কলকাতা থেকে এনবিএ স্কুলে বাস্কেটবলের আলি

ফুটবল ও ক্রিকেট পাগল দেশে জন্মালেও তার পছন্দের জিনিস ‘স্ল্যাম ডাঙ্ক’। জানিয়ে দেওয়া যাক, এটা বাস্কেটবল খেলার একটি বিশেষ ‘মুভ’। যা করতে অভ্যস্ত ছিলেন মাইকেল জর্ডান। যেখানে লাফিয়ে উঠে শক্তি দিয়ে বলটা বাস্কেট করতে হয়।

Advertisement

সোহম দে

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৭ ০৩:৫১
Share:

স্বপ্ন: এনবিএ জাম্পে অংশগ্রহণ করছে আলি (বাঁ দিকে)। নিজস্ব চিত্র

ফুটবল ও ক্রিকেট পাগল দেশে জন্মালেও তার পছন্দের জিনিস ‘স্ল্যাম ডাঙ্ক’। জানিয়ে দেওয়া যাক, এটা বাস্কেটবল খেলার একটি বিশেষ ‘মুভ’। যা করতে অভ্যস্ত ছিলেন মাইকেল জর্ডান। যেখানে লাফিয়ে উঠে শক্তি দিয়ে বলটা বাস্কেট করতে হয়।

Advertisement

বাড়িতে টিভি নেই। ইচ্ছা থাকলেও কখনও কোবি ব্রায়ান্ট বা লেব্রন জেমসের খেলা দেখতে পারেনি। এনবিএ নিয়ে তার সীমিত জ্ঞান থাকতে পারে। কিন্তু কয়েক দিন বাদে সেই এনবিএ-র বিশ্বে পা রাখতে চলেছে ১২ বছরের মহম্মদ আলি। দিল্লি এনসিআর-এ শুরু হতে চলা ভারতে এনবিএ-র প্রথম অ্যাকাডেমিতে ট্রেনিং নেওয়ার সুযোগ পেল আলি।

ফোনে তাকে যখন ধরা হল তখনও গলায় অবিশ্বাস। ‘‘দারুণ লাগছে এত বড় মঞ্চ পেয়ে। আমি খুব উৎসাহী। এনবিএ অ্যাকাডেমিতে সযোগ পাওয়ায় আরও উন্নতি করতে পারব। আন্তর্জাতিক মানের ট্রেনিং পাব,’’ বলছে আলি।

Advertisement

ভারতে বাস্কেটবলের আগ্রহ বাড়াতে গত ডিসেম্বর থেকেই এনবিএর স্কাউটিং প্রোগ্রাম শুরু হয়। ছ’টি রাজ্যে ‘এনবিএ জাম্প’ নামক শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়। সেখানেই স্থানীয় বাস্কেটবল প্রতিভাদের বাছার সিদ্ধান্ত হয়। কলকাতার নির্বাচকদের নজর কাড়ে মহম্মদ আলি। জাতীয় ফাইনালে চব্বিশ জনের মধ্যে জায়গা করে নিতেও সমস্যা হয়নি। ‘‘আমার বাড়ির সামনে একটা ক্লাব ছিল। সেখানেই প্রথম ট্রেনিং করি। শুরুর দিকে একটু অসুবিধা হতো। নিয়ম বোঝা বা উঁচুতে উঠে বাস্কেটে বল ফেলা। কিন্তু আস্তে আস্তে ভাল লাগতে শুরু করে,’’ বলছে আলি।

এনবিএ-র তরফে এত বড় একটা মঞ্চের ব্যবস্থা করা হলেও আলির সৌভাগ্য হয়নি টিভিতে কোনও ম্যাচ দেখার। ‘‘আমার বাড়িতে টিভি নেই। তাই এনবিএ কোনওদিন দেখতে পাইনি। কিন্তু শুনেছি বাস্কেটবলের খুব বড় একটা মঞ্চ এই লিগ,’’ বলছে আলি। টিভি না থাকলেও লেব্রন জেমসের খেলার ভি়ডিও দেখেছে সে। ভাল লাগে শিকাগো বুলসের জিমি বাটলার-কেও।

ছোট্ট আলি ফরোয়ার্ডে খেলতেই ভালবাসে। ছেলেকে ভবিষ্যতে বিশ্বমঞ্চে দেখতে এখন থেকেই পুরোদমে কোর্টে নেমে পড়েছেন তার বাবাও। প্রত্যেক দিন প্রায় চার-পাঁচ ঘণ্টার ট্রেনিংয়ের মধ্যে করতে হচ্ছে আলিকে। সকালে সাই-তে ট্রেনিং। বিকেলে বৌবাজারের বাস্কেটবল ক্লাব ছাত্র সমিতিতে। ‘‘সকাল থেকে রাত আমি এখন প্র্যাকটিসেই কাটাচ্ছি,’’ বলছে আলি, ‘‘বাস্কেটবল ছাড়া আর অন্য কোনও খেলা ভাল লাগে না। স্কুলের দলের হয়েও নিয়মিত খেলি।’’

এনবিএ অ্যাকাডেমিতে বাস্কেটবল ট্রেনিং ছাড়াও সবাইকে স্কলারশিপও দেওয়া হবে। ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি চলবে পড়াশুনোও। আলি বলছে, ‘‘অনেক কিছু শেখার আশায় আছি। ভারতের আরও অনেক প্রতিভাবান অ্যাথলিটরা থাকবে। তাদের সঙ্গে ট্রেনিং করতে পারলে ভবিষ্যতে লাভ হবে।’’ ফরোয়ার্ডে খেলা আলির শক্তি কী? দ্রুত জবাব এল, ‘‘আমার গ্রিপিংটা ভাল। দ্রুত নড়াচড়া করতে পারি কোর্টে।’’

জুলাইয়ের শেষে ভারতে আসার কথা এনবিএ তারকা কেভিন ডুরান্টের। তখন তিনি আসতে পারেন অ্যাকাডেমিতেও। আলি তো এক প্রকার ঠিক করেই রেখেছে, ‘‘ডুরান্টের সঙ্গে দেখা হলে বলব ভাল কিছু টিপস দিতে যাতে আরও বেশি বাস্কেট করতে পারি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন