আমেরের মঞ্চে সেঞ্চুরি মিসবার

মঞ্চটা হওয়ার কথা ছিল মহম্মদ আমেরের। এই লর্ডস টেস্ট ঘিরেই তো তাঁর বিরুদ্ধে স্পট-ফিক্সিংয়ের অভিযোগ উঠেছিল। দুই সতীর্থ-সহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত হয়ে গিয়েছিলেন তরুণ, প্রতিভাবান পাকিস্তানি পেসার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লন্ডন শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৬ ০৩:৩৫
Share:

সেঞ্চুরি করে মিসবা।

মঞ্চটা হওয়ার কথা ছিল মহম্মদ আমেরের। এই লর্ডস টেস্ট ঘিরেই তো তাঁর বিরুদ্ধে স্পট-ফিক্সিংয়ের অভিযোগ উঠেছিল। দুই সতীর্থ-সহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত হয়ে গিয়েছিলেন তরুণ, প্রতিভাবান পাকিস্তানি পেসার। ২০১০-এর সেই অভিশপ্ত টেস্ট সিরিজের পরে আবার সেই লর্ডসেই ফিরলেন আমের। এর আগে বছরের শুরুর দিকে জাতীয় জার্সিতে খেলেছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। কিন্তু গড়াপেটার কালো মেঘের আবহে ফের সেই ‘অকুস্থলে’ ফেরা— আমেরের আপাতত সংক্ষিপ্ত অথচ ঘটনাবহুল ক্রিকেটজীবনের অন্যতম শিরোনামযোগ্য মুহূর্ত।

Advertisement

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে যাবতীয় আগ্রহও ছিল আমেরকে ঘিরেই। এক দিকে প্রাক্তন ইংরেজ ক্রিকেটাররা তোপ দাগছিলেন যে, গড়াপেটার মতো মারাত্মক দোষে দোষী কোনও ক্রিকেটার কী ভাবে দ্বিতীয় সুযোগ পেতে পারেন? কী ভাবে ফের দেশের জার্সিতে ফিরতে পারেন মহম্মদ আমের? অন্য দিকে তরুণ পেসারের হয়ে প্রকাশ্যে ব্যাট করছিলেন তাঁর সতীর্থরা। প্রাক্তন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক শাহিদ আফ্রিদি যেমন বলে দিয়েছিলেন, আমের খুব বেশি প্রতিভাবান বলেই তাঁকে আর ক্রিকেট মাঠে দেখতে চান না ইংরেজ-সহ শ্বেতাঙ্গরা।

ইংল্যান্ড-পাকিস্তান প্রথম টেস্টের প্রথম দিন অবশ্য যাবতীয় প্রচারের আলো থাকল অধিনায়ক মিসবা উল হকের উপর। ছ’বছর পরে ইংল্যান্ডে টেস্ট খেলতে গিয়ে এ দিন টস জেতেন মিসবা। আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন। এবং খুব দ্রুতই হারান টিমের টপ অর্ডারকে। স্টুয়ার্ট ব্রড, ক্রিস ওকস এবং জেক বলের সামনে দাঁড়াতে পারেনি পাক টপ অর্ডার। ১৩৪ রানের মধ্যে আউট হয়ে যান মহম্মদ হাফিজ (৪০), শান মাসুদ (৭), আজহার আলি (৭) এবং ইউনিস খান (৩৩)।

Advertisement

যার পর দলের হাল ধরেন মিসবা। মজার হল, বিয়াল্লিশ বছরের মিসবা এই প্রথম ইংল্যান্ডের মাঠে টেস্ট ম্যাচ খেলতে নেমেছেন! এবং সে দেশে তাঁর প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসেই সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন! আট মাস আগে আরব আমিরশাহিতে টেস্ট সিরিজে তাঁর নেতৃত্বে ইংল্যান্ডকেই ০-২ হারিয়েছিল পাকিস্তান। যার পর মিসবা ভেবেছিলেন, অবসর নিয়ে নেবেন। তার পর এই সফরের কথা ভেবেই সিদ্ধান্ত বদলান মিসবা। যার ফল হাতেনাতে পেয়েও গেলেন।

যখন ব্যাট করতে নেমেছিলেন, তাঁর টিম ৭৭-৩। সেখান থেকে দলের স্কোর ২৮২ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যান মিসবা। দিনের শেষে পাকিস্তান ২৮২-৬। মিসবা অপরাজিত ১১০। তাঁর ইনিংসে রয়েছে আঠারোটা চার। ৪২ বছর ৪৭ দিন বয়সে মিসবা যে সেঞ্চুরিটা করলেন, তা সবচেয়ে বেশি বয়সে টেস্ট সেঞ্চুরির মালিকদের তালিকায় তাঁকে ছ’নম্বরে নিয়ে এল। দৌড়ে এক রান নিয়ে একশো রানে পৌঁছন মিসবা। লর্ডস প্যাভিলিয়নে উপস্থিত সতীর্থদের দিকে ব্যাট তুলে তার পর মাঠেই ডনবৈঠক দেওয়া শুরু করেন পাক অধিনায়ক। যেন বিশ্বকে বুঝিয়ে দেওয়া, তিনি কতটা ফিট। এ দিন তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দিয়ে যান ছয়ে নামা আসাদ শফিক (৭৩)।

ছবি: এএফপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন