বাগানে এ বার তেরো বছর আগের কালো দাগ

তেরো বছর পরে ভারতসেরার ট্রফি ঢুকেছিল বাগানে। মাস কয়েকের ব্যবাধানেই উলটপুরাণ! এ বার তেরো বছর আগের কালো স্মৃতি ফিরে এল বাগানে। কলকাতা লিগ খেতাব আগেই হাতছাড়া হয়েছিল। সোমবার কলকাতা লিগে রানার্সের শিরোপাও জুটল না সবুজ-মেরুনের। লিগের প্রথম ম্যাচের সঙ্গে তাল রেখে শেষ ম্যাচেও এরিয়ানের বিরুদ্ধে জঘন্য ফুটবল এবং লজ্জাজনক ড্র করল সঞ্জয় সেনের দল।

Advertisement

সোহম দে

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:১০
Share:

হতাশা। ম্যাচের পরে বাগান কোচ সঞ্জয় সেন। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

মোহনবাগান-০ : এরিয়ান-০

Advertisement

তেরো বছর পরে ভারতসেরার ট্রফি ঢুকেছিল বাগানে। মাস কয়েকের ব্যবাধানেই উলটপুরাণ! এ বার তেরো বছর আগের কালো স্মৃতি ফিরে এল বাগানে।
কলকাতা লিগ খেতাব আগেই হাতছাড়া হয়েছিল। সোমবার কলকাতা লিগে রানার্সের শিরোপাও জুটল না সবুজ-মেরুনের।
লিগের প্রথম ম্যাচের সঙ্গে তাল রেখে শেষ ম্যাচেও এরিয়ানের বিরুদ্ধে জঘন্য ফুটবল এবং লজ্জাজনক ড্র করল সঞ্জয় সেনের দল।
ম্যাচ শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে বাগান কোচ রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বলে দিলেন, ‘‘আমি কোচ থাকলে এই টিমের ষাট শতাংশ ফুটবলারকে আই লিগের আগে বাদ দেব। জঘন্য। একটা বিদেশিও ভাল খেলতে পারেনি।’’
কলকাতা লিগ ছিল পরের আই লিগের জন্য ভারতসেরা বাগানের পরীক্ষাগার। যেখানে তরুণ ফুটবলারদের খেলিয়ে দেখে নিতে চেয়েছিলেন কোচ। ভেবেছিলেন, নিজেদের তাগিদেই বড় মঞ্চ পেয়ে ভাল ফুটবল বেরিয়ে আসবে কেন লুইস-সুমন হাজরাদের পা থেকে। কিন্তু লিগ শেষ করার পর বাগান কোচের চোখে কেউই বেশি মার্কস পাচ্ছেন না। ‘‘ভেবেছিলাম কয়েকটা কমবয়সি ছেলে হয়তো নজর কাড়বে। ভুল ভেবেছিলাম। রিজার্ভ বেঞ্চও খারাপ ছিল। সাইডব্যাক দু’জনের হাল দেখেছেন?,’’ অবনমনের আওতায় থাকা দলের বিরুদ্ধেও নিজের টিমের পারফরম্যান্স দেখার পর বলছিলেন ক্ষিপ্ত বাগান কোচ।
সঞ্জয়ের তোপ শুধু স্বদেশি ফুটবলারদের উপরই সীমাবদ্ধ ছিল না। ডুডু, জুদেলিন, গুস্তাভো, কাতসুমি— চার বিদেশিকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন তিনি। শোনা যাচ্ছে, আই লিগের জন্য কাতসুমির সই হয়ে গিয়েছে বলে তিনি বেঁচে গিয়েছেন। বাকিদের ভবিষ্যত্ নিয়ে সপ্তাহান্তে কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন সঞ্জয়। ‘‘বিদেশিদের পারফরম্যান্সে আমি একেবারেই খুশি নই। কাতসুমিও এমন কিছু করতে পারেনি যার জন্য খুশি হওয়া যায়। সবাইকে নিয়েই আলোচনা করব কর্তাদের সঙ্গে,’’ থামতেই চাইছিলেন না ডুডু-গুস্তাভোদের কোচ।
সঞ্জয়ের ক্ষোভের কারণ স্বাভাবিক। এরিয়ানের বিরুদ্ধে ডুডু-কাতসুমির মতো তারকারা নেমেও কিছু করতে পারেননি। বিরতির পর একটার পর একটা সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট। ডুডুর অধিকাংশ হেড গোলের বাইরে। রাম মালিক, আজহারউদ্দিনের মতো জুনিয়ররাও লক্ষচ্যুত। মাঝমাঠ আর ফরোয়ার্ডদের মধ্যে কোনও যোগসূত্র নেই। এরিয়ান ডিফেন্সে কোনও চাপই তৈরি হল না। ছোট্টু, শুভঙ্কররা অনায়াসে খেলে গেলেন।
ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে অসাধারণ খেলার পর এরিয়ান কিপার প্রিয়ন্ত সিংহ এ দিনও দুর্দান্ত। ম্যাচের সেরাও তিনিই। বলা যায় তাঁর হাতেই আটকাল পালতোলা নৌকো। যদিও সেরা হওয়ার ব্যাপারে তাঁকে টক্কর দিতে পারতেন এরিয়ানে এ দিনই অভিষেক ঘটানো স্টপার অঙ্কিত মুখোপাধ্যায়। পঙ্কজ মৌলার শট তিনি গোললাইন থেকে ফেরালেন।

এক পয়েন্ট পেয়ে অবনমন বাঁচানো প্রায় নিশ্চিত রাজদীপ নন্দীর এরিয়ানের। টালিগঞ্জের কাছে বুধবার ছয় গোল হজম না করলে পরের বছরও প্রিমিয়ার ‘এ’ এরিয়ান। বরং রাজদীপের কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ— সুভাষ ভৌমিকের টালিগঞ্জকে এরিয়ান যদি হারাতে পারে নন্দী-বাড়িতে ফিরবে শান্তি। কারণ সেক্ষেত্রে অবনমন থেকে বেঁচে যাবে রাজদীপের বাবা রঘু নন্দীর পুলিশ।

Advertisement

মোহনবাগান: অর্ণব, সুমন, সঞ্জয়, সফর, সুখেন, লালকমল, আসিফ (কেন), কাতসুমি, রাম, আজহারউদ্দিন (পঙ্কজ), ডুডু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন