টেস্ট ক্রিকেটের গতি ও আকর্ষণ বাড়াতে কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটি।
সময় নষ্ট ও স্লো ওভার রেট এখন টেস্ট ক্রিকেটে নিয়মিত সমস্যা। বোলার, ব্যাটসম্যানরা এত সময় নষ্ট করেন যে, অনেক ক্ষেত্রেই সারা দিনে নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে আধ ঘণ্টা বেশি সময় দিলেও নির্ধারিত ৯০ ওভার পূর্ণ করতে পারেন না বোলাররা। টি-টোয়েন্টির যুগে সনাতন ক্রিকেট তাই আরও শ্লথ হয়ে পড়ছে। ফলে টেস্ট ক্রিকেট তার জনপ্রিয়তাও হারাচ্ছে বলে এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে। এই সময় নষ্ট থামাতে এ বার টেস্ট ম্যাচে চালু হতে চলেছে ‘টাইমার’, যা ব্যাটসম্যান বদল, ওভার বদল ও বোলার বদলের সময় চলবে স্কোরবোর্ডে। নির্দিষ্ট সময়ে এগুলো করতে না পারলে বিপক্ষ দল পেয়ে যাবে পেনাল্টি রান। এ ছাড়া সীমিত ওভারের ক্রিকেটের মতো টেস্টেও নো বলে ফ্রি হিট চালু করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
টেস্ট ক্রিকেটের গতি ও আকর্ষণ বাড়াতে এমনই কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটি। যে কমিটিতে রয়েছেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় স্পিনার শেন ওয়ার্ন, বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটার শাকিব আল হাসান, প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক রিকি পন্টিং, প্রাক্তন পাকিস্তানি তারকা রামিজ রাজা ও আরও অনেকে। ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক মাইক গ্যাটিং এই কমিটির চেয়ারম্যান।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নতুন আইন সুপারিশ করে থাকে এই কমিটি, যা প্রণয়ন করা অবশ্য আইসিসি-র এক্তিয়ারভুক্ত। সম্প্রতি এমসিসি-র এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, গতিহীনতা টেস্ট ক্রিকেটের জনপ্রিয়তায় প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজ়িল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকায়। যেখানে সারা দিনে পেসাররাই বেশির ভাগ ওভার বল করেন, সেখানে অনেক ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে আধ ঘণ্টা বেশি খেলা হলেও ৯০ ওভার পূর্ণ হয় না।
সময় নষ্ট বন্ধ করতেই এ বার থেকে তাই ‘টাইমার’ চালু করার প্রস্তাব দিয়েছে সৌরভদের কমিটি। এটা এক ধরনের কাউন্ট ডাউন ঘড়ি। দু’টি ওভারের মাঝখানে ৪৫ সেকেন্ড সময় দেওয়া হবে। ওভার শেষে নতুন ব্যাটসম্যান এলে সেই সময় বেড়ে হবে ৬০ সেকেন্ড। আর বোলার বদল হলে দেওয়া হবে ৮০ সেকেন্ড। এই সময় না মানতে পারলে প্রথম বার সতর্ক করা হবে। ফের একই অপরাধে বিপক্ষকে পাঁচ রান পেনাল্টি দেওয়া হবে।
ব্যাটসম্যান আউট হলেও এই ঘড়ি চালু হবে। ক্রিজ থেকে ড্রেসিংরুমের দূরত্ব অনুযায়ী এই সময় ঠিক করা হবে। জলপানের বিরতিতেও শট ক্লক চালু হবে, যা শূন্যয় পৌঁছনোর পরেই ফের খেলা শুরু করতে হবে। ডিআরএস-এর ক্ষেত্রে টিভি আম্পায়ার ‘নট আউট’ জানানোর পরই ফের খেলা শুরু করতে হবে। শুধু এটিই নয়, সারা বিশ্ব জুড়ে টেস্টে একই ব্র্যান্ড ও মানের বল ব্যবহারের সুপারিশও করেছে এই কমিটি। এখন ভারতে এসজি, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ডে ডিউক এবং অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অন্যান্য দেশে কোকাবুরা বলে টেস্ট খেলা হয়। সম্প্রতি ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহালি ও তারকা স্পিনার আর অশ্বিন টেস্টের বল নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। অশ্বিনের যে লাল ডিউক বল পছন্দ, সে কথাও বলেছেন। কোন ব্র্যান্ড ও মানের বলে টেস্ট হবে, তা অবশ্য আইসিসি-র উপরে ছাড়া হয়েছে।