জোট: মাঠের চিরন্তন দ্বৈরথ ভুলে দুই প্রধান এখন এককাট্টা। ফাইল চিত্র
দুই প্রধানের আইএসএলে খেলা নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েন শনিবার সন্ধ্যায় নতুন দিকে মোড় নিল।
ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান-সহ বাংলার সব ক্লাবের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে পাশে দাঁড়িয়ে গেলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি কার্যত বুঝিয়ে দিলেন, কলকাতা তথা বাংলার ক্লাবগুলি যেখানে খেলবে (এক্ষেত্রে আই লিগ) তাকে যেন গুরুত্ব দেওয়া হয়। বাংলার কোনও ক্লাবের ক্ষতি হলে তিনি চুপ করে বসে থাকবেন না।
শনিবার সন্ধ্যায় ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেলের এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়কে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে বলে দেন, ‘‘আপনি প্রফুল্লবাবুকে বলুন, বাংলার ক্লাবগুলির স্বার্থ যেন ক্ষুণ্ণ না হয়। এটা হলে আমি তা সহ্য করব না। আই লিগকে যেন গুরুত্ব দেওয়া হয়।’’
প্রসঙ্গত, প্রফুল্ল পটেলের নেতৃত্বে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন ঠিক করে ফেলেছে, আইএসএল-কে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লিগ করা হবে। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানকে খেলতে হতে পারে আই লিগে। যা ফেডারেশনের ইচ্ছা অনুসারে দ্বিতীয় সারির লিগ হয়ে যেতে পারে। দু’দিন পরেই দিল্লিতে ফেডারেশন সচিব কুশল দাশের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চলেছেন দুই প্রধানের কর্তারা। তার আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সমর্থন কলকাতার ক্লাবদের শক্তি বাড়াচ্ছে।
জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী ক্রীড়ামন্ত্রীকেও ফোন করে বলে দিয়েছেন, বাংলার ক্লাবদের স্বার্থ যেন দেখা হয়। ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এ দিনই কথা বলেন দুই প্রধানের কর্তাদের সঙ্গে। ক্রীড়ামন্ত্রী বললেন, ‘‘সোমবার ওরা কথা বলতে যাচ্ছে দিল্লিতে। ফিরে আসুক। আমি মঙ্গলবার সভা ডেকেছি তিন প্রধানের। মহমেডানকেও ডাকছি। তার পর যা করার করব। বাংলার ক্লাবের কোনও ক্ষতি হতে দেব না।’’
মহমেডানও এখন দুই প্রধানের পাশে দাঁড়াচ্ছে। মহমেডান ক্লাবের প্রেসিডেন্ট সুলতান আমেদ শনিবার রাতে বললেন, ‘‘আমরা ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের পাশে আছি। আমরাও আইএসএল খেলতে চাই। আমাদের বিরুদ্ধে অনেক অবিচার হয়েছে। এক সঙ্গে লড়াই করব।’’
আপনি কি মনে করেন দুই প্রধানের শর্ত মেনে নিয়ে তাদের আইএসএলে খেলতে দেওয়া উচিত? ক্রীড়ামন্ত্রী যুদ্ধং দেহি মনোভাব নিয়ে বলে দিলেন, ‘‘অবশ্যই। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ছাড়া এ দেশের ফুটবল হয় নাকি? যুবভারতীতে যাতে ওরা সব ম্যাচ খেলতে পারে সেই ব্যবস্থা করব আমরা। এই স্টেডিয়াম রাজ্য সরকারের। আইএসএলের নয়।’’
যুব বিশ্বকাপের পর আতলেতিকো দে কলকাতার আইএসএলের ম্যাচ খেলার কথা যুবভারতীতে। কিন্তু রাজ্যের এক নম্বর ফুটবল স্টেডিয়াম নিয়ে কার্যত যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল শনিবার থেকে। শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে যুদ্ধ শেষ হয়, সেটাই দেখার।