এ বারের এশিয়ান গেমসেও কি পদক জিততে পারবেন খুশবীর? ছবি টুইটারের সৌজন্যে।
গোয়ালঘর থেকে চার বছর আগে এশিয়ান গেমসের রুপো। অমৃতসরের কাছের রসুলপুর কালানের খুশবীর কৌরের উঠে আসা রূপকথার মতোই। এ বার ইন্দোনেশিয়ায় এশিয়ান গেমসেও পদকের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ২৫ বছর বয়সি রেসওযাকার।
খুব গরিব পরিবার থেকে উঠে এসেছেন খুশবীর। তাঁর যখন ছয় বছর বয়েস, মৃত্যু হয় বাবা বলকর সিংয়ের। মা জসবীর কৌর দুধ বেচে, সেলাই করে সংসার চালাতেন। দু’বেলা খাওয়া জুটত না। গোয়ালঘরে নড়বড়ে চারপাইতে শুতে হত খুশবীরকে। বর্ষাকালে কখনও কখনও গরুদের সঙ্গে একঘরে ঠাসাঠাসি করে থাকতে হত পুরো পরিবারকে।
খুশবীররা চার বোন, এক ভাই। স্বামীর মৃত্যুর পর শ্বশুরবাড়ির লোকদের থেকে কোনও সাহায্য পাননি জসবীর। সন্তানদের নিয়ে একাই বাঁচার সংগ্রাম শুরু করেন তিনি। কয়েকটা গরু ছিল। বেচতেন গরুর দুধ। আর সেলাই করতেন। কিন্তু, তাতে সংসার চলত না। তা সত্ত্বেও মেয়েদের পড়িয়েছেন। শুধু পড়ানইনি, খেলাধূলাতেও উত্সাহ দিয়েছেন। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন স্কুলের শিক্ষকরা। অনেক ক্ষেত্রেই নেওয়া হয়নি পড়ার খরচ।
সারা জীবনের সংগ্রামের ফল এখন পেয়েছেন জসবীর। খুশবীর যখন থেকে পদক জিততে শুরু করলেন, তখন থেকেই ধীরে ধীরে কাটতে লাগল অভাব। তিনি এখন পঞ্জাব পুলিশের ডিএসপি।
আরও পড়ুন: মাঠেও দুরন্ত, ব্যবসাতেও দারুণ সফল এই ভারতীয় ক্রিকেটাররা
জসবীরের মাথার ওপর এখন ছাদ। রসুলপুর কালান গ্রামের সবাই চেনেন তাদের বাড়ি। আর সেই বাড়িতেও রয়েছে কয়েকটা গরু। তবে এক ঘরে গাদাগাদি করে ঘুমোতে হয় না। মায়ের মুখে লেগে থাকে এক টুকরো তৃপ্তির হাসি।
বেঙ্গালুরুতে আসন্ন এশিয়ান গেমসের প্রস্তুতি শিবিরে এখন ঘাম ঝরাচ্ছেন খুশবীর। তিনি নামেন ২০ কিমি হাঁটায়। হাঁটতে হাঁটতে পেরিয়ে এসেছেন অনেক কঠিন পথ। টপকেছেন অনেক বাধা। দাঁড় করিয়েছেন পরিবারকে। ইন্দোনেশিয়াতে পরের সপ্তাহে এশিয়ান গেমসে হাঁটাই হয়ে উঠছে তাঁর স্বপ্নপূরণের মাধ্যম।
আরও পড়ুন: হাল বেহাল, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা হারাতে পারে ইডেন