ইনচিওনে রবিবার সানিয়ারা। ছবি: পিটিআই
তিনটি ব্রোঞ্জ নিশ্চিত। এ বার অপেক্ষা আরও দু’টি পদকের। হয় সোনা, নয় রুপো। ইনচিওনের টেনিস কোর্টে ভারতের সাফল্যের খতিয়ান এমনই।
সোমদেব, লিয়েন্ডার, বোপান্নারা পেশাদার সার্কিট ছেড়ে এশিয়াডে নামতে রাজি না হলেও সানিয়া মির্জা শেষ পর্যন্ত হয়েছেন। কয়েক দিন আগেও যাঁকে তাঁর নিজের দেশে ‘পাকিস্তান কি বহু’ বলে কটাক্ষ করা হয়েছিল, সেই সানিয়াই এশিয়াডের আসরে এখন ভারতীয় টেনিসের মূল কান্ডারি। জিশান আলির ছাত্রী অনামী প্রার্থনা থোম্বারেকে সঙ্গে নিয়ে যেমন মেয়েদের ডাবলসে ব্রোঞ্জ জিতলেন, তেমনই সাকেত মিনেনির সঙ্গে মিক্সড ডাবলসে সোনার লড়াইয়েও রয়েছেন তিনি। সোমবার ফাইনালে হারলেও রুপো পাচ্ছেনই।
অন্য দিকে মিনেনি এবং সনম সিংহও আবার ছেলেদের ডাবলস ফাইনালে উঠে পড়েছেন। তাই বিশাখাপত্তনমের ২৭ বছর বয়সি নতুন টেনিস তারকা সাকেতের সামনে সোমবার জোড়া সোনা জয়ের হাতছানি। সমস্যা হল, সোমবার মাত্র তিন-চার ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে দু’টি ফাইনাল খেলতে হবে। সোমবার ইওরুমুল টেনিস কোর্টে স্থানীয় সময় অনুযায়ী দুপুর বারোটায় তাঁকে সনম সিংহকে সঙ্গে নিয়ে ছেলেদের ডাবলস ফাইনালে নামতে হবে অষ্টম বাছাই কোরীয় জুটির বিরুদ্ধে। আবার দুপুর আড়াইটেয় মিক্সড ডাবলসের ফাইনাল শীর্ষবাছাই চিনা তাইপে জুটির বিরুদ্ধে। আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই স্নাতক পরপর দুটো ফাইনালের ধাক্কা কী ভাবে সামলান, সেটাই দেখার।
রবিবারও অবশ্য পরপর দুটো ম্যাচই খেলতে হয়েছে প্রথম এশিয়াডে নামা সাকেতকে। ছেলেদের ডাবলসে পঞ্চম বাছাই সাকেত ও সনম শীর্ষবাছাই তাই জুটি সনচাই ও সনচাত রতিওয়াতানাকে মাত্র ৬৭ মিনিটে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালে পৌঁছে যান। ফল ৪-৬, ৬-৩, ১০-৬। বড় সার্ভ খেলা সাকেত এর পর সানিয়ার সঙ্গে মিক্সড ডাবলসের সেমিফাইনালে নেমে চিনা জুটি জি ঝেং ও জে ঝাং-কে সরাসরি সেটে ৬-১, ৬-৩ হারিয়ে দেন। পরের ফাইনাল ম্যাচটি অবশ্য বৃষ্টির জন্য মাঝে কিছুক্ষণ বন্ধ ছিল। সোমবারও এই দাপট দেখাতে পারলে ভারতকে সোনা এনে দিতে পারেন সাকেত, সানিয়ারা। অন্য দিকে, চণ্ডীগড়ের সনম সিংহ ২০১০ এশিয়াডে সোমদেব দেববর্মনের সঙ্গে জুটি বেঁধে ছেলেদের ডাবলসে সোনা জিতেছিলেন। এ বার তাঁর সামনে এশিয়াডের দু’নম্বর সোনা জয়ের সুযোগ।
এশিয়ান গেমসে এর আগের তিন বারে একটি সোনা, তিনটি রুপো ও দু’টি ব্রোঞ্জজয়ী সানিয়া এ দিন তাঁর সাত নম্বর এশিয়াড পদকটি জিতে নিলেন মেয়েদের ডাবলসের সেমিফাইনালে দ্বিতীয় বাছাই চিনা তাইপের জুটির কাছে হেরে। এক ঘন্টা ৩৫ মিনিটের লড়াইয়ে হারার আগে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেও পঞ্চম বাছাই সানিয়া ও প্রার্থনা শেষ পর্যন্ত ৭-৬ (১), ২-৬, ৪-১০ হেরে যান। ছেলেদের ডাবলসের শেষ চারে হেরে গিয়ে ব্রোঞ্জ পান য়ুকি ভামব্রি ও দ্বিবীজ শরনও। চতুর্থ বাছাই এই ভারতীয় জুটি হারে বাছাই তালিকায় আটে থাকা কোরীয় জুটির কাছে। এই অপ্রত্যাশিত হার না হলে ছেলেদের ডাবলসে সোনা, রুপো দুটোই ভারতের ঝুলিতে জমা হত।
ইনচিওন থেকে অবশ্য য়ুকি আরও একটি পদক নিয়ে ফিরছেন। সিঙ্গলসে একমাত্র পদকটি (ব্রোঞ্জ) জিতলেন তিনিই। পঞ্চম বাছাই জাপানি ইওশিহিতো নিশিওকার কাছে য়ুকি সেমিফাইনালে হারলেন ৬-৩, ২-৬, ১-৬।