দুরন্ত: বলবন্তের জোড়া গোলে জয় মোহনবাগানের। ফাইল চিত্র
মোহনবাগান ৪ : শিবাজিয়ান্স ০
বিকেলের পর থেকেই মহানদীর দিক থেকে বয়ে আসা হাওয়ার ধাক্কায় কটকের তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি নেমে যায়। সোমবার সন্ধ্যায় যেন ঝড় উঠল বরাবাটি স্টেডিয়ামে। সবুজ-মেরুন ঝড়! যার ধাক্কায় উড়ে গেল ডিএসকে শিবাজিয়ান্স এফসি!
ম্যাচের আগে মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেনের প্রধান চিন্তাই ছিল শিবাজিয়ান্স ফুটবলারদের গতি ও বারবার ফর্মেশন বদলে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলার স্ট্র্যাটেজি। এ দিন কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার মতোই শিবাজিয়ান্স-বধ করলেন তিনি।
ডানদিকে কাতসুমি ইউসা। বাঁ দিকে সনি নর্দে— ম্যাচের শুরু থেকেই দুই প্রান্ত থেকে যে ভাবে ঝড়ের গতিতে আক্রমণে উঠছিলেন তাঁরা, মনে হচ্ছিল যেন ফর্মুলা ওয়ানের গাড়ি চালাচ্ছিলেন!
সনির সেন্টারেই শরীর শূন্যে ভাসিয়ে ২৪ মিনিটে প্রথম গোল করেন বলবন্ত সিংহ। ৬৮ মিনিটে ড্যারেল ডাফির গোলও এল হাইতি তারকার কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে। বলবন্ত দ্বিতীয় গোল করেন ৭১ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের দুরন্ত শটে।
আইজল এফসি-র বিরুদ্ধে হেরে আই লিগ খেতাব হাতছাড়া হওয়ার জন্য কাঠগড়ায় তোলা হয়েছিল কুঁচকির চোট নিয়ে খেলা ডাফি-কে। ফেডারেশন কাপের প্রথম ম্যাচেকেই স্কটিশ তারকা যেন বেছে নিয়েছিলেন জবাব দেওয়ার জন্য।
আরও পড়ুন: নারাইন উদয়ে হাত ম্যাকালামের
মোহনবাগান কোচ অবশ্য ডাফি-কে পুরো ম্যাচ মাঠে রাখার ঝুঁকি নেননি। প্রচণ্ড গরম ও আর্দ্রতায় ফের যদি চোট পান ডাফি, তা হলে আই লিগের মতো ফেডারেশন কাপও হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। ৭৩ মিনিটে ডাফি-র পরিবর্তে নামেন জেজে লালপেখলুয়া।
ডাফির মতো জেজে-র কাছেও তো ছিল প্রত্যাবর্তনের ম্যাচ। আইজলের বিরুদ্ধে হারের জন্য তাঁকেও দায়ী করা হয়েছিল। ও-ই ম্যাচের পরেই প্রথম দল থেকে ছিটকে যান তিনি। এ দিনও ছিলেন রিজার্ভ বেঞ্চে। ৯২ মিনিটে অসাধারণ গোল করে জেজে বোঝালেন, এই মুহূর্তে ভারতীয় ফুটবলের সফলতম স্ট্রাইকার কেন তাঁকে বলা হয়।
ম্যাচের পরে সঞ্জয় বলছিলেন, ‘‘প্রথম ম্যাচ সব সময় গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যেভাবে শুরু করতে চেয়েছিলাম, সেভাবেই করেছি। আমি বেশি চিন্তিত টানা ম্যাচ খেলতে হচ্ছে বলে।’’ আর ম্যাচের সেরা বলবন্ত বললেন, ‘‘সনি, ডাফি ও কাতসুমি পাশে থাকলে আমার কাজ অনেক সহজ হয়ে যায়।’’
সনি অবশ্য আশ্চর্য রকম উচ্ছ্বাসহীন। বললেন, ‘‘লাজংয়ের বিরুদ্ধে পরের ম্যাচটা না জিতলে চার গোল মূল্যহীন হয়ে পড়বে।’’
ফেডারেশন কাপের প্রথম ম্যাচেই ইস্টবেঙ্গল হোঁচট খেয়েছে। মোহনবাগান অভিযান শুরু করল চ্যাম্পিয়নদের মতোই।
মোহনবাগান: শিল্টন পাল, প্রীতম কোটাল, আনাস এডাথোডিকা (বিক্রমজিৎ সিংহ), এদুয়ার্দো ফেরিরা, শুভাশিস বসু, কাতসুমি ইউসা, শেহনাজ সিংহ, সৌভিক চক্রবর্তী, সনি নর্দে, বলবন্ত সিংহ (কেন লুইস) ও ড্যারেল ডাফি (জেজে লালপেখলুয়া)।