দুই গোলদাতা অসীম ও উগো।
মহমেডান ২ (উগোচুকু, অসীম)
এরিয়ান ০
পনেরো দিনের ব্যবধানে দুই প্রধানকে হারিয়ে চমকে দিয়েছেন ওঁরা। বুধবার জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে পয়েন্টের বিচারে শীর্ষে থাকা টালিগঞ্জ অগ্রগামীর সঙ্গে একই বিন্দুতে পৌঁছেও গিয়েছেন আদিলজা, অসীমরা। সুখের এমন দিনেও স্বস্তিতে নেই ফুজা তোপের দল। কারণ মহমেডান মেসে হঠাৎ-ই থাবা বসিয়েছে ডেঙ্গি।
উত্তরবঙ্গ-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ডেঙ্গি ছড়িয়ে পড়েছে। মহমেডানের মেস যেখানে সেই দরগা রোড অঞ্চলেও দেখা যাচ্ছে এই রোগ। মহমেডান ফুটবলাররা তার শিকার বলে মনে করছেন কর্তারা। মালসোয়ামা জোয়ালা সবে সেরে উঠেছেন তো ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন দলের নির্ভরযোগ্য মিডিও বসন্ত সিংহ। ইমরানের জ্বর কমলেও এ দিনের ম্যান অব দ্য ম্যাচ ফুলচাঁদ হেমব্রম সকাল থেকে জ্বরে আক্রান্ত। পরিস্থিতি যা তাতে পরের ম্যাচে তাঁকে পাওয়া কঠিন। যাদের হারাতে তিন দিন আগে কালঘাম ছুটেছিল ইস্টবেঙ্গলের, সেই এরিয়ানের বিরুদ্ধে ২-০ জিতেও তাই প্রচণ্ড চিন্তিত সাদা-কালো কোচ। ম্যাচের পর কোচ ফুজা তোপে বলে দিয়েছেন, “আমার চিন্তার আসল কারণ এখন কোনও দল নয়, ডেঙ্গি।”
কোচের সতর্কবার্তা পেয়েই তড়িঘড়ি দরগা রোডের ফ্ল্যাট ছেড়ে অন্য জায়গায় ইমরান-ফুলচাঁদদের নিয়ে যাচ্ছেন কর্তারা। বৃহস্পতিবার থেকেই জিনিসপত্র নিয়ে ব্রাইট স্ট্রিটের নতুন ফ্ল্যাটে চলে যাচ্ছেন সবাই। মহমেডান মাঠ সচিব কামারুদ্দিন বললেন “দরগা রোডে যেখানে আমাদের মেস রয়েছে, সেই এলাকাটা ডেঙ্গিপ্রবণ। কোচ আমাদের পুরো পরিস্থিতির কথা জানানোর পরই সব ব্যবস্থা করেছি। সঙ্গে সঙ্গেই আমরা ফুটবলারদের ব্রাইট স্ট্রিটের এক ফ্ল্যাটে স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই মুহূর্তে মহমেডান লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে রয়েছে। কোনও রকম ঝুঁকি নিতে চাই না।”
এ দিকে এরিয়ানকে ২-০ হারালেও, গোল পার্থক্যের বিচারে দুইয়েই রয়ে গেল ফুজা তোপের দল। মহমেডানের সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল-পার্থক্যে শীর্ষে রয়েছে সুব্রত ভট্টাচার্যের টালিগঞ্জ অগ্রগামী। তেত্রিশ বছর পর লিগ জয়ের নতুন স্বপ্ন হাতছানি দিচ্ছে সাদা-কালো সমর্থকদের। এ দিন সে জন্যই বারাসত স্টেডিয়ামে ছিল উপচে পড়া ভিড়। এমনকী স্টেডিয়ামের আশেপাশের বাড়ির উপরও উঠে পড়েছিলেন মহমেডান সমর্থকরা।
এরিয়ানের বিরুদ্ধে মহমেডান আক্রমণাত্মক ফুটবলই খেলল। তবে বিরতির আগে পেনিট্রেটিভ জোনে মহমেডান বল ধরলেই পায়ের জঙ্গল তৈরি করে আটকে দিচ্ছিল এরিয়ান। প্রথমার্ধে তাই কোনও গোল পাননি অসীমরা। কিন্তু বিরতির পর এরিয়ানের স্ট্র্যাটেজির পাল্টা ‘ওষুধ’ নিয়ে নামেন ফুজার ছেলেরা। উইং প্লে, মাঝমাঠ থেকে আক্রমণ তুলে আনতে শুরু করেন অসীম ফুলচাঁদরা। নিট ফল, বিরতির ঠিক পরেই ১-০ করেন উগোচুকু। মহমেডান এগিয়ে যাওয়ার পরই অবশ্য এরিয়ানের সব প্রতিরোধ উড়ে যায়। ইনজুরি টাইমে ব্যবধান বাড়ান অসীম।