বানভাসি বারাসত। রেফারির মাঠ-পরীক্ষা। সোমবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
কৃত্রিম ঘাসের মাঠ তা সত্ত্বেও মাঠের বিভিন্ন জায়গা ফুলে উঠেছে আলুর মতো।
মাঠে জমে গিয়েছে জল! বলই গড়াচ্ছে না! রেফারি জলের উপর বলে কিক মারছেন, সেটা আটকে যাচ্ছে বারবার।
সবাইকে কিছুটা অবাক করেই সোমবার অ্যাস্ট্রোটার্ফের মাঠেও ভেস্তে গেল কলকাতা লিগের মোহনবাগান বনাম এরিয়ানের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। বারাসত স্টেডিয়ামে।
এর আগে কোনও কৃত্রিম ঘাসের মাঠে বৃষ্টির জন্য জল জমে ম্যাচ ভেস্তে গিয়েছে, এমনটা মনে করতে পারছেন না বাগান কোচ সঞ্জয় সেন বা অন্য ফুটবলাররা।
ম্যাচ তখন মিনিট কুড়ি গড়িয়েছে। খেলার ফল গোলশূন্য। মুষলধারে বৃষ্টিতে বল দেখা যাচ্ছে না। রেফারি রঞ্জিত বক্সী ম্যাচ বন্ধ করে দেন। পরে বৃষ্টির দাপট কমলেও মাঠের অবস্থা বেহাল হয়ে পড়ে। নিয়ম মেনে আধঘণ্টা অপেক্ষা করার পর রেফারি ম্যাচটি বাতিল ঘোষণা করেন। রঞ্জিতবাবু পরিষ্কার বলে দেন, ‘‘জল জমে থাকায় বল গড়াচ্ছে না। তা ছাড়া মাঠে জায়গায় জায়গায় যে রকম লুচির মতো ফুলে রয়েছে তাতে ম্যাচ খেলানো সম্ভব নয়। ফুটবলারদের চোট হয়ে যেতে পারে। নিয়ম মেনে আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরই ম্যাচ বাতিল করেছি।’’ লিগের আরও একটি ম্যাচ বাতিল হয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ‘‘শুনলাম তো মিনিট পনেরো পর সব ঠিক হয়ে গিয়েছিল। মাঠ শুকনো হয়ে গিয়েছিল। রেফারি আরও কিছুক্ষণ সময় অপেক্ষা করলে ম্যাচটা হতে পারত। এর আগে মহমেডান ম্যাচের দিন আরও বেশি সময় অপেক্ষা করেছিলেন রেফারি।’’ অথচ বাস্তব পরিস্থিতি হল, ম্যাচ বাতিল হওয়ার আধঘণ্টা পরও কিন্তু মাঠে জল জমে ছিল। ঢিপির মতো ফুলে ছিল মাঠ।
রেফারির সঙ্গে আইএফএ সচিবের মত মিলছে না। তা নিয়ে অবশ্য কারও মাথাব্যথা নেই। প্রশ্নটা উঠছে অন্য জায়গায়। তা হল, আইএফএ-র তত্ত্বাবধানে থাকা বারাসত স্টেডিয়ামের পরিচর্যা ঠিক মতো হয় তো? না হলে, যুবভারতীতে যা কখনও হয়নি তা বারাসতে হল কী ভাবে? বিরক্ত সঞ্জয় সেনকে বলতে শোনা গেল, ‘‘এ রকম ভাবে মাঠের জায়গায় জায়গায় ফুলে উঠেছে কোথাও কখনও দেখিনি। এ দিনের ম্যাচ না হওয়ায় আমাদের ক্ষতি হল। ডার্বির আগে গুস্তাভো আর আভেস্কাকে দেখে নেব ভেবেছিলাম, সেটা আর হল না।’’ শুধু মাঠই নয়, পুরো স্টেডিয়ামেরই অত্যন্ত খারাপ দশা। গ্যালারিতে নোংরা পড়ে রয়েছে। চতুর্দিকে আবর্জনার স্তূপ। মাথার উপর ত্রিপল টাঙিয়ে কোনও মতে তৈরি হয়েছে মিডিয়া বক্স। বৃষ্টিতে সেখানে জল ঢুকছে। ভিজতে হচ্ছে সাংবাদিকদেরও। তার উপর আবার গ্যালারিতে বসা দর্শক এবং পুলিশ বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ছে প্রেসবক্সে। কেন যে এমন মাঠে লিগের খেলা দেয় আইএফএ কে জানে? কলকাতা লিগ কোনওক্রমে শেষ করলেই যে ওঁরা বেঁচে যান।