কোপার আগে আদালতের কড়া ট্যাকলে মেসি

বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠে পারেননি। কোপা ফাইনালেও হেরে গিয়েছিলেন টাইব্রেকারে। তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় স্বপ্নটা এখনও অধরা রয়ে গিয়েছে লিওনেল মেসির। দেশের জার্সিতে একটা বড় ট্রফি জেতা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৬ ০৩:৩১
Share:

আদালত কক্ষে বাবার পাশে। বৃহস্পতিবার।

বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠে পারেননি। কোপা ফাইনালেও হেরে গিয়েছিলেন টাইব্রেকারে। তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় স্বপ্নটা এখনও অধরা রয়ে গিয়েছে লিওনেল মেসির। দেশের জার্সিতে একটা বড় ট্রফি জেতা।

Advertisement

শতবর্ষের কোপা শুরুর প্রায় ৪৮ ঘণ্টা আগে লিও মেসিকে শুধু মাঠের চ্যালেঞ্জ সামলানোই নয়, সামলাতে হচ্ছে মাঠের বাইরের কড়া ট্যাকলকেও।

বৃহস্পতিবার যত না কোপা ছিল শিরোনামে, তার চেয়ে বেশি ছিল মেসির কর বিতর্ক কেন্দ্র করে নাটক। আগামী মঙ্গলবার আর্জেন্তিনার কোপা অভিযান শুরুর আগে এ দিন বার্সেলোনার আদালতে হাজিরা দিতে হল মেসিকে। প্রবল প্রতিপক্ষ স্প্যানিশ কর বিভাগের আনা প্রায় ৪.১ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৩১ কোটি টাকা) কর ফাঁকি দেওয়ার মামলা সামলাতে। কিন্তু পাল্টা আক্রমণ কোথায়! উল্টে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগের দায় বাবার ঘাড়ে চাপিয়ে দিলেন মেসি। অনেকটা ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলা ডিফেন্ডারদের ঘেরাটোপে সতীর্থকে পাস বাড়িয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকার মতো!

Advertisement

কোপা আমেরিকায় ২৩ বছর পর আর্জেন্তিনা কাপ পাবে কি না তার থেকেও গত কয়েক দিন বড় হয়ে উঠেছিল এই প্রশ্নটাই, মেসি কী ভাবে তার উপর ওঠা অভিযোগের ব্যাপারটা সামলান? এ দিন মেসি স্প্যানিশ আদালতে পরিষ্কার বলে দেন, ‘‘আমি শুধু ফুটবল খেলি। আমি যে চুক্তিতে সই করেছি সব বাবার উপর আর আইনজীবীদের উপর বিশ্বাস রেখে করেছি। আগেই ঠিক করা হয়েছিল ওরাই এই দিকটা দেখবে।’’

এর আগে কর ফাঁকি মামলাতেই ২০১৩ অগস্টে ৫ মিলিয়ন ইউরো সুদ সহ বকেয়া কর মিটিয়েছিলেন মেসি আর তাঁর বাবা জোর্জে। কিন্তু তার পরও সমস্যা তৈরি হয়। এ বার অভিযোগ ওঠে আরও গুরুতর, ২০০৭-’০৯ এই সময়ে ইমেজ রাইটস থেকে পাওয়া অর্থের উপর কর বাঁচাতে ভুয়ো সংস্থা খোলা হয়েছিল। সেই মামলাতেই কোপার প্রস্তুতি শিবির ছেড়ে তড়িঘড়ি স্পেনে উড়ে আসতে হয় মেসিকে।

বৃহস্পতিবার ছিল শুনানির দ্বিতীয় দিন। প্রায় চার ঘণ্টা আর্জেন্তিনার মহাতারকাকে এই মামলায় যুক্ত অন্যদের বক্তব্য শুনতে হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা মেসির কথা সমর্থন করে বলেন আর্জেম্তিনীয় সুপারস্টার ট্যাক্সের বোঝা কমাতে যে ‘কর্পোরেট স্ট্রাকচার’ তৈরি করা হয়েছিল সে ব্যাপারে সত্যিই কিছু জানেন না। সইটা মেসি করলেও তাঁর কর সংক্রান্ত ব্যাপার তাঁর বাবা জোর্জেই দেখাশোনা করতেন।

শুধু তাই নয়, তার আর্থিক ব্যাপার যে সংস্থা দেখে তাঁর প্রধান অ্যাঞ্জেল জুয়ারেজের সঙ্গে কোনও দিন এ সব নিয়ে কথাও হয়নি এটাও জানান তিনি। মেসি বলেছেন, ‘‘জীবনে ওনাকে দ্বিতীয় বার দেখাটাই আমার কাছে বিরাট ব্যাপার। মনে হচ্ছে ওনাকে এক বারই দেখেছিলাম একটা চুক্তি সই করার সময় হয়তো।’’ ছেলেকে বাঁচাতে মেসির বাবাও চেষ্টা কম করেননি আদালতে। হোর্জের বক্তব্য একটাই, ‘‘আমার ছেলে এ সবের কিছুই জানে না।’’

তবে এতেই ব্যাপারটা মিটছে না। ঠিক যেমন মিটছে না মেসি কোপার প্রথম ম্যাচে চিলির বিরুদ্ধে নামবেন কি না প্রশ্নটা। আর্জেন্তিনীয় মিডিয়া বলছে কয়েকদিন আগে হন্ডুরাসের বিরুদ্ধে ফ্রেন্ডলি ম্যাচে পাঁজরে যে ভাবে চোট পেয়েছেন মেসি তাতে প্রথম ম্যাচে তিনি নাও নামতে পারেন। পাশাপাশি এমনও বলা হচ্ছে যে ভাবে আদালতে দৌড়াদৌড়ি করতে হচ্ছে আর্জেন্তিনার ক্যাপ্টেনকে তাতে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়া স্বাভাবিক। শারীরিক ভাবে পুরো ফিট হওয়ার সঙ্গে তাই দ্রুত মানসিক ভাবে তরতাজা হয়ে ওঠার চ্যালেঞ্জটাও নিতে হবে তাঁকে। এই ধকল সামলে চিলি ম্যাচে নামাটা তাই মেসির কাছে বেশ চাপের।

ছবি: এএফপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন