হলিউড নায়ক নয়, ফুটবলের রাজপুত্র। ইবিজার সমুদ্রে বান্ধবী আন্তোনেলার সঙ্গে ছুটি কাটানোর ফাঁকে মেসি
বিলাসবহুল ইয়টে বান্ধবী আর দুই ছেলেকে নিয়ে হাল্কা মেজাজে তিনি। ইবিজার সমুদ্রে কখনও ছেলেকে জেট স্কিতে চাপিয়ে ছোট্ট অ্যাডভেঞ্চারে বেরিয়ে পড়ছেন। নীল সমুদ্রের অপরূপ ক্যানভাস পিছনে রেখে ভেসে বেড়াচ্ছেন কখনও বান্ধবীর শরীরে গা এলিয়ে। পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাচ্ছেন লিওনেল মেসি।
আর্জেন্তিনার মহাতারকার ছুটির সুখসমুদ্রে ভেসে বেড়ানোর যে ছবি দেখে কে বলবে এখনও তাঁর উত্তরের অপেক্ষায় আকুল ভক্তকূল। এখনও প্রশ্নটার উত্তর পাওয়া যায়নি যে। তিনি কি অবসর ভেঙে ফের আর্জেন্তিনার জার্সিতে ফিরবেন?
ফুটবলের রাজপুত্রের মেজাজ দেখে কিছুই বোঝার উপায় নেই। দাঁড়ি-গোফের আড়ালে কোপা ফাইনালে হারের পর থেকে ক্রমশ বিলুপ্ত হতে থাকা হাসিটা মাঝে মাঝে ফিরে আসছে। কিন্তু তাতেও নিশ্চিন্ত হতে পারছেন কোথায় মেসিভক্তরা! সদ্য তাঁর জাতীয় দলের জার্সি তুলে রাখা নিয়ে এখনও টেনশনের চোরাস্রোত প্রবল ভাবে বইছে আর্জেন্তিনায়। মারাদোনা, দেশের প্রেসিডেন্ট আগেই অনুরোধ করেছেন মেসিকে সিদ্ধান্ত ফের ভেবে দেখার। এ বার সেই তালিকায় চলে এলেন প্রাক্তন জাতীয় কোচ সিজার মেনোত্তিও।
১৯৭৮ বিশ্বকাপজয়ী কোচ বলেছেন, ‘‘মেসি যা বলেছে তার পর এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করা কঠিন। তবে এটুকু বলতে পারি কখনও কখনও এমন সময়ও আসে যে জাতীয় দলের জার্সিতে খেলার মোটিভেশন হারিয়ে যায়। কেন সেটা বলতে পারব না। তার হাজার খানেক কারণ থাকতে পারে।’’ সঙ্গে তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘‘আমার বিশ্বাস মেসিকে অনেক কিছু সহ্য করতে হয়েছে। তার উপর কোপা আমেরিকা ট্রফিটাও জিততে পারেনি। তবে যাই হোক না কেন আমি মনে করি মেসি ওর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে।’’
কখনও জেট স্কিতে চেপে।ছবি: টুইটার
অনেকেই মনে করেন দু’বছর আগে জুলিও গ্রন্দোনা মারা যাওয়ার পর থেকে ক্রমশ তলিয়ে যেতে যেতে আর্জেন্তিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের অবস্থা এখন শোচনীয়। মেসিও কোপা ফাইনালে নামার আগে বিমান ছাড়তে দেরি হওয়া নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলোধোনা করেছিলেন এএফএ-কে। বলেছিলেন, ‘এএফএ-র দুর্দশা আর বলার নয়।’ জাতীয় দল থেকে তাঁর সরে যাওয়ার বিস্ফোরণের পর তো অবস্থা আরও করুণ হয়ে উঠেছে। মাসখানেকের মধ্যেই রিও অলিম্পিক্সের চ্যালেঞ্জ থাকলেও জাতীয় কোচের পদে জেরার্ডো মার্টিনোর ইস্তফাও নাকি সেই কারণেই।
অবস্থা কতটা খারাপ সেটা মেনোত্তির ইঙ্গিতেই পরিষ্কার, ‘‘আমি তুলনা করতে চাই না। তবে যুক্তরাষ্ট্রে আল কাপোনে (মার্কিন মাফিয়া) জেলে যাওয়ার পর মাফিয়াদের সংকট চরমে পৌঁছে গিয়েছিল। সবাই কাপোনের জায়গা নিতে চাইলেও কেউই সেটা পারছিল না।’’ পাশাপাশি মেনোত্তি অবশ্য মনে করেন আর্জেন্তিনা ফুটবলের পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে উঠেছে কোপার ফাইনালে হারের কারণে। এ রকম অবস্থা যে আগে কখনও হয়নি তা নয়। ‘‘তবে আগে রেজাল্ট দিয়ে সব শান্ত করা যেত। মারাদোনার মতো বিরাট মাপের চরিত্রের থাকাটাও অনেকটা সাহায্য করত। সে সব দেখার পর তাই বলছি আর্জেন্তিনার এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসাটা আরও সহজ হত কোপা জিততে পারলে,’’
বলেছেন মেনোত্তি।