রঞ্জি ট্রফি শুরু হতে বাকি তিন মাসের একটু কম। যে রঞ্জি মরসুম তাঁর কেরিয়ারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। ক্যাপ্টেন হিসেবে, ক্রিকেটার হিসেবেও। সে সব নিয়ে এখনই অকপট লক্ষ্মীরতন শুক্ল।
প্রশ্ন: আপনার বয়স এখন ৩৩। বড়জোর বছরদুয়েক পড়ে কেরিয়ারে। এই পরিস্থিতিতে আসন্ন মরসুম কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
লক্ষ্মী: কে বলল আর বছরদুয়েক পড়ে? বয়স স্রেফ একটা সংখ্যা। আর সরকারি চাকুরে ছাড়া কে জানে, তার কেরিয়ার কবে শেষ হবে? আমার ফিটনেস দারুণ জায়গায়। ২১-২২ বছরের ছেলেও আমাকে ফিটনেসে হারাতে পারবে না। যার জন্য জুনিয়রদের সঙ্গে ট্রেন করি। আর দেখুন, প্রতিটা মরসুমকেই কেরিয়ারের প্রথম মরসুম হিসেবে দেখি। নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখি। অফ-সিজন প্রস্তুতি আমার কাছে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আজই তো সকাল-বিকেল দু’বেলা প্র্যাকটিস করলাম।
প্র: এ বার রঞ্জিতে কঠিন গ্রুপে বাংলা। মুম্বই, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, বরোদা সব টাফ টিম। সত্যি বলুন, বাংলার কতটা সুযোগ দেখছেন?
লক্ষ্মী: খুব ভাল সুযোগ দেখছি। রঞ্জিতে এখন কোনও টিমই খুব দুর্বল নয়। আগে মুম্বই টানা চ্যাম্পিয়ন হত। এখন নতুন নতুন টিম উঠে আসছে। তাই সব টিমই টাফ। গ্রুপটা কোনও ফ্যাক্টরই নয়। আসল কথা হল, আমরা সিরিয়াস ক্রিকেট খেলতে পারলাম কি না।
প্র: এ বার টিম কেমন হচ্ছে?
লক্ষ্মী: খুব ভাল। পাজি (অশোক মলহোত্র) ট্রেনিং সেশনে চলে এসেছেন। দারুণ নেট সেশন হচ্ছে। টিমের সবার মধ্যে একটাই চিন্তা, একটাই ভিশন ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে যে, রঞ্জি না জিততে পারলে ক্রিকেট খেলে কী হবে? বলা হচ্ছে, আমরা যে রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করি সেখানে ক্রিকেট একটা আবেগ। সেই আবেগটাকেই অনুপ্রেরণা হিসেবে নাও। এটা কোনও হোস্টেল নয় যে, সবার উপর কড়া নিয়ম চাপিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু ব্যক্তিগত ডিসিপ্লিন সবাইকেই মানতে হবে।
প্র: রঞ্জির মাঝের দিকে অস্ট্রেলিয়া সফর। ঋদ্ধিমান সাহা, মহম্মদ শামিকে তো তখন না-ও পেতে পারেন।
লক্ষ্মী: দেখুন, কোনও ভাল টিমই এক জন-দু’জনের উপর নির্ভর করে থাকে না। গত বছর তো মনোজ চোট পেয়ে খেলতে পারেনি। ঋদ্ধিকে সব ম্যাচে পাইনি। শামি ছিল না। তা-ও আমরা রঞ্জি আর বিজয় হাজারের সেমিফাইনাল খেললাম। যুদ্ধ কখনও এক জন বা দু’জন সৈন্য জেতায় না। তার জন্য ভাল ফৌজ দরকার। যেটা আমাদের আছে।
প্র: বঙ্গ ক্রিকেটমহলের একটা অংশের ধারণা, গত বছর মনোজ প্রথম থেকে ছিলেন না বলেই বাংলা এত ভাল পারফর্ম করেছিল। লক্ষ্মী-মনোজ, দুই লিডার থাকলে নাকি ড্রেসিংরুম দু’ভাগ হয়ে যায়।
লক্ষ্মী: আমি তো বলব গত বছর মনোজ থাকলে আমরা আরও ভাল খেলতাম। ওর মতো দায়বদ্ধতা আর পারফরম্যান্স টিমের দরকার। আর আমাদের ড্রেসিংরুমের পরিবেশ সব সময়ই ভাল থাকে। মনোজ থাকলেও, না থাকলেও।
প্র: সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কি এ বার টিমের আনঅফিশিয়াল মেন্টর?
লক্ষ্মী: আনঅফিশিয়াল কেন? দাদি অফিশিয়ালিই আমাদের মেন্টর। যে বার বিজয় হাজারে জিতলাম, সে বার ফাইনালে আমি লম্বা স্পেল বল করে ওঠার পরেও দাদি আমাকে চার নম্বরে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল। আমি ক্যাপ্টেন থাকলে যেটা করতাম না। ওর এই ক্রিকেট-বুদ্ধিটা আমাদের চাই-ই।