ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড থেকে নির্বাসিত হওয়ার পর প্রায় পাঁচ বছর লন্ডনে আশ্রয় নিলেও এ বার এই শহরে থাকাও ললিত মোদীর পক্ষে কঠিন হয়ে উঠতে পারে। তাঁর লন্ডনে থাকার বৈধ অনুমতি নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। সেই সঙ্গে যিনি মোদীকে এই সরকারি অনুমতি পেতে সাহায্য করেছেন, লেবার পার্টির সেই সিনিয়র এমপি কিথ ভাজও সংসদীয় তদন্তের মুখে পড়তে পারেন।
ভাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ললিত মোদীর লন্ডনে থাকার অনুমতির মেয়াদ বৃদ্ধিতে তাঁকে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেন। ব্রিটিশ ভিসা অফিসের ডিরেক্টর জেনারেল সারা রেপসনের সাহায্য নিয়ে তিনি এই কাজ করেন বলে অভিযোগ। সানডে টাইমসে এই প্রসঙ্গে একাধিক ব্যক্তিগত ই-মেল ফাঁস হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে।
হোম অ্যাফেয়ার্স সিলেক্ট কমিটির প্রধান ভাজ অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ভিসার মেয়াদবৃদ্ধির জন্য এ রকম শতাধিক আবেদনের মধ্যেই তিনি মোদীর আবেদনকেও গণ্য করেছিলেন। বাড়তি কোনও গুরুত্বও দেওয়া হয়নি বলে আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন তিনি।
সংবাদপত্রে ফাঁস হওয়া একাধিক গোপন ও ব্যক্তিগত ই-মেলে অবশ্য স্পষ্ট ইঙ্গিত যে, ভারতীয় বংশোদ্ভুত এই এমপি ললিত মোদীকে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দিতে চেয়েছিলেন।
পাঁচ বছর আগে ২০১০-এ আইপিএলে ব্যাপক আর্থিক তছরুপের অভিযোগে বিসিসিআই থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর মোদী লন্ডনের চেলসিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। আইপিএল তদন্তে জেরার জন্য তাঁকে বারবার ভারতে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হলেও তিনি তাতে কর্ণপাত করেননি বলে তাঁর পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত হয়।
গত বছর ২০১৬ পর্যন্ত এ দেশে থাকার অনুমতি আদায় করে নিলেও পাসপোর্ট না থাকায় তখন তাঁকে ভ্রমণ সংক্রান্ত নথির জন্য আবেদন করতে হত। সে জন্যই তিনি ভাজের সাহায্য চান। স্ত্রী ক্যানসারে আক্রান্ত ও তাঁর চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়া খুব প্রয়োজন বলে নাকি তখন মোদী তাঁর কাছে আবেদন করেন। ভিসা অফিসের প্রধানকে ব্যাক্তিগত ভাবে এ কথাই জানিয়েছিলেন বলে দাবি ভাজের। এমনকী মোদী নাকি রাজপরিবারের দুই সদস্যের কাছ থেকেও প্রতিশ্রুতি আদায় করেছিলেন বলে দাবি করেন তিনি। এর মধ্যে তাঁর ভ্রমণ নথির আবেদন নাকচ হওয়া সত্ত্বেও তখন ভাজের হস্তক্ষেপেই মোদী এই নথি পান বলে অভিযোগ।