জনসনের মুখে বিরাট দ্বৈরথ

বেঙ্গালুরুতে বিরাট কোহালিকে দেখে তাঁর নিজের ক্রিকেট জীবনের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল মিচেল জনসনের। অস্ট্রেলীয় মিডিয়ায় নিজের কলামে জনসন লিখেছেন, দ্বিতীয় টেস্টে কোহালি ছিলেন সমস্ত ব্যাপারেই আকর্ষণের কেন্দ্রে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৭ ০৩:৪৮
Share:

সঙ্ঘাত: অস্ট্রেলিয়ার সেই ছবি। জনসন বনাম কোহালি। ফাইল চিত্র

বেঙ্গালুরুতে বিরাট কোহালিকে দেখে তাঁর নিজের ক্রিকেট জীবনের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল মিচেল জনসনের। অস্ট্রেলীয় মিডিয়ায় নিজের কলামে জনসন লিখেছেন, দ্বিতীয় টেস্টে কোহালি ছিলেন সমস্ত ব্যাপারেই আকর্ষণের কেন্দ্রে। ‘যে ভাবে ও দর্শকদের চাঙ্গা করছিল, যে ভাবে নিজের দলের প্রত্যেক ক্রিকেটারকে উত্তেজিত করছিল, তাতে আমার খেলোয়াড় জীবনে ওর সঙ্গে সংঘর্ষের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল,’ লিখেছেন জনসন।

Advertisement

২০১৪-১৫ মরসুমে অস্ট্রেলিয়ায় কোহালি বনাম জনসন দ্বৈরথ হয়ে উঠেছিল ক্রিকেট বিশ্বের সেরা আকর্ষণ। সেই সিরিজেই জনসনকে পিটিয়ে চার টেস্টে চারটি সেঞ্চুরি করেছিলেন কোহালি। তাঁর অনবদ্য ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ভক্তদের মনে গেঁথে রয়েছে জনসনের সঙ্গে খটাখটির নানা ঘটনা। এক বার জনসনের ছুড়ে দেওয়া বল লাগে কোহালির গায়ে। তার পর সাংবাদিক সম্মেলনে এসে কোহালি বলে যান, ‘‘ওর প্রতি আমার কোনও সম্মান নেই। যে সম্মান করতে জানে না নিজে, তাকে কী সম্মান করব?’’

কোহালির সঙ্গে সেই সঙ্ঘাতের কথা টেনে জনসন লিখেছেন, ‘সে দিন দুর্দান্ত খেলেছিল বিরাট। দারুণ একটা সেঞ্চুরি করেছিল। দিনের শেষ বলে আমি ওর উইকেট নিয়েছিলাম। তার পরেই সাংবাদিক সম্মেলনে এসে ওই কথাগুলো বলেছিল ও। তবে সেই কথাগুলো আমাকে খুব একটা প্রভাবিত করেনি কারণ, আমি মাঠের বাইরের কথায় কখনও কান দিইনি।’

Advertisement

ভারত ফিল্ডিং করার সময় উইকেট পড়লেই ক্যামেরা তাক করে কোহালিকে। সকলের মতো এ কথা জনসনও জানেন। সেই কারণে বেঙ্গালুরুতে কোহালি কী রকম আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তা তাঁর চোখ এড়ায়নি। ‘প্রায় প্রত্যেক অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানকে ও সেন্ড অফ (আউট হওয়ার পরে বেরিয়ে যেতে বলার ইঙ্গিত করা) দিচ্ছিল।’’ একই সঙ্গে জনসন মনে করছেন, যে হেতু ক্যামেরা সব সময় কোহালিকে তাক করে, তাঁর সতর্কও থাকা উচিত। ‘আমিও মাঠে খুব আগ্রাসী ছিলাম। কিন্তু ক্যামেরা নিয়ে সতর্ক থাকতাম। প্রতিপক্ষ ক্রিকেটারদের সকলকে সেন্ড অফ দেওয়াটা নিশ্চয়ই খুব ভাল দৃশ্য হিসেবে দেখা হবে না’।

আরও পড়ুন: কামিন্সকেই এনে ফাটকা অস্ট্রেলিয়ার

জনসনের আরও মনে হচ্ছে, শুধু আক্রমণাত্মক মনোভাবই বেঙ্গালুরুতে বিরাটের আগ্রাসনের কারণ নয়। ‘ও কিছুটা হতাশও ছিল কারণ এখনও পর্যন্ত সিরিজে রান করতে পারেনি,’ মনে করছেন প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় পেসার। তবে এক নিঃশ্বাসে এটাও বলে দিচ্ছেন তিনি যে, ‘বিরাটের মতো ক্রিকেটারকেই যে কোনও দল পেতে চাইবে। কারণ ওর মতো নেতা থাকা মানে খেলোয়াড়দের সব সময় সমর্থন করে যাবে’।

দু’দলের মধ্যে তিক্ততার কারণে চলতি সিরিজের সঙ্গে অনেকে তুলনা করতে শুরু করে দিয়েছেন ২০০৮ সালের সেই ‘মাঙ্কিগেট’ সিরিজের। জনসন কিন্তু একমত নন। তিনি সাফ সাফ বলে দিচ্ছেন, ‘মাঙ্কিগেট’-এর সময় অনেক বড় সংকট তৈরি হয়ে গিয়েছিল। সিডনিতে হরভজন সিংহ এবং অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের মধ্যে ঝামেলার ঘটনা নিয়ে জনসনের মনে পড়ছে যে, তিনি তখন সবে দলে এসেছিলেন। কিন্তু যা ঘটেছিল তা নিয়ে দলের সিনিয়র-রা খুবই বিরক্ত এবং অসন্তুষ্ট ছিলেন।

জনসন মনে করেন না, ‘মাঙ্কিগেট’-এর খারাপ স্মৃতি এ বারে ফিরে আসবে। ‘এখন আইপিএলে অনেকে এক সঙ্গে খেলে। একে অন্যকে অনেক ভাল চেনে। তার ওপর ছেলেরা এখন অনেক পরিণত হয়ে গিয়েছে। মনে হয় না ২০০৮-এর মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে,’ পর্যবেক্ষণ অ্যাসেজে আগুন ঝরানো বোলিং করে লিলি-টমসনদের মনে করানো মিচেল জনসনের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন