এশীয় ফাইনালে প্রকাশ অ্যাকাডেমির লক্ষ্য সেন

প্রকাশের অ্যাকাডেমিতেই তাঁর বেড়ে ওঠা। এখনও সেখানেই নিয়মিত অনুশীলন করেন লক্ষ্য সেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৮ ০৪:৪৮
Share:

চমক: এশিয়ান জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে দুরন্ত ফর্মে লক্ষ্য সেন। ফাইল চিত্র

প্রকাশ পাড়ুকোন তাঁর আদর্শ।

Advertisement

প্রকাশের অ্যাকাডেমিতেই তাঁর বেড়ে ওঠা। এখনও সেখানেই নিয়মিত অনুশীলন করেন তিনি।

বাবা ডি কে সেন সাইয়ের ব্যাডমিন্টন কোচ। দাদা চিরাগ সেনও একজন সফল ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়। মা স্কুল‌ শিক্ষিকা।

Advertisement

এ রকম পারিবারিক আবহে বড় হয়ে ওঠা লক্ষ্য সেন শনিবার জাকার্তার কোর্টে নেমে চমকে নিলেন। এশিয়ান জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠলেন তিনি, ইন্দোনেশিয়ার ইকসান লিওনার্ডো ইমানুয়েল রামবেকে ২১-৭, ২১-১৪ গেমে হারিয়ে। শুক্রবার কোয়ার্টার ফাইনালে উত্তরাখণ্ডের আলমোরার ছেলে পেরিয়ে এসেছিলেন চিনের এক নম্বর খেলোয়াড় লি শি ফেং-এর শক্ত বাধা। শনিবার রুপো নিশ্চিত করার পরে ফাইনালে লক্ষ্যকে খেলতে হবে ইন্দোনেশিয়ার কুনলাভুট ভিতিদেরনের সঙ্গে।

ফাইনালে উঠেই লক্ষ্য ফোন করেছিলেন তাঁর বর্তমান কোচ বিমলকুমারকে। বেঙ্গালুরু থেকে ফোনে বিমলকুমার সে কথা জানিয়ে বললেন, ‘‘রবিবার রাতে ফাইনাল। আসলে ম্যাচটা পঞ্চাশ-পঞ্চাশ। দু’জনেই নিজেদের সার্কিটে এখন ভাল খেলছে। যে কেউ জিততে পারে ম্যাচ। ও আমার কাছে সে জন্যই জানতে চাইছিল, কী ভাবে এগোবে। কিছু পরামর্শ দিয়েছি। কাঁধের ব্যথা সারিয়ে লক্ষ্য যে এখানে ফাইনালে উঠেছে সেটাই বড় সাফল্য। ও খুব শান্ত স্বভাবের ছেলে। জানে কী ভাবে পরিস্থিতি সামলাতে হয়। যাওয়ার আগে আমার কাছে ট্রেনিংও নিয়েছে। কঠিন পরিশ্রম করেছে। সেটা কাজে লাগছে এখন।’’

লক্ষ্য সোনা পাবেন কি না সেটা জানতে আরও চব্বিশ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে। তবে এ দিন তিনি ম্যাচ জেতার পরে এতটাই আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন যে বলে দিয়েছেন, ‘‘দুটো কঠিন ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছি। ফাইনালে সেই ধারা বজায়
রাখতে চাই।’’

বাবার কাছে ছোটবেলায় ব্যাডমিন্টনের কোচিং নিতেন লক্ষ্য। কিন্তু ছেলে ক্রমশ ঘরকুনো মানসিকতার হয়ে যাচ্ছে বলে নিজের দুই ছেলে এবং আরও কয়েক জন প্রতিভাবান ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়কে নিয়ে লক্ষ্যর বাবা বেঙ্গালুরুতে যান প্রকাশের অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করাতে। বিমলকুমার বলছিলেন, ‘‘গত নয় বছর ও আমাদের অ্যাকাডেমিতে আছে। ওর বাবা যখন লক্ষ্যকে ভর্তি করাতে এখানে নিয়ে এসেছিল, তখন ওঁকে বলেছিলাম, আপনার বড় ছেলেকে নিতে কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু দশ বছরের লক্ষ্যকে নিতে পারব না।’’ কেন? বিমল কুমার যোগ করলেন, ‘‘এত ছোট বয়সে আবাসিক হিসাবে লক্ষ্য থাকতে পারবে কি না, সন্দেহ ছিল। কিন্তু ওর বাবা প্রায় জোর করে রেখে যাওয়ার পরে দেখলাম ছেলেটা প্রতিভাবান। সাহসীও। আমার বিশ্বাস ও যে ভাবে এগোচ্ছে সে রকম চললে অলিম্পিক্সে পদক পাবে।’’

চার বছর আগে থেকেই কাঁধের ব্যথায় ভুগছেন লক্ষ্য। তাঁর চিকিৎসাও চলছে। সেটা নিয়েই নিয়মিত অনুশীলন করেন তিনি। এই মুহূর্তে ১৭ বছর বয়সি লক্ষ্য সিনিয়র র‌্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের ৬৯ নম্বর। জুনিয়র পর্যায়ে চার বা পাঁচের মধ্যে রয়েছেন সাইনা নেহওয়াল, পি ভি সিন্ধুদের উত্তরসূরি। বয়স কম হলেও নিজের লক্ষ্যে স্থির লক্ষ্য। তাঁর কিছু মন্তব্য বেশ চমকপ্রদ। ‘‘কোর্টে যখন খেলতে নামি উল্টোদিকে কে খেলছে মাথায় রাখি না। তা হলে চাপে পড়ে যাব। আমি সবসময় চাপমুক্ত হয়ে কোর্টে নামতে ভালবাসি।’’ যে কোনও টুনার্মেন্টে খেলতে নামার আগে এটাই বলেন ভারতীয় ব্যাডমিন্টনের প্রতিশ্রুতিমান এই তারকা। আজ, রবিবার কোর্টে নামার আগে এই মনোভাবটাই লক্ষ্যর সম্পদ। যদিও তাঁর প্রতিপক্ষ বেশ কঠিন বাধা। বিমাল কুমার অবশ্য আশাবাদী। তাঁর মনে হচ্ছে, লক্ষ্য যে রকম ছন্দে আছেন, তাতে সোনার পদক আসতেও পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন