ফিফায় ব্যাপক আর্থিক কেলেঙ্কারির কথা প্রকাশ্যে আসার পরে তাঁকে নাকি মিডিয়া ‘খুন’ করতে চেয়েছিল, দাবি করলেন সেপ ব্লাটার। নির্বাসিত ফিফা প্রেসিডেন্ট পাশাপাশি আবার দুঃখ করেছেন, ফিফা এগজিকিউটিভ কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে নাকি যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
একটি টিভি সাক্ষাৎকারে ব্লাটারকে দেখা গিয়েছে খোলামেলা মেজাজে। যেখানে তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে সরে দাঁড়ানোর সময় তিনি কতটা একা ছিলেন এবং আছেন। বলেছেন, কী ভাবে আত্মরক্ষার যথেষ্ট ব্যবস্থা তিনি করতে পারছেন না। এবং বারবার বলেছেন, ২০২২ বিশ্বকাপের স্বত্ত্ব যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দেওয়া হত, তা হলে বর্তমান পরিস্থিতি নাকি এড়ানো যেত।
‘‘যেটা আমাকে সবচেয়ে বেশি দুঃখ দিয়েছে সেটা হল, প্রথম থেকেই মিডিয়া আমার প্রবল বিরোধিতা করা শুরু করল। মনে হচ্ছিল ওরা আমাকে বুঝি মেরেই ফেলতে চায়,’’ বলেছেন ব্লাটার। সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘ভেবে দেখুন, ফিফা প্রেসিডেন্টের বিরোধিতা করছে মিডিয়া। বিশেষ করে যেখানে এগজিকিউটিভ কমিটির সদস্যদের আচরণের জন্য আমি দায়ী ছিলাম না। কারণ আমি ওদের নির্বাচন করে ফিফায় নিয়ে আসিনি। একটা ব্যাপার নিয়ে অনুশোচনা হয়। ওদের সততা ভাল ভাবে যাচাই না করেই ওদের এগজিকিউটিভ কমিটির সদস্য করে দেওয়া হয়েছিল।’’
আগামী শুক্রবারের নজিরবিহীন ফিফা কংগ্রেসে বেছে নেওয়া হবে ব্লাটারের উত্তরসূরিকে। সেই সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে ব্লাটারের মনে হচ্ছে, তাঁকে যখন আট বছরের জন্য নির্বাসিত করা হল, তখন তাঁর পাশে যথেষ্ট সমর্থক পাননি। ‘‘আমাকে যে এ ভাবে বিদায় জানানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে, সেটা অত্যন্ত দুঃখের। হঠাৎ করে এমন এক পরিস্থিতিতে পড়ে গেলাম যেখানে নিজেকে বাঁচানোর উপায় ছিল না। আশেপাশে কোনও বন্ধুও ছিল না। আমি একদম একা হয়ে গিয়েছিলাম। তবে ওই অবস্থায় মিশেল প্লাতিনির মতো দুর্দান্ত এক ফুটবলারকে আমার পাশে পেয়েছি,’’ বলেছেন ব্লাটার। যে প্লাতিনি নিজেও এখন নির্বাসিত।
২০২২ বিশ্বকাপ কাতারকে দেওয়া নিয়ে যে বিতর্ক চলছে, সেই প্রসঙ্গেও মুখ খুলেছেন ব্লাটার। তাঁর কথায়, ‘‘কে কত টাকা দিল, সেই ভিত্তিতে বিশ্বকাপ আয়োজনের স্বত্ত্ব কোনও দেশকে দেওয়া হয় না। দেওয়া হয় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে। ইউরোপের গোষ্ঠী প্রথমে একটা পরোক্ষ সমঝোতায় এসেছিল যে, বিশ্বকাপটা যুক্তরাষ্ট্র পাবে। তার পর ফ্রান্সের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে নিজেদের ভোট পাল্টায়। তাই বলতে হচ্ছে, ২০২২ বিশ্বকাপটা যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেলে আমরা আজ এই অবস্থায় পড়তাম না।’’