লক্ষ্য: সেরা বোলিং করে পঞ্জাবকে জেতাতে মরিয়া মায়াঙ্ক।
টি-টোয়েন্টি যুগের ক্রিকেটার তিনি। আবেগ বাইরে রেখে মাঠে নামতে জানেন। তাই শনিবার রাতে কলকাতায় পৌঁছে যখন শুনলেন বাংলার বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ ইডেনে হচ্ছে না, তখন আফসোস না করে খুশিই হলেন বেশি। কারণ, ২১ বছর বয়সে তারকা হয়ে ওঠা লেগ স্পিনার মায়াঙ্ক মার্কন্ডে যে খোঁজ পেয়ে গিয়েছেন, বাংলার বিরুদ্ধে তাঁকে সাহায্য করার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে স্পিন সহায়ক উইকেট।
গত বছর আইপিএলে স্বপ্নের অভিষেকে তাঁর সেরা শিকার ছিলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। তালিকায় ছিলেন অম্বাতি রায়ডুও। মায়াঙ্কের গুগলি বুঝতে না পেরে এলবিডব্লিউ-র ফাঁদে পড়ে যান হেলিকপ্টার শটের জনক। সেই পারফরম্যান্সের পরে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি ভাটিন্দার তরুণকে। আইপিএলে ১৪ ম্যাচে ১৫ উইকেট নেওয়ার পরে এই মরসুমেই রঞ্জি ট্রফিতে খেলার সুযোগ এসে যায়। আর তাতেও বাজিমাত, পাঁচ ম্যাচে ২৫ উইকেট নিয়ে।
শনিবার সন্ধ্যায় দলের সঙ্গে কলকাতায় পৌঁছন যুবরাজ সিংহদের সব চেয়ে নির্ভরযোগ্য স্পিনার। গত দশ মাসের স্বপ্ন-সফর নিয়ে আনন্দবাজারকে তিনি বলেন, ‘‘আইপিএলে সেই ম্যাচের পরে রাতে ঠিক মতো ঘুমোতেই পারিনি। হোটেলে ফিরে মোবাইল খুলে দেখি শ’তিনেক মেসেজ ও প্রায় পঞ্চাশটা মিসড কল এসে বসে আছে। ধোনি স্যরের উইকেটটা আমার জীবনের মোড়ই ঘুরিয়ে দিয়েছিল।’’
নভেম্বরে রঞ্জির অভিষেক হওয়ার পর থেকেও তিনি বিধ্বংসী মেজাজে। বিশাখাপত্তনমে গিয়ে পাঁচ উইকেট নেন। ইনদওরে চার উইকেট। দিল্লিতে তিন। হায়দরাবাদে প্রথম ইনিংসে ছ’উইকেট। আর মোহালিতে ঘাসের পিচেও চার। এই অভিযানে সমানে তাঁকে উৎসাহ জুগিয়েছেন যুবরাজ সিংহ। মায়াঙ্ক নিজেই তা জানিয়ে বলেন, ‘‘যুবি পাজির মতো একজন কিংবদন্তি দলে থাকাটা এমনিতেই বিশাল ব্যাপার। তার ওপর উনি যদি আলাদা করে উৎসাহ জোগান, তা হলে তো নিজেকে উজাড় করে দিতে ইচ্ছে করবেই। দল চাপে পড়লেই যুবি পাজি আমাদের তাতিয়ে দেন। যে দুই ম্যাচে উনি দলে ছিলেন, আমরা দুটোতেই সাত পয়েন্ট পেয়েছি।’’ রঞ্জি ট্রফির মাঝে কলম্বোয় এশিয়ান ইমার্জিং ট্রফিতে গিয়ে মায়াঙ্ক চার ম্যাচে পান ১২ উইকেট।
অথচ স্পিনার হওয়ার কথাই নাকি ছিল না তাঁর। মায়াঙ্ক বলেন, ‘‘প্রথম কোচ মহেশ ইন্দর সিংহের (রিতিন্দর সিংহ সোধির বাবা) কাছে পেস বোলিং করতাম। পরে মহেশ স্যর বলেন, গুগলিটা আমার স্বাভাবিক ভাবে আসে। অনুশীলন করে আরও উন্নত করা উচিত। তার পরে মণীশ বালি স্যরের কাছে স্পিনই শিখি।’’
সল্টলেকের মাঠে স্পিন সহায়ক পিচ হতে পারে শুনে মায়াঙ্ক বলেন, ‘‘ভালই তো। এই ম্যাচ জিততেই হবে আমাদের। স্পিন-সহায়ক পিচ হলে তো দল আমার দিকে তাকিয়ে থাকবেই। নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব।’’ গত বছর ইডেনে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে আইপিএলের একটি ম্যাচে এক উইকেট পেয়েছিলেন। সেই অভিজ্ঞতার পরেও ঐতিহাসিক ইডেনে ম্যাচ হচ্ছে না শুনে আফসোস নেই। বলেন, ‘‘আমার কাছে ইডেনে খেলার চেয়ে বড় হল ভাল উইকেটে খেলা। গত বছর টি-টোয়েন্টি (মুস্তাক আলি ট্রফি) খেলেছিলাম এখানে। এই পিচ নিয়ে ধারণা আছে আমার। সেটা এ বার নিশ্চয়ই কাজে লাগবে।’’