মিশন বাংলাদেশ। ঢাকা রওনা হওয়ার আগে প্রস্তুতি সারতে দাদার শহরে কোহলি, শিখর।
লিওনেল মেসি। নেইমার দ্য সিলভা। লুই সুয়ারেজ।
বিরাট কোহলি। শিখর ধবন। রোহিত শর্মা।
কে কোন খেলাটা খেলেন—কথা সেটা নয়। নামগুলো পরপর লেখার কারণ, এঁদের সহাবস্থান আজ হচ্ছে শহরে! লিওনেল মেসিরা রাতে। বিরাট কোহলিরা দিনে। মেসিরা বার্লিনে। টিভিতে। কোহলিরা ইডেনে। চর্মচক্ষে।
একটা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল। ধুন্ধুমার যুদ্ধ। অন্যটা আসন্ন যুদ্ধের প্রস্তুতি। বাংলাদেশ সফরে রওনা হওয়ার আগে নিজেদের দেখে নেওয়া।
তফাত হচ্ছে, প্রথমটা নির্ধারিত নির্ঘণ্ট মেনে হলেও পরেরটা হচ্ছে না। আর পরেরটা শনিবাসরীয় কলকাতার একমাত্র ক্রিকেট-মেনু নয়। ইডেনে বিরাটরা থাকবেন যেমন, অন্য প্রান্তে সৌরভ-সচিন-ভিভিএসের ক্রিকেট অ্যাডভাইসরি কমিটিও তেমন বসে পড়বে। বিরাটরা মিশন বাংলাদেশের প্ল্যান অব অ্যাকশনের প্রথম ধাপের সূচনা করবেন। ক্রিকেট অ্যাডভাইসরি তার কাছাকাছি সময়ে ঠিক করবে বিরাটদের আগামী ক্রিকেট-নীতি।
কোহলিরা এ দিন সন্ধে থেকে পরপর শহরে ঢুকতে শুরু করলেন। প্রথমে ভারতের টেস্ট অধিনায়ক নিজে। শিখর ধবনকে নিয়ে। ঘণ্টাখানেক বাদে কলকাতা এয়ারপোর্ট থেকে টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রীকে বেরোতে দেখা গেল। রাতের দিকে পৌঁছলেন প্রায় দু’বছর পর ভারতীয় টিমে ফেরা হরভজন সিংহ। এত দিন বাইপাসের ধারে যে হোটেলে কেকেআর থাকত, সেখানে এ বার ভারত থাকছে। শোনা গেল সেখানে পৌঁছনোর সময় পরিচিত কাউকে কাউকে বিরাট বলে ফেলেছেন, বাংলাদেশে একটা ম্যাচও তিনি হারতে চান না।
বিরাট তখনও বুঝতে পারেননি, বাংলাদেশের আগে আরও একটা প্রতিপক্ষ তাঁর সামনে হাজির হয়ে যাবে। নতুন শত্রুর নিবাস— এখানেই, কলকাতায়। সেটা, গরম।
প্রথমে ঠিক ছিল, ইডেনে ফিটনেস টেস্ট হবে সকালে। কিন্তু গরমের চোটে টিম ঠিক করে, সকালটা হোটেলের পুল এবং জিম সেশনেই কাটাবে। জিমের কিছু প্রয়োজনীয় যন্ত্র আবার সিএবি থেকে এ দিন হোটেলে পৌঁছেও দেওয়া হল। যা খবর, তাতে বিকেল নাগাদ ইডেন যাবেন বিরাটরা। ফিটনেস টেস্ট দিতে। যার কিছুক্ষণ আগে শুরু হবে সৌরভদের কমিটির বৈঠক। বোর্ড প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়ার আলিপুরের বাড়িতে।
বাংলাদেশ— তারাও বসে নেই। চব্বিশ ঘণ্টা আগে তাদের সেরা ব্যাটিং অস্ত্র মাহমুদউল্লাহকে চোটের কারণে হারাতে হয়েছে গোটা সিরিজ থেকে। কিন্তু বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এখনও তাতে একটা প্রশ্নচিহ্ন রেখে দেওয়া হচ্ছে। টিম ম্যানেজমেন্টের এক জন সন্ধেয় ঢাকা থেকে ফোনে বললেন, মাহমুদউল্লাহ টেস্টে পারবেন না। কিন্তু ওয়ান ডে-তেও যে পারবেন না, সেটা এখনও বলার সময় আসেনি। মুশফিকুর রহিম, টেস্ট অধিনায়ক। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চোট পেয়েছিলেন আঙুলে। প্রাণপণ চেষ্টা চলছে, তাঁকে ফাতুল্লাহ টেস্ট শুরুর আগে সম্পূর্ণ ফিট করে তোলার।
যা পরিস্থিতি, তাতে প্রাক্-যুদ্ধ নাড়াচাড়া দুই বাংলাতেই চলবে। এ পারে বিরাটরা। ও পারে মুশফিকুররা।
খারাপ কী? শহরে ফুটবল ঢুকতে- ঢুকতে তো রাত বারোটা।
ছবি: শঙ্কর নাগ দাস ও পিটিআই।