ইউসুফ-পুত্র আয়ান এক বছরে পা দিল শুক্রবার। পাঠান জুনিয়রকে শুভেচ্ছা জানালেন নাইট মালিক শাহরুখ খান থেকে সিইও বেঙ্কি মাইসোর। বার্থডে বয় তখন মহানন্দে বাবার পিঠে। ছবি: টুইটার।
এ বার আইপিএলে আমরা কয়েক জন তরুণ আর বেশ অনেক জন খুব, খুব কমবয়সি নাইটের সঙ্গে ট্র্যাভেল করছি। আজহার ভাইয়ের (আজহার মেহমুদ) পরির মতো দুই মেয়ে ইনায়া আর মনহা আছে। সহকারী কোচ বিজয় ভাইয়ের (বিজয় দাহিয়া) ছোট্ট, চঞ্চল বীরা কলকাতায় ছিল। আমার পৃথিবী আজিন প্রথম দুটো ম্যাচে ছিল। খুব তাড়াতাড়িই ফিরবে। এর মধ্যেই আশা করছি ওয়াসিম ভাইয়ের মেয়ে আইলা দলে যোগ দেবে। এর সঙ্গে আছে এতগুলো খুদের সর্দার, আয়ান। আমার বন্ধু ইউসুফ পাঠানের এক বছরের রোদ-ঝলমলে ছেলে।
এ সব মিলিয়ে যা দাঁড়ায়, তাতে এয়ারপোর্টের কনভেয়র বেল্টে যখন টিমের ব্যাগপত্তর আসে, তখন দারুণ মজার দৃশ্য তৈরি হয়। বিরাট গুহার মতো সব কিট ব্যাগ ভেসে আসার পরপরই বেল্টে দেখা যায় বাচ্চাদের গোলাপি পেরাম্বুলেটর, চোখধাঁধানো রঙের চাকা লাগানো গাড়ি আর খুদে বাইসাইকেল। কেউ কেউ দেখেছি নিজেদের জিনিস ফিরে পাওয়ার আনন্দে কেঁদেই ফেলে। এই রঙিন ক্যানভাসটা আমাকে বারবার মনে করিয়ে দেয় যে, একটা ক্রিকেট ম্যাচ হারা বা জেতার বাইরে জীবনে আরও কত কিছু আছে। ও হ্যাঁ, শুক্রবার ছিল আয়ানের জন্মদিন। যাকে আমি আদর করে ‘বস্’ বলে ডাকি।
কয়েক দিন দই-ভাত আর খিচুড়ি খাওয়ার পর শুক্রবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরলাম। ইউসুফের ঘর থেকে কেকের অপেক্ষায় বসে আছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত কিছু আসেনি। সারা দিন পেট ভরে খেয়েছি, তবে নিরামিষ খেতে হচ্ছে। তাতে অবশ্য পেট বেশ খুশি। অনেকক্ষণ ওই গুড়গু়ড় শব্দটা শুনতে পাইনি। টাচ উড! প্র্যাকটিস সেশনেও সে রকম কিছু হয়নি। একটু দুর্বল লাগছিল, এই যা। তবে মোদ্দা কথা হল, শনিবার কিঙ্গসের বিরুদ্ধে আমি খেলছি।
লাল জার্সির বন্ধুরা বলছিল নতুন হোম টিম নিয়ে পুণে বেশ খুশি। মনে হচ্ছে শনিবার মাঠ ভরে যাবে। আমরা ঠাসা ইডেনে খেলে অভ্যস্ত, তাই স্টেডিয়ামের গর্জনটা সবারই পছন্দ। এই ম্যাচটার জন্য প্রচণ্ড খিদে নিয়ে মুখিয়ে আছি। উইকেট দেখে যা মনে হল, তাতে টিমে কয়েকটা বদলের কথা ভাবছি। বিশেষ করে সাকিব আল হাসান যখন বাংলাদেশ ফিরে গিয়েছে। দেখা যাক কী ঠিক করি।
ব্যক্তিগত ভাবে আমি সেই সব শহরে আইপিএল ম্যাচ নিয়ে যাওয়ার পক্ষে, যাদের নিজস্ব টিম নেই। আমার মনে হয় তাতে টুর্নামেন্ট আর ক্রিকেট, দুইয়েরই স্বাস্থ্য আরও ভাল হবে। এই যে পুণে ওয়ারিয়র্স টিমটা বাতিল হয়ে গেল, তাতে যেন এখানকার মানুষ বঞ্চিত না হন। ওঁদের যেখানে কোনও দোষ নেই, ওঁদের স্টেডিয়ামটা যখন দেশের অন্যতম সেরা, সেখানে ওঁরা আইপিএল থেকে বঞ্চিত হবেন কেন?
পুণে শহরের গতি আমার ভাল লাগে। এই শহরটা আপনাকে কোনও দিন তাড়া দেবে না। আর এমনিতেও আমাদের হোটেলটা শহরের বাইরে। হাইওয়ের কাছে একটা শিল্পাঞ্চলে আমরা রয়েছি। এখান থেকে কোথাও যাওয়া মানেই ৪৫ মিনিটের ড্রাইভ। গল্ফ কোর্স যেতে হলে তো এক ঘণ্টা। তবে মনে হয় না তাতে কারও আপত্তি আছে। খুদেদেরও নয়।