আমনাকে নিয়ে বিশেষ নকশা

বঙ্গযোদ্ধাদের নীল জার্সি পেয়েই দীপেন্দুর কাছে দিপান্দা ডিকার প্রতিশ্রুতি, ‘‘শনিবার গোল করবই।’’ গোল করলেই তো হবে না। গোল রুখতেও তো হবে। এ বার কলকাতা লিগে তিন প্রধানের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গোল খেয়েছে মহমেডান। সাত ম্যাচে ১০টি। অনুশীলনের মাঝেই তাই মহমেডান গোলরক্ষক শঙ্কর রায়-এর সঙ্গে এ দিন গভীর আলোচনা করতে দেখা গেল ডিকাকে।

Advertisement

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৫০
Share:

মহড়া: কল্যাণীতে মিচেল ও আমনার বল দখলের লড়াই। মহমেডান মাঠে গোলরক্ষক শঙ্করকে পরামর্শ ডিকার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক ও সৌভিক দে।

অনুশীলন শেষে ড্রেসিংরুমে ফিরেই মহমেডানের ফুটবলার এবং কর্তা দীপেন্দু বিশ্বাসের কাছ থেকে আগাম উপহার চাইলেন তিনি। দীপেন্দু তাঁর হাতে তুলে দিলেন প্রো-কবাডি লিগে বাংলার টিম ‘বেঙ্গল ওয়ারিয়র্স’-এর জার্সি।

Advertisement

বঙ্গযোদ্ধাদের নীল জার্সি পেয়েই দীপেন্দুর কাছে দিপান্দা ডিকার প্রতিশ্রুতি, ‘‘শনিবার গোল করবই।’’

গোল করলেই তো হবে না। গোল রুখতেও তো হবে। এ বার কলকাতা লিগে তিন প্রধানের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গোল খেয়েছে মহমেডান। সাত ম্যাচে ১০টি। অনুশীলনের মাঝেই তাই মহমেডান গোলরক্ষক শঙ্কর রায়-এর সঙ্গে এ দিন গভীর আলোচনা করতে দেখা গেল ডিকাকে।

Advertisement

বিকেলে টিম বাসে চেপে কল্যাণী যাওয়ার সময় শঙ্করের সঙ্গে ওই আলোচনার বিষয়বস্তু জানতে চাওয়া হল ডিকার কাছে। রজার মিল্লার দেশের ফুটবলার বললেন, ‘‘শঙ্করকে বললাম, তুই গোল না খেলেই আমাদের এক পয়েন্ট পাকা। দু’পয়েন্ট-এর জন্য বাকি দশ জন গোল করার দায়িত্ব নিচ্ছি। তোর গোলে যেন বল না ঢোকে।’’

মোহনবাগানের বিরুদ্ধে মিনি ডার্বিতে গোল পাননি। কিন্তু কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে সাত ম্যাচে দশ গোল করে এই মুহূর্তে তিনিই লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা। মহমেডান তাঁবু ছেড়ে বেরোনোর সময় ডিকাকে ঘিরে ধরে সাংবাদিকরা জানতে চান, আপনি তো জোড়া গোলের কমে করেন না, ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধেও কী সে রকমই কিছু হতে চলেছে?

প্রশ্ন শুনে হাসেন মহমেডানের দশ নম্বর। বলেন, ‘‘গোল করাই আমার কাজ। মহমেডানের মতো মোহনবাগান সমর্থকরাও চাইছেন, আমরা ইস্টবেঙ্গলকে হারাই। তার জন্য ওদের আল আমনাকে আটকাতে হবে সবার আগে। ও টিমটাকে মাঠের ভিতর রিমোটে চালনা করে।’’ গত বছর আই লিগের দ্বিতীয় ডিভিশনে মহমেডানের দায়িত্বে ছিলেন রঞ্জন চৌধুরী। যিনি এখন আবার আমনাদের সহকারী কোচ। ফলে ডিকাদের দল সম্পর্কে অনেক তথ্যই মজুত লাল-হলুদ শিবিরে।

যদিও, দ্বিতীয় মিনি ডার্বিতে নিজেদের লক্ষ্য বদলে ফেলেছেন সাদা-কালো শিবিরের ফুটবলাররা। শনিবার কল্যাণীতে তাই তিন পয়েন্ট তুলতে মহমেডানের মূলমন্ত্র—মাঝমাঠে আমনাকে থামিয়ে দাও। তা হলেই গোলের বল পাবে না রফিকরা। পাশাপাশি কোনও গোল হজম করা চলবে না।’’

আরও পড়ুন: বার্সেলোনাতেই থাকছেন মেসি, দাবি ক্লাব প্রধানের

শুক্রবার সকালে মহমেডান অনুশীলনে রানা-ফৈয়াজদের নিয়ে সেই অপারেশনের-ই মহড়া দিলেন কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টচার্য। মাঝমাঠে ব্ল্যাকবোর্ড রেখে সেই ছক অনুযায়ী চলছিল, আক্রমণ ও রক্ষণকে ঝালিয়ে নেওয়ার কাজ। ডিকা-দীপেন্দু দোয়ারি-শেখ ফৈয়জ-জিতেন মুর্মুদের চতুর্ভূজ আক্রমণ সামলাচ্ছিলেন রানা, রিচার্ড, কালুরা। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে রিচার্ডের মার্কিং থেকে ছিটকে বেরিয়ে গিয়ে হেডে গোল করেছিলেন আজহারউদ্দিন মল্লিক। এ দিন সেই ভুল দূর করার অনুশীলন হল জোরকদমে। যা থেকে স্পষ্ট আমনার জন্য কড়া চ্যালেঞ্জ নিয়ে শনিবার মাঝমাঠে অপেক্ষায় থাকবেন কালু, তীর্থঙ্কররা। নিজেদের অর্ধে আমনাকে ফাঁকা জায়গা দিতে নারাজ মহমেডান।

অনুশীলন শেষে যা মেনেও নিলেন বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। বললেন, ‘‘মোহনবাগান ম্যাচে ক্রোমাদের কোমায় পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। কাল সে রকমই ট্যাকটিক্স অপেক্ষা করে থাকবে আমনার জন্য।’’

আইএসএল-এ এফসি গোয়ার ডাক পেয়ে এ দিন সকালেই গোয়া চলে গিয়েছেন মনবীর। ফলে মোহনবাগান ম্যাচের টিমে অদলবদল হচ্ছে না। মোহনবাগানের বিরুদ্ধ যে টিম নেমেছিল সে টিমই নামছে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে।

ইস্টবেঙ্গল সম্পর্কে মহমেডান কোচের কৌশলী পর্যবেক্ষণ, ‘‘ইস্টবেঙ্গল ভাল দল। আর খালিদ তো আই লিগ জয়ী কোচ। আমাদের চেয়ে অনেক ভাল। তবে যে কোনও টিমকেই ডিকারা আক্রমণ করে কাঁপিয়ে দিতে জানে। কল্যাণীতে সেই খেলাটাই শনিবার তুলে আনতে হবে আমাদের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন