রুনির প্রত্যাবর্তন খিদের কাছে হারছেন প্রতিশোধের ইব্রা

পেপ গুয়ার্দিওলাকে যে জ্লাটান ইব্রাহিমোভিচ কতটা ভালবাসেন, তা তাঁর আত্মজীবনী ঘাঁটলেই পাওয়া যায়। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে স্ট্রাইকার সেখানে পেপকে নিয়ে যে সব ‘উপাধি’ এবং শব্দে ভূষিত করেছেন, তা নিয়ে যত কম বলা যায় তত ভাল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৯
Share:

পেপ গুয়ার্দিওলাকে যে জ্লাটান ইব্রাহিমোভিচ কতটা ভালবাসেন, তা তাঁর আত্মজীবনী ঘাঁটলেই পাওয়া যায়। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে স্ট্রাইকার সেখানে পেপকে নিয়ে যে সব ‘উপাধি’ এবং শব্দে ভূষিত করেছেন, তা নিয়ে যত কম বলা যায় তত ভাল। পেপ-বন্দনা তাঁর এ রকম— পেপ গুয়ার্দিওলা একজন মেরুদণ্ডহীনের নাম, যে আদতে একজন কাপুরুষ! আত্মজীবনীর শেষ দিকটায় গুয়ার্দিওলার নামই আর নেননি জ্লাটান। ‘দ্য ফিলোজফার’ বলে লিখে গিয়েছেন ক্রমাগত। যা অবশ্যই প্রশংসাসূচক নয়। বছর খানেক আগে এক সাক্ষাৎকারকেই ধরা যাক। সেখানেও বা কম কী ছিল? পেপের কোচিংয়ে খেলতে কেমন লাগবে, জানতে চেয়েছিলেন প্রশ্নকর্তা। মেজাজি ইব্রাহিমোভিচের সপাট উত্তর ছিল, ‘‘কোচ হিসেবে খুবই বড়। কিন্তু মানুষ হিসেবে? আমার কিছু বলার নেই। যে মানুষই নয়, তাকে নিয়ে আমার কিছু বলার নেই!’’

Advertisement

ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বিতে এ রকম দু’টো চরিত্র মুখোমুখি হলে, প্রতিশোধের গল্পই আলোচ্য হওয়া স্বাভাবিক। টানাপড়েন সেই পেপের বার্সা-জমানা শুরু। যেখানে তখন খেলতেন ইব্রা। যিনি তখন অভিযোগ এনেছিলেন, পেপ তাঁকে ভিনগ্রহের জীব ছাড়া কিছু আর ভাবেন না। ব্যবহারটা সে রকমই করেন! সেই পেপের সঙ্গে ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বিতে দেখা, জ্লাটানের প্রতিশোধস্পৃহাই তো প্রাক-যুদ্ধ মশলা হবে। কিন্তু হচ্ছে না। বরং প্রতিশোধের গল্পকে হারিয়ে দিচ্ছে প্রত্যাবর্তনের খিদে।

ওয়েন রুনির প্রত্যাবর্তন।

Advertisement

ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বি নিয়ে এত তাপ-উত্তাপ চার দিকে। পেপ, জ্লাটান, মোরিনহো, পোগবা, দে’ব্রায়েন—চার দিকে এত তারকাদ্যূতি। কিন্তু কোথাও তিনি নেই। ইংল্যান্ডের সর্বকালের সেরা স্ট্রাইকারদের একজন, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের দীর্ঘ দিনের ভরসা, তবু নেই। রুনি কোথাও আসছেনও না। কিছু বলছেনও না। শুধু ফুটবল মহলের কেউ কেউ সন্দেহ করছেন, তিনি ফুটছেন। খুঁজছেন একটা সুযোগ। মঞ্চ? কেন, ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বি!

বলা হচ্ছে, ইব্রাহিমোভিচ নন। ডার্বি জিততে আসল লোক ওই রুনি। যিনি এ ম্যাচের আদবকায়দা সবচেয়ে ভাল জানেন। হাল সিটির বিরুদ্ধে ইউনাইটেডের শেষ মুহূর্তের গোলে তাঁর অবদান ছিল। আবার ঘরের মাঠে ইউনাইটেডের প্রথম ম্যাচে ইব্রাহিমোভিচের গোলের পিছনেও তিনি। দু’টো ম্যাচ, দু’টো অ্যাসিস্ট—ডার্বিতে রুনির জায়গা না হওয়ার কারণ দেখছে বিলেতের মিডিয়া। বরং মনে করছে, জোসে মোরিনহো যদি নামিয়ে দেন একবার সাহস করে, ঠকবেন না হয়তো। এ বার ইব্রাহিমোভিচ আছেন। পোগবা আছেন। চাপ আর তাঁর উপর থাকবে না। রুনি খেলতে পারবেন ফুরফুরে ভাবে, প্রতিপক্ষকে ছিড়েখুঁড়ে ফেলতে পারবেন ইচ্ছেমতো। বলা হচ্ছে, ফুটবলের সৌন্দর্য মানে শুধু মেসির সম্মোহনী ড্রিবলিং শক্তি নয়। ফুটবল-সৌন্দর্য মানে রুনির লাল মুখটাও। গোল করার পর যা দেখা যায়। যাতে ছায়া থাকে ক্রুদ্ধ এক মানুষের যে বিশ্বের কাছে কিছু একটা প্রমাণ করতে চায়। কিছু করে দেখাতে চায়।

ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বিতে রুনিকে ছেড়ে দিলে সেটা নাকি আবার দেখা যেতেই পারে। ডার্বিটাও নাকি লেখা থাকতে পারে তাঁর নামে, প্রতিশোধকামী কোনও এক জ্লাটান ইব্রাহিমভিচের নামের পাশে নয়!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন