আশা: পরের বার কেকেআর আরও ভাল করবে, বলছেন কালিস। ফাইল চিত্র
গোটা রাতে একটা গভীর ঘুমের মানে আপনার অনেক অসুস্থতা সেরে যাবে। একই সঙ্গে দারুণ লড়াই করে কোনও ম্যাচ হারের পরে যে হতাশা আসে তাও কেটে যাওয়ার কথা।
কিন্তু তার মানে এই নয় যে সত্যিটা মিথ্যে হয়ে যাবে। সত্যিটা খুব পরিষ্কার। শুক্রবার ইডেনে এমন একটা ম্যাচ আমরা হেরেছি, যেটা আসলে আমাদের জেতা উচিত ছিল। অথচ জিতে গেল সানরাইজার্সই।
জানি আমার ছেলেদের কাছে এমন একটা হার হজম করা কঠিন। এই হারের ব্যথায় প্রলেপ পড়তে আর কিছু দিন লাগবে। কিন্তু একই সঙ্গে এটাও ঘটনা যে এ বারের প্রতিযোগিতায় আমরা বেশ কিছু ম্যাচ জিততে পেরেছি দাপটের সঙ্গে খেলে। হেরে গেলেও দাপট শুক্রবার ইডেনে সানরাইজার্সের বিরুদ্ধেও ছিল।
এক জন কোচ হিসেবে বলতে পারি, সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে ডাগ আউটে বসে খেলার অন্তত নব্বই ভাগ অংশেই যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। মনে হয়েছে, ম্যাচ তো আমাদের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। তাই এতটা দাপট নিয়েও হেরে গিয়ে ম্যাচের শেষে শুধুই ভেবেছি যে, আমাদের নিজেদের ছাড়া অন্য কাউকে দোষারোপ করা সাজে না। অবশ্য আমার কথা শুনে মনে হতে পারে, ফাইনালে ওঠার কোনও কৃতিত্বই নেই সানরাইজার্সের। মারাত্মক চাপে থেকেও ওরা যে ভাবে হাল না ছাড়ার মানসিকতা দেখিয়েছে তার জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। ওরা সত্যিই অনমনীয় একটা দল। আমাদের বিরুদ্ধেই প্রথম নয়। এর আগেও ওরা প্রায় হারা ম্যাচ জিতে ফিরেছে।
ফাইনাল খেলতে না পারলেও এ বারের প্রতিযোগিতাতেও নাইট রাইডার্সকে আমি সফলই বলব। সব মিলিয়ে দলটা যা খেলেছে, তাতে সবার সন্তুষ্ট হওয়ারই কথা। আমাদের দলে এখন এক ঝাঁক তরুণ প্রতিভা। আগামী দিনে নিশ্চয়ই ওরাই দলটা আরও এগিয়ে দেবে।
এমনিতে এই দু’মাস বেশ মজায় কাটালাম। আসলে এই মজাটার জন্যই তো এখানে খেলতে আসা। অবশ্য শুধু তো মজা নয়। প্রধান লক্ষ্য অবশ্যই থাকে চ্যাম্পিয়ন হওয়া। সঙ্গে মানুষকে বিনোদন দেওয়ার দায়িত্বটাও থেকে যায়। আমার মনে হয়, এই কাজটা আমরা এ বার ঠিকঠাকই করতে পেরেছি। সঙ্গে নতুন অনেক বন্ধু হয়েছে। পুরনো বন্ধুদের সঙ্গেও সম্পর্ক ঝালিয়ে নেওয়ার
সুযোগ পেয়েছি।
কথা দিলাম, পরের বার আরও শক্তিশালী হয়ে আমরা ফিরে আসব। আরও একটা খেতাবের জন্যও ঝাঁপাব। ভক্তরাই তো সব। ওদের খুশি করতে না পারলে আর কী। দেশের সেরা ভক্ত তো আমাদের দলেরই। হতে পারে, গোটা পৃথিবীর মধ্যেও ওরাই সেরা। ধন্যবাদ কলকাতা। আমাদের উপর এতটা ভরসা রাখার জন্য। তোমরাই আমাদের দলের সেরা দ্বাদশ ব্যক্তি। একই সঙ্গে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, দলের সমস্ত কোচিং স্টাফ ও প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে। ওরা না থাকলে আমরা খুব বেশি কিছু তো করতেই পারতাম না। শুভেচ্ছা জানাই ফাইনালিস্টদেরও। এটা সবাইকে মানতেই হবে যে যোগ্য দল হিসেবেই সানরাইজার্স আর চেন্নাই ফাইনাল খেলছে। ফাইনালে জিতুক সেরা দলটাই।
এ বার আমার দেশে ফেরার পালা। ওখানে একটা বিয়ের অনুষ্ঠান আছে। ওরা বলছে, আমি বড্ড দেরি করছি। সে বলুক। যাচ্ছি তো। না যাওয়ার থেকে তো যাওয়া ভাল। তা সে যখনই যাই।