন নিয়েও চলছে বিতর্ক। বুধবার ১২১টি অনুমোদিত সংস্থার সদস্যদের সই করে টিকিট তুলতে হয়েছে সিএবি থেকে। এ বিষয়ে তাদের চিঠি দিয়ে সৌরভ লিখেছেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত ১২১টি অনুমোদিত সংস্থার সদস্যরা স্বচ্ছ ভাবে টিকিট বণ্টনের পক্ষে সম্মতি দিচ্ছেন, ততক্ষণ নিজেকে এ বিষয় থেকে সরিয়ে রাখছি।’ সই করেই টিকিট তুলতে হয়েছে বিশ্বরূপ দে-কে। তবুও নিজের বক্তব্য থেকে অনড় প্রাক্তন সচিব। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘আমাদের প্রতিবাদ অস্থায়ী কর্তাদের টিকিট দেওয়ার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের অন্যায় ভাবে পরিচয়পত্র দেওয়া বাতিল করা না হলে আমরা শনিবার বিকেলেই ধর্নায় বসছি।’’ বাংলার ক্রিকেট সংস্থায় ক্রিকেট নিয়ে এখন আলোচনা কম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন