মোহনবাগানের নতুন কোচ ‘কিবু’। —নিজস্ব চিত্র।
মোহনবাগানে শুরু হল স্প্যানিশ যুগ। আজ, শুক্রবার নতুন কোচের নাম জানিয়ে দিল শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাব। বিতর্কিত স্প্যানিশ কোচ জুলেন লোপেতেগির বন্ধু হোসে আন্তোনিও ভিকুনার হাতেই উঠছে মোহনবাগানের রিমোট কন্ট্রোল। বন্ধুমহলে তিনি ‘কিবু’ নামে পরিচিত।
এর আগে পোল্যান্ডের ক্লাব উইসলা প্লকের কোচ হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। ৪৭ বছর বয়সি কোচ পোল্যান্ড থেকে আসছেন ‘ফুটবলের মক্কা’য়। একাধিক স্প্যানিশ কোচ মোহনবাগানের হট সিটে বসার দৌড়ে ছিলেন। নাম উঠেছিল বেঙ্গালুরুর প্রাক্তন কোচ অ্যাশলে ওয়েস্টউডেরও। শেষমেশ মোহনবাগান-কর্তারা হোসে আন্তোনিওকেই বেছে নেন।
তাঁর ডাকনাম ‘কিবু’ নিয়ে কৌতূহল রয়েছে অনেকেরই। পোল্যান্ডেও ‘কিবু’ নাম নিয়ে প্রশ্ন উড়ে এসেছিল সবুজ-মেরুন-এর নতুন কোচের দিকে। এক সাক্ষাৎকারে হোসে আন্তোনিও একবার বলেছিলেন, ‘‘ সেভাবে বলতে গেলে কিবুর কোনও অর্থ নেই। ন’ বছর বয়সে আমরা সান সেবাস্টিয়ান থেকে প্যামপ্লোনায় চলে আসি। তখন স্কুলের এক বন্ধু আমাকে কিবুনিয়া বলে ডাকতে শুরু করে দেয়। আসলে ও ভিকুনা উচ্চারণ করতে পারত না। সেই থেকে আমার ডাকনাম হয়ে গেল কিবু। গোড়ার দিকে আমার মা-ও বুঝতে পারতেন না কার কথা বলা হচ্ছে। পরে মা বুঝতে পারেন।’’
৪-৩-৩ পদ্ধতিতে দল সাজাতেই পছন্দ করেন লোপেতেগির ছেলেবেলার বন্ধু। প্রাক্তন স্প্যানিশ কোচ লোপেতেগি ও ‘কিবু’র বাড়ি এক কিলোমিটারের মধ্যেই ছিল। এক গ্রীষ্মের ছুটিতে লোপেতেগুই এক মাসের জন্য ছিলেন ‘কিবু’র বাড়িতে। দু’ কোচের পরিবারের সঙ্গেও ছিল গভীর যোগাযোগ।
খেলোয়াড়জীবনে সবুজ-মেরুনের নতুন কোচ ‘সুইপার’ পজিশনে খেলতেন। ১৬ বছর বয়স থেকেই কোচিং করাচ্ছেন। নাভারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতার পাঠ নেন ‘কিবু’। এক সাক্ষাৎকারে বাগানের নতুন স্প্যানিশ কোচ বলেন,‘‘স্নাতক হওয়ার পরে আমার সামনে দুটো রাস্তা খোলা ছিল। সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করা অথবা ফুটবল ট্রেনার হিসেবে কাজ করা।’’
এরকমই এক সময়ে ওসাসুনার কোচ জান আরবানের কাছ থেকে প্রস্তাব পান হোসে আন্তোনিও। ১৯৮৬-র বিশ্বকাপে পোল্য়ান্ডের হয়ে খেলা আরবানের সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। দু’ জন একসঙ্গে ১১ বছর কাজ করেন। বিখ্যাত আর্জেন্তাইন কোচ মার্সেলো বিয়েলসার কোচিং পদ্ধতি অনুসরণ করেন তিনি। বায়ার্ন মিউনিখের স্প্যানিশ ফুটবলার জাভি মার্টিনেজ তাঁর অন্যতম প্রিয় শিষ্য। ২০১৩ সালে পোলিশ ক্লাব লেগিয়া ওয়ারশ চ্যাম্পিয়ন হয়। ‘কিবু’ ছিলেন সেই দলের সহকারী কোচ। উয়েফা প্রো লাইসেন্স ধারী কোচকে নিয়ে আশায় বুক বাঁধছে মোহনবাগান-বিশ্ব। স্বপ্নপূরণ করার জন্যই আসছেন হোসে আন্তোনিও।