ঝন্ডা উঁচা রহে হমারা। ছবি: পিটিআই
দু’বছর আগে অলিম্পিকে জুটি বাঁধা-না বাঁধা নিয়ে যাঁদের মধ্যে হাতাহাতি হওয়াটুকু বাকি ছিল, একটা উত্তেজক জয়েই সেই দু’জন ভারতীয় টেনিস তারকা পরের অলিম্পিকে জুটি বাঁধার অঙ্গীকারই প্রায় করে বসলেন!
লিয়েন্ডার পেজ-রোহন বোপান্না!
শনিবারের ডাবলস জয়কে শেষ পঁচিশ বছরে ডেভিস কাপে তাঁর দেখা ভারতের সেরা ডাবলস জয় বলছেন নন প্লেয়িং ক্যাপ্টেন আনন্দ অমৃতরাজ। আর তাঁর দু’পাশে বসে লিয়েন্ডার, বোপান্না এক সুরে বললেন, “আমাদের মধ্যে দুর্দান্ত বোঝাপড়া না থাকলে এ রকম একটা জয় আজ আসত না। এই অসাধারণ জয় ভবিষ্যতে পেশাদার ট্যুরে আরও অনেক টুর্নামেন্টে আমাদের একসঙ্গে ডাবলস খেলার ইচ্ছে জাগাচ্ছে। রিও অলিম্পিকেও আমরা জুটি বাঁধার কথা সিরিয়াসলি ভাবছি।”
কিন্তু আজকের ০-২ থেকে ৩-২ সম্ভব হল কী ভাবে? কোনটা টার্নিং পয়েন্ট? তৃতীয় সেট থেকে গেমপ্ল্যান, স্ট্র্যাটেজি কী ছিল?
লিয়েন্ডার বললেন, “তৃতীয় সেটে যখন নেনাদের শুশ্রূষা হচ্ছিল, সেই তিন মিনিটটাই টার্নিং পয়েন্ট। ওই ফাঁকেই আমাদের ‘প্ল্যান বি’ তৈরি হয়। আনন্দ বলে, খেলাটা স্লো করো। র্যালি লম্বা করো। ওরা আনফোসর্ড এরর করবেই। আনন্দ খেলোয়াড় জীবনে অসাধারণ ডাবলস প্লেয়ার ছিল। ওর আজ নন প্লেয়িং ক্যাপ্টেনের চেয়ারে থাকাটা আর একটা টার্নিং পয়েন্ট।”
স্ট্র্যাটেজিটাও ফাঁস করলেন লিয়েন্ডারই। বললেন, “ইউএস ওপেনে বোজোলিয়াককে জকোভিচের সঙ্গে ডাবলস প্র্যাকটিস করতে দেখেছিলাম। আমিও পরপর চার দিন ওই সময় পাশের কোর্ট ভাড়া নিয়েছিলাম প্র্যাকটিসের জন্য। যাতে ওর দিকে নজর রাখতে পারি। বোজো খুব ভাল ব্যাকহ্যান্ড প্লেয়ার। আজও কোর্টের দু’দিকেই ব্যাকহ্যান্ড মারছিল। খেলায় এই সব ছোটখাটো গোয়েন্দাগিরিগুলো খুব কাজ দেয়। আমরা আগেই ওর ব্যাকহ্যান্ডের ওষুধ বার করে ফেলেছিলাম। লক্ষ্য করে দেখবেন, শেষ তিন সেটে ওর প্রায় প্রতিটা ব্যাকহ্যান্ড রিটার্ন করেছি।”
কিন্তু একচল্লিশেও পাঁচ সেট খেলার স্ট্যামিনা কোথা থেকে পান? “জানতাম, এই প্রশ্নটা আসবেই। আনন্দও শেষ সেটে কোর্ট বদলের সময় দু-একবার জিজ্ঞেস করে, ‘তোমার শরীর ভাল আছে তো?’ তবে আমরা হারলে এই সব প্রশ্ন এত মধুর ভাবে করা হত না বোধহয়।”
এশিয়াড নিয়ে কী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলেন, জানতে চাওয়ায় লিয়েন্ডার বলে দিলেন, “যাচ্ছি না। ওই সপ্তাহে কুয়ালা লামপুরের টুর্নামেন্টে ডাবলস খেলার জন্য চুক্তি করে ফেলেছি। পার্টনারের সঙ্গেও চুক্তি হয়ে গিয়েছে। এখন আমি কুয়ালা লামপুর না গেলেও এটিপি-র নিয়ম অনুযায়ী ওই সপ্তাহে অন্য কোথাও খেলতে পারব না।” লিয়েন্ডার এশিয়াডে না যাওয়ায় শোনা যাচ্ছে দলের চিকিৎসক হিসেবে তাঁর বাবা ভেস পেজও বাদ পড়েছেন।