সেই ‘না’, মনখারাপ কল্যাণীর

শেষতক কল্যাণীর মাঠে ‘না’-ই হয়ে গেল ডার্বি। বুধবার, সকাল থেকে তবুও ছিল ভিড়। একটু আশাও কি ছিল না বাগান সমর্থকদের মনে? যদি হই হই করে এসে পড়ে দলটা। নাঃ, সে সব হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৩২
Share:

তৈরি ছিল খুদেরা। কিন্তু খেলাই হল না। — শঙ্কর নাগ দাস

শেষতক কল্যাণীর মাঠে ‘না’-ই হয়ে গেল ডার্বি।

Advertisement

বুধবার, সকাল থেকে তবুও ছিল ভিড়। একটু আশাও কি ছিল না বাগান সমর্থকদের মনে? যদি হই হই করে এসে পড়ে দলটা। নাঃ, সে সব হয়নি।

আশা বুনে বুঁদ হয়ে ছিলেন ওঁরাও— যাঁরা কোনও দল নয়, নিজের মাঠে একটা ঝলমলে খেলা দেখবেন বলে। সাত সকাল থেকে স্টেডিয়ামের কাছেই আস্তানা গেড়েছিলেন।তবে মুখ চুন করে দুপুরেই ফিরে গিয়েছেন তাঁরাও।

Advertisement

সাইকেলের প্যাডেলে চাপ দিয়ে ছেলেটি বলেও ফেলে, ‘‘সব ঘেঁটে ঘ হয়ে গেল রে!’’ কিছু বাপবাপান্ত, কিছু মনখারাপ, আর কিছু হাল না-ছাড়া মানুষ, সেষ পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গলের প্রদর্শনী দেখেই দুধ নয়, ঘোলে স্বাদ মিটিয়ে ফিরে গিয়েছেন।

ছিলেন ওঁরাও— নিতান্তই ছাপোষা ফিরিওলা। কেউ লজেন্স কেউ ছোলা, কেউ আবার অস্থায়ী চায়ের দোকান টাঙিয়ে। বাক্স প্যাঁটরা নিয়ে ফিরে যাওয়ার আগে ফেরার ট্রেন ধরার আগে তাঁরাও মনভাঙা গলায় বলছেন, ‘‘পুজোর মুখে দু’টো বাড়তি রোজগার বেবেছিলাম। হল কই!’’

বীরনগরের প্রতাপ বিশ্বাস মেলা ঘুরে প্যাকেটে বাদাম-চানাচুর বিক্রি করেন। দিন কয়েক আগে কাঁচড়াপাড়ার মহাজনের কাছ থেকে বেশ কিছু বাড়তি মাল কিনেছিলেন। যেহেতু আগে থেকেই মাল কিনে প্যাকেট করে ফেলেছিলেন, ম্যাচ অনিশ্চিত জেনেও মাঠে এসেছিলেন। ম্যাচের আশায় বুক বাঁধা লোকটি বলছেন ‘‘বর্ষা তো, এ সময়ে কোনও মেলা থাকে না। ম্যাচটা হলে একটু বাড়তি আয় হত। এখন গ্রামে ফিরে একসো দিনের কাজ খুঁজতে হবে।’’

স্টেশনের দিকে স্টেডিয়ামের আগের আইল্যান্ড আর আইটিআই মোড়ের দিকে পুরসভার সামনের রাস্তায় যানচলাচল পুলিশ বন্ধ করে দিয়েছিল। ফলে এই এলাকার মধ্যে কোনও অস্থায়ী স্টল করতে দেওয়া হয়নি। গয়েশপুরের অমিত সাহা জানালেন, তিনি অনেক আগে থেকেই স্টেডিয়ামের বাইরে চায়ের স্টলের জন্য জায়গা ঘিরে রেখেছিলেন। তাঁর মতো ঝালমুড়ি, তেলেভাজার স্টলের জন্য জায়গা ঘিরে রেখেছিলেন অনেকেই। তাঁরা এ দিন দোকানও দিয়েছিলেন। অমিত বললেন, ‘‘মালপত্র চার দিন আগেই কিনে রেখেছিলাম। কিন্তু, বিক্রিবাটা আর তেমন হল কই! লোকসানই হল।’’

কল্যাণী স্টেডিয়াম কমিটির চেয়ারম্যান নীলিমেশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ম্যাচ হলে আজকের দিনটা কল্যাণী স্টেডিয়ামের জন্য মাইল ফলক হতে পারত। আমরা দেখিয়ে দিতে পারতাম, কলকাতার বাইরে সফলভাবে বড় ম্যাচ আয়োজন করা যায়। তার বদলে এটা আমাদের কাছে কালো দিন হিসেবেই রয়ে যাবে।’’

ততক্ষণে আকাশ কালো করে এসেছে। সবুজ মাঠের উপরে দিন্তারে মেঘ জমে গিয়েছে যে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন