মেসির গোল। সেলিব্রেট হবু বাবার। ছবি: এএফপি।
একটা ম্যাচই ফুটবল বিশ্বের মেরু ফের বদলে দিয়েছে। বিশ্ব ফুটবলের আকর্ষণের মেরুবিন্দু ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো থেকে এখন ফের লিও মেসির দিকে। টানা দু’বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী পর্তুগিজ মহাতারকা দু’বছর আগে ব্যাটনটা ছিনিয়ে নিয়েছিলেন মেসির থেকে। মায়াবী বুধরাতের মেসি ম্যাজিকের পর ফের যা বার্সেলোনার রাজপুত্রের দখলে।
শুধু হারানো সিংহাসনই পুনর্দখলই নয়, বিশ্বকাপ ফাইনালে জার্মানদের হাতে রক্তাক্ত হওয়ার বদলাও কি নিলেন? তাই বাঁধনহারা গোলের উৎসবে ভেসে গিয়েছিলেন? ম্যাচের পর মেসি বলেন, ‘‘গোলটার গুরুত্বের কথা ভেবে প্রচণ্ড আনন্দ হয়েছিল। তাই উৎসবটা বেরিয়ে আসে।’’ সঙ্গে আর্জেন্তিনার মহাতারকা যোগ করেন, ‘‘আমরা গোলের মুখ খুলতে পেরেছি, যেটা খুব প্রয়োজন ছিল ম্যাচটা জিততে। খুশির কথা, তার পর আরও দুটো গোল আমরা করতে পেরেছি।’’
ম্যাচের পর সবর্কালের সেরা কে ব্রিটিশ মিডিয়ার সমীক্ষায় মেসি সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন। আর গত বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী রিয়াল মাদ্রিদ মহাতারকা ভোটে নেমে গিয়েছেন পাঁচে। মেসি ভক্তদের উৎসবও তো লাগামছাড়া। সোশ্যাল মিডিয়ায় মেসি প্রশংসার সুনামি। তবে মেসি নিজে কিন্তু মাঠে যতই উৎসব করুন ম্যাচের পর গম্ভীর মুখেই ছিলেন। বোঝাতে ব্যস্ত ছিলেন কতটা কঠিন ছিল গুয়ার্দিওলার টিমের বিরুদ্ধে এই সাফল্য আনাটা। ‘সিরিয়াস’ মেসি বলে দেন, ‘‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল, তার উপর বিপক্ষে দুর্দান্ত সব প্লেয়ার। বায়ার্ন তো বল দখলের দিক থেকেও এগিয়ে ছিল। তাই গোল করে এগিয়ে যাওয়াটা খুব কঠিন লাগছিল।’’ সঙ্গে বার্সার রাজপুত্র আরও যোগ করেন, ‘‘তার পরে অবশ্য আমরাই এগিয়ে যাই। টিমের বাকিরাও এগিয়ে আসে আর সব মিলিয়ে সুপার রেজাল্ট নিয়ে দ্বিতীয় পর্বে নামাটা নিশ্চিত করি।’’
পাশাপাশি রেফারি নিকোলা রিজোলিরও প্রশংসা করেন মেসি। ইনজুরি টাইমে সুয়ারেজকে পরিষ্কার ফাউল করার পরও তিনি খেলা থামাননি। রেফারি গতিটা চালু রাখায় মেসি পরক্ষণেই নেইমারকে তৃতীয় গোলের অনবদ্য পাসটা বাড়ান। ‘‘রেফারি একেবারে ঠিক সিদ্ধান্তটাই নিয়েছিলেন। তারপর তো আমি যেটা স্বাভাবিক সেটাই করেছি— যেটা করা উচিত ছিল। পরিস্থিতি অনুযায়ী আমি শুধু সাড়া দিয়েছি। বল আমার দখলে থাকলে আমি খেলা চালিয়ে যাই,’’ বলেন বার্সার রাজপুত্র।
এর আগে ইউরোপের বাইরে বায়ার্ন এক বারই কাতালানদের কাছে চূর্ণ হয়েছে। ছ’বছর আগে। ন্যু কাম্পে সে বার চার গোলে এগিয়ে থাকার পর দ্বিতীয় পর্বে ১-১ ফল হয়েছিল। এ বারও কি তাই হবে? গুয়ার্দিওলাও তো বুধবার ম্যাচে নামার আগে বলেছিলেন প্রথম পর্বে বায়ার্ন গোল করতে না পারলে তাঁর দলের পক্ষে ফাইনালে যাওয়া প্রায় ‘অসম্ভব’। প্রাক্তন গুরুর মন্তব্য নিয়ে এ বার কিন্তু সতর্ক মেসি। ‘‘এটা ঠিক যে এই ম্যাচে ভাল ফল করাটা সঙ্গে নিয়েই জার্মানিতে নামব। তবে মিউনিখে লড়াইটা কিন্তু সহজ হবে না। বায়ার্ন ঘরের মাঠে সবসময়ই শক্তিশালী। আমাদের কিন্তু এখনও ওখানে খেলতে হবে সঙ্গে নিজেদের উপর বিশ্বাসটাও রাখতে হবে।’’