লাজং-কাঁটা উপড়ে সেমিফাইনালে সনিরা

সনি নর্দে, কাতসুমি ইউসা ও ড্যারেল ডাফি— মোহনবাগানের ত্রিফলায় বিদ্ধ লাজং এফসি। আই লিগে লাজংয়ের বিরুদ্ধে ড্র-কে খেতাবের দৌড় থেকে ছিটকে যাওয়ার বদলা নিতেই যেন নেমেছিলেন সনি-রা।

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৭ ০৪:৩৯
Share:

লাজং ২ : মোহনবাগান ৩

Advertisement

সনি নর্দে, কাতসুমি ইউসা ও ড্যারেল ডাফি— মোহনবাগানের ত্রিফলায় বিদ্ধ লাজং এফসি।

আই লিগে লাজংয়ের বিরুদ্ধে ড্র-কে খেতাবের দৌড় থেকে ছিটকে যাওয়ার বদলা নিতেই যেন নেমেছিলেন সনি-রা। ম্যাচের শুরুতেই প্রীতম কোটালের আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়াতে মোহনবাগানের সময় লেগেছিল মাত্র তিন মিনিট। ঠান্ডা মাথায় গোল করে সমতা ফেরান ডাফি। ২৭ মিনিটে গোল করেন সনি। প্রথম ম্যাচে গোল পাননি হাইতি তারকা। বুধবার সেই আক্ষেপ সনি মেটালেন প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে ফ্রি-কিকে বিশ্বমানের গোল করে।

Advertisement

গোলের পরে সনির উৎসবের ভঙ্গি এডেন অ্যাজারের মতো। দু’হাত মুঠো করে শূন্য লাফিয়ে। হাইতি তারকা হোটেলে ফেরার আগে বলে গেলেন, ‘‘অ্যাজার আমার আদর্শ। ওর খেলা নকল করার চেষ্টা করি।’’

দর্শকশূন্য বারবাটি স্টেডিয়ামে বুধবার সন্ধ্যায় সনি-ই ছিলেন মোহনবাগান আক্রমণের প্রধান অস্ত্র। বাঁ দিকে সনি। ডান দিকে কাতসুমি। মাঝখানে বলবন্ত সিংহ ও ডাফি। সবুজ-মেরুন চতুর্ভূজের চাপে রীতিমতো নাজেহাল হলেন লাজং ডিফেন্ডাররা। সবচেয়ে সমস্যায় পড়লেন সনি-কাতসুমি বারবার নিজেদের মধ্যে জায়গা পরিবর্তন করায়।

আতঙ্ক দূরে সরিয়ে লাজং বধের ফর্মুলাটা কী? সনি-র বিশ্লেষণ, ‘‘আই লিগে লাজংয়ের বিরুদ্ধে আমরা সমস্যায় পড়েছিলাম। এ দিন কিন্তু কোনও ভুল করেনি। জানতাম, ওরা প্রচণ্ড গতিতে খেলে। তা-ই বলের দখল নিজেদের কাছে রেখে ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ম্যাচটা বার করে এনেছি।’’

আরও পড়ুন: জন্মদিনে ইস্টবেঙ্গলের ত্রাতা রবিন

কাতসুমি-র গোলের নেপথ্যেও সনি। ৪৩ মিনিটে বাঁ দিক থেকে প্রচণ্ড গতিতে বল নিয়ে উঠে পাস দিয়েছিলেন কাতসুমিকে। হাফ টাইমের আগেই ৩-১ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল মোহনবাগান।

লাজং-আতঙ্ক অবশ্য আশ্চর্যজনক ভাবে ফিরে এসেছিল শেষ দশ মিনিটে! ইউতা কিনোয়াকির শট সৌভিক চক্রবর্তীর পায়ে লেগে দিক পরিবর্তন করে গোলে ঢুকতেই চাপে পড়ে যান মোহনবাগানের ফুটবলাররা। একের পর এক ভুল করতে শুরু করেন ডিফেন্ডাররা। এক বার ফাবিও পেনা-র হেড লাগল ক্রস বারে। দেবজিৎ মজুমদার বেশ কয়েকটা নিশ্চিত গোল না বাঁচালে মহানদীর তীরে লাজংয়ের বিরুদ্ধে বদলা নেওয়ার স্বপ্ন অধরাই থাকত শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবের।

ম্যাচের পরে সাংবাদিক বৈঠকে মোহনবাগান কোচ বললেন, ‘‘আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল সেমিফাইনালের ছাড়পত্র আদায় করা। সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে।’’ মোহনবাগান কোচের দাবি অবশ্য সঠিক নয়। কারণ— এ দিন ডিএসকে শিবাজিয়ান্স এফসি ২-০ গোলে বেঙ্গালুরু এফসি-কে হারানোয় ‘বি’ গ্রুপের অঙ্কটাই বদলে গিয়েছে। ২ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে মোহনবাগান। শেষ ম্যাচে যদি বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে মোহনবাগান হেরে যায়। অন্য দিকে শিবাজিয়ান্স হারিয়ে দেয় লাজং-কে। তখন তিন দলেরই পয়েন্ট হবে ৬। সেক্ষেত্রে দেখা হবে গোল পার্থক্য। তাতে অবশ্য এগিয়ে সনি-রা। কিন্তু শেষ ম্যাচে সুনীল ছেত্রীর বেঙ্গালুরু এবং সুব্রত পালের শিবাজিয়ান্স যদি পাঁচ গোলে জেতে, তখন ছিটকে যাবে মোহনবাগান। ফেডারেশন কাপে সনি-রা যে রকম ফর্মে আছেন, তাতে সেই সম্ভাবনা কেউ দেখছেন না।

মোহনবাগান: দেবজিৎ মজুমদার, প্রীতম কোটাল, আনাস এডাথোডিকা, এদুয়ার্দো ফেরিরা, শুভাশিস বসু (প্রবীর দাস), কাতসুমি ইউসা, সৌভিক চক্রবর্তী, শেহনাজ সিংহ, সনি নর্দে, বলবন্ত সিংহ (বিক্রমজিৎ সিংহ) ও ড্যারেল ডাফি (জেজে লালপেখলুয়া)।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement