বিরাট কোহালির জন্য গলা ফাটাবেন পাক অধিনায়কের মামা। এএফপি-র তোলা ফাইল চিত্র।
গোটা পাকিস্তান যখন রবিবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে সরফরাজ আমেদের টিমের জন্য গলা ফাটাবে, তখন তাঁর পরিবারেই খোঁজ মিলেছে এক ভারতীয় সমর্থকের।
তিনি— পাকিস্তান অধিনায়কের মামা মেহবুব হাসান। তবে তিনি পাকিস্তানের বাসিন্দা নন। থাকেন উত্তরপ্রদেশের এটাওয়া-তে।
রবিবার ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালির জন্য গলা ফাটাবেন তাঁর মামা। যদিও এ প্রসঙ্গে সরফরাজের প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। কিন্তু মেহবুব খোলাখুলিই বলছেন, ‘‘কীসের চাপ? সরফরাজ পাকিস্তানের হয়ে মাঠে নামবে। কিন্তু আমি ও আমার ছেলেরা সারা জীবন ভারতকেই সমর্থন করেছি। এ বারও গলা ফাটাব।’’ এখানেই শেষ নয়। মেহবুব আরও বলেছেন, ‘‘ওদের দল কোনও ভাবেই আমাদের সঙ্গে পারবে না। বিরাট কী রকম সেমিফাইনালে ব্যাট করেছে দেখলেন! শুধু তো ও একা নয়, আমাদের সকলেই ফর্মে। ভারত যে চ্যাম্পিয়ন হবে সেটা এখনওই বাজি ধরতে পারি।’’
এটাওয়া-র কৃষি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কর্মী মেহবুব কয়েক বছর আগেই রাজস্থানের আজমেঢ় শরিফ ছুটেছিলেন সরফরাজ যাতে পাকিস্তান দলে সুযোগ পান তার জন্য প্রার্থনা করতে। খোয়াজা মইনুদ্দিন চিস্তির দরগায় চাদর চড়িয়েছিলেন। যাতে ভাইপো পাকিস্তানের জার্সি গায়ে সফল হন। এ বার তিনি চাইছেন, ভারত বিরাট কোহালির নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের জন্য উড়ান ধরুক।
মেহবুবের বোন আকিলা বানু হচ্ছেন সরফরাজের মা। এটাওয়া-র আকিলাকে বিয়ে করেছিলেন পাকিস্তানের ব্যবসায়ী শাকিল আমেদ। এ পর্যন্ত তিন বার ভাগ্নের সঙ্গে দেখা হয়েছে মামা মেহবুবের। ভিসা সমস্যায় সেই ভাবে দেখা হয় না। তবে ফোনে নিয়মিত যোগ রয়েছে দুই পরিবারের মধ্যে।
আরও পড়ুন:ফাইনালের পরে সিদ্ধান্ত কোচ নিয়ে
১৯৯১ সালে মামার বিয়েতে মায়ের সঙ্গে এটাওয়া এসেছিলেন সরফরাজ। তখন তাঁর বয়স মাত্র চার। তার পরে মামা-ভাগ্নের দেখা হয়েছিল চব্বিশ বছর পরে ২০১৫ সালের জুন মাসে! সে বার মেহবুব করাচিতে সরফরাজের বিয়েতে গিয়েছিলেন। সেই স্মৃতি এখনও উজ্জ্বল মেহবুবের মনে। তিনি বলছিলেন, ‘‘শুধু ভাগ্নের বিয়ের ভোজটাই সেই সময় খেয়ে আসিনি। করাচি থেকে লাহৌরে গিয়ে গদ্দাফি স্টেডিয়ামে ওর খেলাও দেখেছি সপরিবারে।’’
শেষ বার মামা-ভাগ্নের মোলাকাত হয়েছে গত বছর চণ্ডীগড়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তান বনাম অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের সময়। মেহবুব বলেছেন, ‘‘ম্যাচের আগের দিন টিম হোটেলে সরফরাজের সঙ্গে দেখা করে শুভেচ্ছা জানিয়ে এসেছিলাম। আর খেলার পরে মিষ্টি পাঠিয়েছিলাম। ভাগ্নে পাকিস্তানের অধিনায়ক— ভাবলেই গর্ব হয়।’’
স্কাইপে বোনের সঙ্গে নিয়মিত কথা হয় মেহবুবের। তিনি বলেছেন, ‘‘বোনের শরীর এখন ভাল নেই। খুব ইচ্ছে হয় করাচি গিয়ে ওর সঙ্গে দেখা করে আসি। কিন্তু সুযোগ হয় না। রবিবার ফাইনালের পরে ওর সঙ্গে কথা বলব।’’