নায়ক: রবিবার ম্যাচের পরে সোনার বুট হাতে লিভারপুলের সালাহ। ইপিএলে ৩২টি গোল করে তিনি শীর্ষে। রয়টার্স
চেলসি চার বছর আগে মহম্মদ সালাহকে ‘লোন’-এ ছেড়ে দিয়েছিল। মিশরীয় মহাতারকা ফুটবলারের বয়স তখন সবে একুশ। জোসে মোরিনহো সেই সময় ‘দ্য ব্লুজ’-এর ম্যানেজার। ইংল্যান্ডের ফুটবল লিখিয়েদের দাবি, পর্তুগিজ ম্যানেজারই আসলে কলকাঠি নেড়ে সালাহকে সরিয়ে দিয়েছিলেন।
সম্প্রতি মোরিনহো এই অভিযোগ অস্বীকার করে মন্তব্য করেন, ‘‘মোটেই সেটা আমার একার সিদ্ধান্ত ছিল না। সালাহ নিজেই ইংল্যান্ডের পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেনি। আর সংস্কৃতিগত ব্যবধানের জন্য সবার সঙ্গে মেলামেশাও করতে পারত না। ফুটবলার হিসেবেও তখনও ততটা তৈরি হয়নি। তাই চেলসিতে সম্মিলিত ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওকে ছেড়ে দেওয়ার। সেটা মোটেই আমার একার সিদ্ধান্ত ছিল না।’’
এ সব প্রশ্ন উঠছে একটাই কারণে। এই মরসুমে এ এস রোমা থেকে লিভারপুলে আসা সালাহর অবিশ্বাস্য সাফল্য। ইপিএলের সেরা ফুটবলার হয়েছেন। এমনকী ইউরোপের সেরা লিগগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গোল করার লড়াইয়ে লিয়োনেল মেসির মতো মহাতারকাকেও তাড়া করেছেন। সম্প্রতি শোনা যাচ্ছিল, রিয়াল মাদ্রিদ তাঁকে দলে নিতে উৎসাহী। সালাহ নিজেই অবশ্য সেই জল্পনায় জল ঢেলে জানিয়েছেন, লিভারপুলে এটাই তাঁর প্রথম মরসুম। নতুন ক্লাবে আরও অনেক দিন খেলাই তাঁর ইচ্ছে।
কেউ কেউ আবার মেসি আর রোনাল্ডোর সঙ্গেও সালাহর তুলনা শুরু করেছেন। এ বার মিশরের এক টিভি চ্যানেলে বিষয়টি নিয়ে তিনি স্বয়ং মুখও খুলেছেন। গোপন করেননি, এই ধরনের তুলনায় নিজের প্রবল অস্বস্তির কথাও। ‘‘এমন আজগুবি তুলনা আমার মোটেই ভাল লাগছে না। মেসি, রোনাল্ডো দু’জনই বিরাট ফুটবলার। সব চেয়ে বড় কথা, দশ-এগারো বছর ধরে ওরা একটানা অসাধারণ খেলে যাচ্ছে,’’ বলেছেন সালাহ। সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘আমাকেও অনেক দিন ভাল খেলতে হবে। তার পরে এ সব কথা উঠলে তাও একটা মানে থাকে। অবশ্য আমিও স্বপ্ন দেখি ওদের মতোই অনেক দিন ভাল খেলার। সেটা পারলেই তুলনার প্রশ্ন উঠতে পারে।’’
শোনা যাচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে দারুণ কিছু খেলে দিলে মেসি, রোনাল্ডোদের হারিয়ে তিনি এ বারের ব্যালন ডি’ওর-টাও জিতে যেতে পারেন। এই মরসুমে লিভারপুলে সালাহর সাফল্য সত্যিই অবিশ্বাস্য। এ বারের ইপিএল-এ ক্লাবের হয়ে ৫০টি ম্যাচ খেলে তিনি গোল করছেন ৪৪টি। রবিবার লিগের শেষ ম্যাচেও গোল পেলেন। লিভারপুল ৪-০ হারাল ব্রাইটনকে। এবং ইপিএলে তাঁর গোল দাঁড়াল ৩২। তাঁর জন্যই লিভারপুল লিগ শেষ করল চারে। অর্থাৎ পরের বারও সরাসরি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলবে তারা। এ দিকে তাঁর ব্যালন ডি’ওর জেতার সম্ভাবনা প্রসঙ্গ উড়িয়ে দিয়ে সালাহর মন্তব্য, ‘‘ও সব ভাবছিই না। আমার এখন একটাই কাজ। লিভারপুলকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে জেতাতে সাহায্য করা।’’