‘মিটু’ স্রোত খেলাতেও, অভিযুক্তের নাম রণতুঙ্গা

মঙ্গলবারই ভারতীয় ব্যাডমিন্টন তারকা জ্বালা গাট্টা জানিয়েছিলেন তাঁকে মানসিক ভাবে নির্যাতনের কথা। এ বার সরাসরিই বিশ্বকাপ জয়ী প্রাক্তন শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক অর্জুন রণতুঙ্গার বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ আনলেন এক বিমানবালা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:২০
Share:

কাঠগড়ায়: রণতুঙ্গা। ফাইল চিত্র

এত দিন রাজনীতি বা চলচ্চিত্র জগতেই যা সীমাবদ্ধ ছিল, এ বার সেই ‘মিটু’ ঝড় স্পর্শ করল খেলার জগতকেও।

Advertisement

মঙ্গলবারই ভারতীয় ব্যাডমিন্টন তারকা জ্বালা গাট্টা জানিয়েছিলেন তাঁকে মানসিক ভাবে নির্যাতনের কথা। এ বার সরাসরিই বিশ্বকাপ জয়ী প্রাক্তন শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক অর্জুন রণতুঙ্গার বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ আনলেন এক বিমানবালা। আর রণতুঙ্গা ‘মিটু’-র জালে জড়িয়ে পড়ার দিনেই এই প্রচারকে সমর্থন করলেন পি ভি সিন্ধু।

ঠিক কী করেছিলেন রণতুঙ্গা? সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং মিডিয়ায় নিজের নাম না প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট বিমানবালা জানিয়েছেন, ঘটনাটা ঘটেছিল মুম্বইয়ে। জুহুর এক অভিজাত হোটেলে। তিনি জানিয়েছেন, ‘‘নব্বই দশকের শুরুতে মুম্বইয়ের ওই হোটেলে ভারত ও শ্রীলঙ্কা দু’দলের ক্রিকেটাররাই উঠেছিলেন। তাই ক্রিকেটারদের ঘরে গিয়েছিলাম অটোগ্রাফ চাইতে। সঙ্গে গিয়েছিল আমার এক পুরুষ বন্ধু। সেখানেই রণতুঙ্গা প্রথমে আমাকে পানীয় দেন। তার পরে পুলসাইডে আমাকে একা নিয়ে যান হাঁটতে। তখন সেখানে কোনও ভারতীয় ক্রিকেটার ছিলেন না। রণতুঙ্গা এর পরেই হাঁটার মাঝে আমার কোমর জড়িয়ে ধরেন। তার পরে হাত এমন ভাবে রাখেন যা আমার বক্ষদেশ স্পর্শ করছিল।’’

Advertisement

মহিলা আরও জানিয়েছেন, ‘‘ভয় পেয়ে রণতুঙ্গার পায়ে আঘাত করে দৌড়ে পালাই। এমনকি পুলিশে অভিযোগ করার কথাও বলি। কিন্তু রিসেপশনে গিয়ে হোটেলকর্মীদের অভিযোগ জানালে তাঁরা সে দিন কোনও ব্যবস্থাই নেননি। বরং, এটা ব্যক্তিগত ব্যাপার বলে এড়িয়ে গিয়েছিলেন।’’

রণতুঙ্গা এই মুহূর্তে শ্রীলঙ্কার পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী। তিনি যদিও এই প্রসঙ্গে প্রচারমাধ্যমের কাছে কোনও মন্তব্য করেননি।

অন্যদিকে এ দিনই এই ‘মিটু’ প্রচারের প্রতি নিজের সমর্থন জানিয়েছেন রিয়ো অলিম্পিক্সে রুপো জয়ী ভারতীয় ব্যাডমিন্টন তারকা পি ভি সিন্ধু। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘মানুষ যে এগিয়ে এসে এ ভাবে মুখ খুলছেন, তা আমি সমর্থন করি। এ ব্যাপারে অভিযোগকারীদের প্রতি আমার পূর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে।’’ সিন্ধুর কাছে সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছিলেন, তিনি ক্রীড়াজগতে এ রকম কোনও ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন কি না? সিন্ধু উত্তর দেন, ‘‘সিনিয়র ও কোচেদের ব্যাপারে কিছু জানি না। আর আমি দীর্ঘদিন ধরেই ক্রীড়াজগতে রয়েছি। সেখানে আমার সঙ্গে অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি।’’

তবে সিন্ধু কোনও অপ্রীতিকর সমস্যার মুখোমুখি না হলেও ব্যাডমিন্টনে তাঁর এক সতীর্থ জ্বালা গুট্টা অভিযোগ তুলেছেন এক কোচের বিরুদ্ধে। যার সম্পর্কে ‘মি টু’ প্রচারের উল্লেখ করে অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত জ্বালার মন্তব্য, ‘‘যে মানসিক নির্যাতনের মধ্য দিয়ে আমাকে যেতে হয়েছিল, সে ব্যাপারে আমারও মুখ খোলা উচিত।’’

জ্বালার অভিযোগে, ‘‘২০০৬ সাল থেকে সেই ব্যক্তি প্রধান হন। তার পর থেকে তিনি আমাকে দল থেকে বাদ দেওয়ার নানা ছক কষেছিলেন। আমি জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়া সত্ত্বেও তিনি আমাকে দল থেকে বাদ দিতে চাইতেন। রিয়ো অলিম্পিক্স থেকে ফেরার পরে ফের আমাকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। যুক্তি ছিল, আমি তখন খেলছিলাম না।’’

এখানেই শেষ নয়। জ্বালা আরও বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি আমাকে সরাসরি কিছু না বললেও আমার ডাবলস পার্টনারদের হুমকি দিতেন। যাতে আমি সঙ্গীহীন হয়ে পড়ি কোর্টে। এ বাবেই আমাকে দলের বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলেন তিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন