ড্র করায় চাপে থাকবে রোনাল্ডোরা

গত বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে আটলেটিকোকে হারানোর পর সিমিওনের দলের বিরুদ্ধে আর জেতেনি আন্সেলোত্তির রিয়াল। চলতি মরসুমে এই ম্যাচের আগে ছ’বার মুখোমুখি হয়েছে মাদ্রিদের এই দুই ফুটবল ক্লাব। কিন্তু রোনাল্ডো, বেলরা সেই মাদ্রিদ ডার্বিতে এক বারও জিতে ফেরেনি। কার্লো আন্সেলোত্তির তা হলে হলটা কী? ঠিক এই প্রশ্নটা নিয়েই মঙ্গলবার রাতে দেখতে বসেছিলাম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের মাদ্রিদ-যুদ্ধ।

Advertisement

সুব্রত ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:০৬
Share:

আটকে যাওয়া রোনাল্ডো। মঙ্গলবার মাদ্রিদ ডার্বিতে। ছবি: এএফপি

আটলেটিকো মাদ্রিদ-০
রিয়াল মাদ্রিদ-০

Advertisement

গত বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে আটলেটিকোকে হারানোর পর সিমিওনের দলের বিরুদ্ধে আর জেতেনি আন্সেলোত্তির রিয়াল। চলতি মরসুমে এই ম্যাচের আগে ছ’বার মুখোমুখি হয়েছে মাদ্রিদের এই দুই ফুটবল ক্লাব। কিন্তু রোনাল্ডো, বেলরা সেই মাদ্রিদ ডার্বিতে এক বারও জিতে ফেরেনি।

কার্লো আন্সেলোত্তির তা হলে হলটা কী? ঠিক এই প্রশ্নটা নিয়েই মঙ্গলবার রাতে দেখতে বসেছিলাম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের মাদ্রিদ-যুদ্ধ। এমনিতেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচ ফাইনালের আগে নব্বই মিনিটের হয় না। হয় ১৮০ মিনিটের। শেষ আটে মাদ্রিদ-ডার্বির অর্ধেক যুদ্ধ বোঝাল, ফুটবল বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়েই ম্যাচটাকে চূড়ান্ত নব্বই মিনিটের জন্য জিইয়ে রাখল আটলেটিকো মাদ্রিদের কোচ।

Advertisement

আসলে সিমিওনে জানত, টানা ছ’ম্যাচ তার টিমের কাছ থেকে জয় ছিনিয়ে নিয়ে যেতে না পারায় অ্যাওয়ে ম্যাচে বিবিসি (বেল-বেঞ্জিমা-ক্রিশ্চিয়ানো)-কে দিয়ে আক্রমণের ঝড় বইয়ে দেবে আন্সেলোত্তি। তাই হুয়ানফ্রানদের কোচ শুরু থেকেই ডিফেন্সিভ জোনে লোক বাড়িয়ে বেল-বেঞ্জিমা-রোনাল্ডো ত্রিভুজকে একদম বোতলবন্দি করে দিল।

মিরান্দা, গডিনদের চার ব্যাকের আগে বিবিসি-র সামনে আরও একটা পাঁচিল বারবার তুলে দিচ্ছিল তুরান-সুয়ারেজদের মাঝমাঠ। বেল, বেঞ্জিমা বা রোনাল্ডোর কেউ একজন তাই বল ধরলেই বাকি দু’জনের গায়ে আটলেটিকোর কেউ না কেউ ঠিক সেঁটে যাচ্ছিল। আর ওদেরকে কাটালে চলে আসছিল আর একজন। এই ডাবল কভারিংটা সিমিওনে বুদ্ধি করে রেখেছিল চার-পাঁচ গজের মধ্যেই। ফলে রোনাল্ডোর ড্রিবলটা গেল আটকে। ক্রুস, মদরিচরা বল বাড়ানোর ফাঁকা জায়গাটা পাচ্ছিল না। এই জায়গায় পাল্টা দিতে পারত দি’মারিয়ার উইং ধরে দৌড়। কিন্তু সে তো এখন রিয়ালের নয়! আন্সেলোত্তি ম্যাচ বের করবে কী ভাবে?

তবু এরই মধ্যে ম্যাচের শুরুতেই দিনের সহজতম সুযোগটা পেয়ে গিয়েছিল বেল। কিন্তু সেখানেও একা কুম্ভ হয়ে লড়ল আটলেটিকোর স্লোভেনিয়ান কিপার ওবলাক। শুধু বেল-ই নয়, রোনাল্ডোর ফ্রিকিক এবং মদরিচ আর হামেস রদ্রিগেজের শট ও যে তৎপরতার সঙ্গে রুখল তা দু’চোখ ভরে দেখার মতো।

সিমিওনে আরও দু’টো তাস বুদ্ধি করে ফেলেছিল দ্বিতীয়ার্ধে। গ্রিয়েজমান আর মান্দজুকিচরা এই সময় ফাইনাল থার্ডে বলটা হোল্ড করায় খেলাটা মন্থর হয়ে গেল। এতে আটলেটিকো রক্ষণে গডিনদের চাপটা গেল কমে। একই সঙ্গে বিপক্ষকে মাথাগরম করিয়ে দেওয়ার রাস্তায় গিয়ে রিয়ালের ফোকাসটাও নড়িয়ে দিয়ে রোনাল্ডোদের জিততে দেয়নি আটলেটিকোর আর্জেন্তাইন কোচ।

অনেকে বলবেন, ঘরের মাঠে এতটা রক্ষণাত্মক খেলে ভুল করল সিমিওনে। আমি কিন্তু তা মানতে নারাজ। কারণ রিয়ালের ঘরের মাঠে চাপটা রোনাল্ডোদেরই। একে তো তাদের বিরুদ্ধে এই মুহূর্তে সাত ম্যাচ অপরাজিত আটলেটিকো। উল্টে, ম্যাচটা ১-১ রাখতে পারলেই সিমিওনের চাল সফল হয়ে যাবে।

ফিরতি ম্যাচে সাসপেনশনের কারণে রিয়াল পাবে না মার্সেলোকে। হয়তো কোয়েন্ত্রাও খেলবে। সিমিওনেও পাবে না সুয়ারেজকে। তাই হাড্ডাহাড্ডি আর একটা নব্বই মিনিটের অপেক্ষায় আছি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন