শহরে কোস্তাস কাতসুরানিস। ব্রাজিল বিশ্বকাপে গ্রিস অধিনায়ক। বুধবার। ছবি: উত্পল সরকার
আইএসএলে প্রাক্তন বিশ্বকাপার আর ইউরো তারকাদের ছড়াছড়ি। দেল পিয়েরো, রবার্ট পিরেস, মাতেরাজ্জি, ত্রেজেগুয়ে, আনেলকা— মার্কি ফুটবলারের তালিকায় বড় বড় সব নাম। ব্যতিক্রম শুধু একজন— কোস্তাস কাতসুরানিস। রীতিমতো বর্তমান বিশ্বকাপার। এ বছরই ব্রাজিল বিশ্বকাপে খেলেছেন তিনি। গ্রিস অধিনায়ক টিমকে তুলেছিলেন শেষ ষোলোতেও। যিনি বুধবার শহরে পা দেওয়ার পরেই আনন্দবাজারের মুখোমুখি। এফসি পুণে সিটি-র অনুশীলন শেষ হওয়ার পর টিম হোটেলের লবিতে বললেন...
প্রশ্ন: বছর দশেক আগে ইউরো কাপে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে থামিয়ে দিয়ে জিতেছিলেন। শুক্রবার সামনে ফিকরু, কোনও ব্যাপারই নয়, কী বলেন?
কোস্তাস: আরে আমি তো এখানে স্টপার খেলছি না। মাঝমাঠে খেলছি। রোনাল্ডোকে আটকেছিলাম স্টপারে খেলে। এখানে ফিকরুকে আটকাবে আমাদের ডিফেন্ডাররা। আমাদের স্টপার ব্রুনো সিরিলোরা ভাল খেলছে।
প্র: ফিকরু ফেরায় কলকাতা আরও শক্তিশালী। মানছেন?
কোস্তাস: সেটা ম্যাচের পর বোঝা যাবে। তবে ফিকরু ভাল ফুটবলার। আর কলকাতা তো যথেষ্ট ভাল খেলছে।
প্র: আপনি মাঝমাঠে! তা হলে লুই গার্সিয়ার আর আপনার টক্কর শুক্রবার দেখবে যুবভারতী?
কোস্তাস: গার্সিয়ার সঙ্গে আমি গ্রিসের ক্লাব প্যানাথানাইকসে খেলেছি। জানি ও ভাল ফুটবলার। তবে পরশু লড়াইটা গার্সিয়া বনাম আমার নয়। পুণে বনাম কলকাতার।
প্র: ত্রেজেগুয়ে চোটের জন্য নেই। এটা আপনাদের বড় ক্ষতি?
কোস্তাস: কে বলল ক্ষতি? টেনিসে ব্যক্তিগত নৈপুণ্য দেখানোর সুযোগ থাকে। ফুটবল দলগত খেলা। কেউ এক জন খেলে না। ত্রেজেগুয়ে না থাকায় সামান্য ক্ষতি হবে হয়তো। তবে টিমে অন্য যারা আছে যেমন ডুডু বোলাদো, ওরা ঠিক সামলে দেবে।
প্র: ইউরোয় রোনাল্ডো-ফিগোদের তাঁদের ঘরের মাঠে হারিয়েছিলেন। যা আজও বলা হয় ফুটবলের সবচেয়ে অবাক করা ঘটনা? সুখস্মৃতিটা নিশ্চয়ই এখনও টাটকা?
কোস্তাস: (সোফা থেকে গা ঝাড়া দিয়ে উঠে নিজের বুকের দিকে আঙুল তুলে) সেই স্মৃতি এখানে আছে। মানে হৃদয়ে। মুখে এটার ব্যাখ্যা সম্ভব নয়। দশ বছর কেটে গিয়েছে তবু এখনও সেই দিনটা মাঝেমধ্যে স্বপ্নে দেখি।
প্র: আর ক’মাস আগেই ব্রাজিলে বিশ্বকাপে গ্রিসের অধিনায়কত্ব করা?
কোস্তাস: শুধু আমার জন্য নয়। বিশ্বকাপে দেশের অধিনায়কত্ব করা সব ফুটবলারেরই স্বপ্ন। আমি গর্বিত এই সুযোগ পেয়ে।
প্র: রোনাল্ডো এখন বিশ্বের সেরা ফুটবলার। তাঁকেও আটকেছিলেন, সেটাই জীবনের সেরা চ্যালেঞ্জ ছিল?
কোস্তাস: আমি একা আটকেছিলাম কে বলল? গোটা দল আটকেছিল। তবে রোনাল্ডো তখন খুব তরুণ ছিল। বয়স কম। কিন্তু তখনই বুঝেছিলাম ও বড় ফুটবলার হবে।
প্র: হঠাত্ বিশ্বকাপ থেকে আইএসএলে?
কোস্তাস: (হাসতে হাসতে) আমি তো বুড়ো হয়ে গিয়েছি। বয়স ছত্রিশ। ইউরোপে আর খেলার সুযোগ নেই। তাই ভারতে এলাম। নতুন অভিজ্ঞতা আর চ্যালেঞ্জ নিতে।
প্র: আটলেটিকো কলকাতা মাদ্রিদ গিয়েছিল প্রস্তুতি নিতে। আপনারাও তো ফিয়োরেন্তিনায় গিয়েছিলেন?
কোস্তাস: আমি যাইনি। পরে যোগ দিয়েছি দলের সঙ্গে। তবে যা দেখছি আমাদের টিমের ফুটবলারদের উপকারই হয়েছে। ইতালীয় ফুটবল থেকে শিক্ষা নিলে সেটা ভালই হয়।
প্র: পুণে সিটি-ই কি আইএসএলের কালো ঘোড়া?
কোস্তাস: একদমই না। আমরা ভাল খেলছি না বলে কেউ আলোচনাও করছে না। সবাই তো বলছে কলকাতা আর চেন্নাইয়ান ফেভারিট। তবে অনেক ম্যাচ বাকি।
প্র: কলকাতাকে ফেভারিট কেন?
কোস্তাস: ওদের টেকনিক খুব ভাল। পুরো দলটাই মানিয়ে নিয়েছে। গোল করার লোক আছে। তার উপর ওরা অ্যাস্ট্রোটার্ফে খেলছে। আমাদের যেটা অসুবিধা। এদের সেটাই সুবিধা। দেখা যাক শুক্রবার কী হয়!