হোটেলে কেক কাটছেন রাসেল। ছবি: টুইটার
রাজস্থান ম্যাচটা যে ভাবে জিতলাম আমরা, সেটা খুবই তৃপ্তিদায়ক। যখন মনে হচ্ছিল, বড় ঝামেলায় পড়ে গিয়েছি, তখনই ঘুরে দাঁড়িয়েছি। তা সে ২৪ রানে তিন উইকেট পড়ে যাওয়ার সময়ই হোক বা ওরা যখন এক উইকেটে একশো রান তুলে দিয়েছিল, তখন। মোদ্দা কথা হল, আমাদের এই দলটা কখনও হাল ছাড়ে না। আমার বিশ্বাস, কোনও পরিস্থিতিতেই হাল ছাড়বে না কলকাতা নাইট রাইডার্স।
ডিকে (দীনেশ কার্তিক) আরও এক বার দেখিয়ে দিল, কত ভাল ভাবে মাঝের ওভারগুলোয় খেলাটা ও নিয়ন্ত্রণ করে। সেটা ফিল্ডিং করার সময় হোক, কী ব্যাটিং করার সময়। শুভমন গিল ওর জাতটা চিনিয়ে দিল আরও এক বার। পরিস্থিতি বুঝে খেলতে পারার সহজাত দক্ষতা আছে ছেলেটার মধ্যে। সাধারণত এই রকম ব্যাটিং আমরা অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে আশা করি। কিন্তু ১৮ বছর বয়সে এক জন এই রকম ক্রিকেট খেলছে, এটা সত্যি অভাবনীয়।
আন্দ্রে রাসেলও ফের দেখিয়ে দিল, কতটা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে ও। অনেকেই হয়তো ভেবেছিল, আমাদের রানটা একটু কম হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমি জানতাম রাসেলের ওই ইনিংস আমাদের শুধু ম্যাচেই ফিরিয়ে আনেনি, দৌড়ে কিছুটা এগিয়েও দিয়েছিল। ইডেনের পিচে কিন্তু ব্যাট করাটা সহজ কাজ ছিল না। রাসেল ওই কাজটাই করে দেখাল। দুর্দান্ত ক্রিকেটার ও।
রান তাড়া করতে নেমে রাজস্থান হয়তো শুরুটা ভাল করেছিল, কিন্তু আমরা সব সময়ই ম্যাচে ছিলাম। আমাদের বোলাররা ভাল বল করছিল। ফলে ওদের আস্কিং রেট কখনওই খুব কমে যায়নি। যে কারণে ম্যাচের রাশ রাজস্থানের হাতে ছিল না। আগেই বলেছি, ইডেনের পিচে দ্রুত রান করাটা সহজ কাজ ছিল না। যে জন্য যখন দরকার, ওরা রান তোলার গতি বাড়াতে পারেনি। একটা উইকেট নেওয়ার পরেই আমরা নতুন ব্যাটসম্যানের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। ওর দমবন্ধ করে দিয়েছিলাম। নতুন ব্যাটসম্যান আসার পরে গোটা দু’য়েক ডট বল (যে বলে রান হয় না), দু’একটা সিঙ্গলস হলে কিন্তু আস্কিং রেট দুম করে বেড়ে যায়। হঠাৎ দেখা যায়, ওভার পিছু দশ রানের বেশি করতে হবে। রাজস্থানের ক্ষেত্রেও তা-ই হল। আস্কিং রেট বাড়তে থাকল।
নেতা: ম্যাচের রাশ হাতছাড়া হতে দিচ্ছেন না কার্তিক। ফাইল চিত্র
শেষ চার ওভারে আমাদের বোলাররা যা বল করল, ইনিংসের শেষের দিকে সে রকম বোলিং কেকেআরের বোলারদের অনেক, অনেক বছর করতে দেখিনি। আগে বলেছিলাম, হায়দরাবাদের মাঠে সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে ম্যাচটা আমাদের সেরা। এখন বলব, বুধবার রাজস্থান ম্যাচে আরও ভাল খেলেছি। এই রকম পারফরম্যান্স আর মাত্র দু’টো ম্যাচে ধরে রাখতে হবে। তা হলেই...। ছেলেরা সবাই খুব ভাল ছন্দে আছে। আত্মবিশ্বাসও তুঙ্গে। টি-টোয়েন্টিতে সাফল্য পেতে গেলে যা খুবই দরকার।
সানরাইজার্স টানা চারটে ম্যাচ হেরে ইডেনে আসছে ঠিকই, কিন্তু মনে রাখতে হবে ওরা গ্রুপ পর্বে লিগের শীর্ষে ছিল। সানরাইজার্সের ক্রিকেটার এবং সাপোর্ট স্টাফ— সবাইকে আমরা সম্মান করি। গ্রুপ পর্বে দেখিয়ে দিয়েছি, ভাল খেললে অবশ্যই সানরাইজার্সকে হারানো যায়। কিন্তু ওই যে বললাম, আমাদের সেরা খেলাটা খেলতে হবে।