দুরন্ত: আই লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার দৌড়ে ডিকা। ফাইল চিত্র
ইন্ডিয়ান অ্যারোজ ০ : মোহনবাগান ২
দিপান্দা ডিকার কপলাটাই খারাপ। ক্যামেরুন স্ট্রাইকার নিজে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন, কিন্তু তাঁর দল খেতাব পায় না। পরপর দু’বছর ঘটতে চলেছে এ রকম ঘটনা।
গত বছর ডিকা খেলেছিলেন শিলং লাজংয়ে। তিনি নিজে সেরা গোলদাতা হয়েছিলেন। শিলং অবশ্য খেতাবের ধার কাছে পৌঁছতে পারেনি। এ বারও অঙ্কের বিচারে এখনও খেতাব থেকে ছিটকে যায়নি মোহনবাগান। তবে লিগ টেবলের যা হিসাব তাতে এই অবস্থায় শঙ্করলাল চক্রবর্তীর টিম আই লিগ জিতলে সেটা হবে ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম বড় অঘটন। কারণ হিসাবটা হল খেতাব পেতে হলে আক্রম মোগরাভিদের বাকি দুটি ম্যাচ (চার্চিল ব্রাদার্স এবং গোকুলম) জিততে হবে। আর লিগ খেতাবের তিন দাবিদার নেরোকা, মিনার্ভা পঞ্জাব এবং ইস্টবেঙ্গলকে সব ম্যাচ হারতে হবে।
মোহনবাগান খেতাব জিতবে, এটা তাদের অতি বড় সমর্থকও মনে করেন না। কিন্তু গত বছরের মতো এ বারও সর্বোচ্চ গোলদাতা যে ডিকাই সেটা কার্যত নিশ্চিত। এ দিন ইন্ডিয়ান অ্যারোজের বিরুদ্ধে প্রথম গোল করার পর সবুজ-মেরুন স্ট্রাইকারের গোল হয়ে গেল ১২। তিনি প্রায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে গেলেন। তাঁর কাছাকাছি যাঁরা রয়েছেন সেই ফেলিক্স ওডিলি চিডি, চেঞ্চো গিলসন, ইউসা কাতসুমিরা রয়েছেন অনেক পিছনে। তিন জনই করেছেন ছয় গোল। ডিকার অবশ্য আফশোস, ‘‘টিম খেতাব না পেলে সর্বোচ্চ গোলদাতার কোনও মূল্য নেই। মোহনবাগানে চ্যাম্পিয়ন হতেই এসেছিলাম। সেটা হচ্ছে না। দেখা যাক সুপার কাপে কী হয়।’’
যে দলের সঙ্গে ঘরের মাঠে ড্র করেছিল মোহনবাগান, গোয়ায় গিয়ে সেই নর্টন দ্য মাতোসের দলকে সহজেই হারিয়ে দিলেন শিল্টন পালরা। বিরতির আগেই জোড়া গোল করেন দিপান্দা ডিকা ও আক্রম মোগরাভি। গোলের সংখ্যা বাড়তেই পারত। ডিকার গোলটা অবশ্য মনে রাখার মতো। ক্যামেরণ ওয়াটসনের তোলা বল ব্যাকভলিতে গোলে পাঠান ডিকা। ডিকার একটি হেড পোস্টেও লাগে। মোহনবাগান কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী অবশ্য কত গোলে টিম জিতল তা নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ। বলে দিলেন, ‘‘তিন পয়েন্ট পেতে চেয়েছিলাম, সেটা পেয়েছি। অ্যারোজ হারলেও খুব ভাল খেলেছে। এ বার আমাদের পরের লক্ষ্য, চার্চিল ব্রাদার্স ম্যাচ জেতা।’’
এই জয়ের ফলে শেষ চারে থেকে সুপার কাপে খেলা প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেল কিংগসলে ওবুমেনেমেদের। আরও যেটা চমকে দেওয়ার তা হল, বাইরের মাঠে পরপর চারটি ম্যাচ জিতল মোহনবাগান। মোহনবাগানের দ্বিতীয় গোলটি করেন আক্রম মোগরাভি। বিরতির চার মিনিট আগে পরিবর্ত গুরজিন্দার সিংহ তাঁকে বল বাড়ান অ্যারোজ বক্সে। আজহারউদ্দিন মল্লিক সেটা ধরতে গিয়ে ফস্কান। মোগরাভিও বলের দিকে দৌড়োচ্ছিলেন। তিনিই গোলে বল ঠেলে দেন। জিতেন্দ্র সিংহ বা আনোয়ার আলিরা অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ থেকে একসঙ্গে খেলছেন। তাঁরা এ দিন আক্রম বা ডিকাদের সামনে সে ভাবে প্রতিরোধও গড়ে তুলতে পারেননি। মোহনবাগান গোলকিপার শিল্টন পালকেও সেভাবে বিব্রত করতে পারেননি ননগেম্বা নৌরেম, রহিম আলিরা। ইন্ডিয়ান অ্যারোজের কোচ মাতোস অবশ্য ছেলেদের খেলায় খুশি। বলে দিয়েছেন, ‘‘পেশাদার দলের বিরুদ্ধে ছেলেরা যথেষ্ট ভাল খেলেছে।’’
মোহনবাগান: শিল্টন পাল, অরিজিৎ বাগুই, রানা ঘরামি, কিংগসলে ওবুমেনেমে, রিকি লালমাইয়া (গুরজিন্দর কুমার), নিখিল কদম, ইউতা কিনওয়াকি, ক্যামেরণ ওয়াটসন, আজহারউদ্দিন মল্লিক, দিপান্দা ডিকা, আক্রম মোগরাভি (শেখ ফৈয়াজ)।