পাঁচ মিনিটেই গোল করলেও ডাফির টিমের শেষরক্ষা অবশ্য হল না।
মোহনবাগান ১: ভ্যালেন্সিয়া ১
(ডাফি) (গডফ্রে)
মলদ্বীপে এএফসি কাপের ম্যাচ হচ্ছে। অথচ, স্টেডিয়ামে ভ্যালেন্সিয়ার পতাকা নেই। গ্যালারিতে উড়ছে সবুজ-মেরুন পতাকা।
এমনিতে এএফসি কাপে প্লে-অফ নিয়ে তেমন আগ্রহ ছিল না মলদ্বীপ লিগের দ্বিতীয় স্থানে থাকা ক্লাবের সমর্থকদের। তাই তাঁরা মঙ্গলবার বিকেলে দল বেঁধে স্টেডিয়ামে আসেননি। কিন্তু প্রবাসী বঙ্গসন্তান এবং ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীরা অনেকেই কলকাতার প্রিয় ক্লাবের পতাকা নিয়ে এসেছিলেন খেলা দেখতে।
সেটা ড্যারেল ডাফিদের বাড়তি উৎসাহ দিয়ে থাকবে হয়তো। শুরুর পাঁচ মিনিটের মধ্যেই এগিয়ে গেল মোহনবাগান। বিক্রমজিৎ সিংহ, প্রবীর দাশ হয়ে বল ডাফির কাছে যেতেই বুক দিয়ে নামিয়ে স্কটিশ স্ট্রাইকারের গোল। এর পর যে ঝড় তুলল শঙ্করলাল চক্রবর্তীর টিম, তা থেকে অন্তত চারটি গোল হতেই পারত। মোহনবাগান টিম হোটেল থেকে ফোনে আর্তনাদের মতো শোনাল সবুজ-মেরুনের সহকারি কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তীর গলা। ‘‘চারটে নিশ্চিত গোল নষ্ট করেছি আমরা। বলবন্তের দু’টো, কাতসুমি আর ডাফির একটা করে গোল তো হয়ই। জেতা ম্যাচ। কষ্ট করে খোঁজখবর করে যে সব দর্শক আমাদের টিমের পতাকা নিয়ে এসেছিল তাদের জন্য খারাপ লাগছে। তবে আমি অখুশি নই। সনি-সহ টিমের বেশ কয়েকজন ছাড়া বিদেশের মাটিতে এক পয়েন্ট পাওয়াটা গর্বের।’’ কলকাতা থেকে ফোনে কোচ সঞ্জয় সেনও না কি ল্যাপটপে ম্যাচ দেখার পর এ কথাই বলেছেন তাঁর সহকারীকে।
ডাফিরা চাপ রেখেও ম্যাচটা জিততে না পারার জন্য দায়ী তাদের রাইট ব্যাক শুভাশিস বসুর একটা বড় ভুল। নিরীহ একটা বল হেডে ব্যাকপাস করতে গিয়ে হাতে লাগিয়ে ফেলেন প্রতিশ্রুতিমান এই ডিফেন্ডার। ফলে ম্যাচটা ১-১ হয়ে যায় দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি। পেনাল্টি থেকে ভ্যালেন্সিয়ার গোলটি করেন তাদের বিদেশি স্ট্রাইকার গডফ্রে ওয়েস্ট ওমোডু। ব্যক্তিগত কাজে আটকে যাওয়ায় মলদ্বীপে যাননি কোচ সঞ্জয়। দল নিয়ে যান তাঁর সহকারী শঙ্কর। সুযোগ পেয়েই চমকপ্রদ দু’টো সিদ্ধান্ত নেন তিনি। লেফ্ট ব্যাক হিসাবে পরিচিতি পেয়ে যাওয়া শুভাশিস-কে নামান ডান দিকে। আর আই লিগে প্রায় সুযোগ না পাওয়া বিক্রমজিৎ-কে নামিয়ে দেন ডিফেন্সিভ ব্লকার হিসাবে। বিক্রম-ই মাঝমাঠে শেষ করে দেন ভ্যালেন্সিয়ার বিক্রম। ফোন করে জানা গেল, ম্যাচের সেরা তিনিই। তবে শঙ্করলাল স্বীকার করেন, ‘‘১-১ হওয়ার পর ওরা একটু চাপে ফেলে দিয়েছিল আমাদের। শিল্টন বেশ কয়েকটা বল বাঁচিয়েছে ওই সময়।’’
দেবজিৎ মজুমদার, জেজে-সহ ছয় ফুটবলার যাননি মলদ্বীপে। এই অবস্থায় ৪-৪-২ ফর্মেশনে আক্রমণাত্মক ফুটবলই খেলেছে মোহনবাগান। তা সত্ত্বেও গতবারের মতো জয় অধরা থেকে যায় মুহূর্তের ভুলে। গত মরসুমে এই টুর্নামেন্টেই মলদ্বীপে এসে পিছিয়ে পড়েও মেজিয়া এফসি-র সঙ্গে ড্র করেছিল সঞ্জয় সেনের টিম। তবে এ দিন ম্যাচ ড্র হওয়ায় সুবিধা হল ডাফিদেরই। এএফসি কাপে ফিরতি ম্যাচ ২৮ ফেব্রুয়ারি রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামে। ওই ম্যাচ গোলশূন্য হলেই মোহনবাগান চলে যাবে পরের রাউন্ডে অর্থাৎ গ্রুপ লিগে।
মোহনবাগান: শিল্টন, শুভাশিস আনাস, এডুয়ার্ডো, সৌভিক ঘোষ, প্রবীর, কাতসুমি, বিক্রমজিৎ, রেইনার (পঙ্কজ), ডাফি (শেহনাজ) এবং বলবম্ত।