চিত্রণ: বিমল দাস
ফুটবলার, রেফারিদের ভাগিয়ে ফুটবল মাঠের দখল নিয়েছে বাঁদর— এমন আজব ঘটনা এর আগে কলকাতা লিগ বা ময়দানে কখনও ঘটেছে?
অনেক ভেবে, মাথা চুলকেও প্রবীণ ফুটবল কর্তাদের কেউ এর উত্তর দিতে পারলেন না।
না দিতে পারার মতোই ঘটনা বটে! কারণ এর আগে বৃষ্টিতে, বানের জলে, ফুটবলারদের মধ্যে হাতাহাতিতে, রেফারির সঙ্গে ঝামেলায়, জাল ছেঁড়ায় বা লাইন না থাকার কারণে লিগের ম্যাচ বাতিল হওয়ার নজির আছে। কিন্তু বাঁদরের বাঁদরামিতে শেষ পর্যন্ত রণে ভঙ্গ দিতে হয়েছে রেফারি, ফুটবলারদের— এমন ঘটনা সত্যিই বিরল!
সোমবার যা ঘটল খড়দহে!
এর আগে এক বার কল্যাণীতে আই লিগের ম্যাচ চলাকালীন অনেকগুলি সাপ বেরিয়ে পড়েছিল মাঠে। একসঙ্গে অত সাপ দেখে ফুটবলার থেকে মাঠে উপস্থিত প্রত্যেকেই বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন প্রথমে। ছড়িয়েছিল আতঙ্ক। কিন্তু সে দিনও সাপের কারণে ম্যাচ বাতিল করতে হয়নি।
সোমবার খড়দহ স্টেডিয়ামে কলকাতা লিগের প্রিমিয়ার-‘বি’-র ম্যাচে ইউনাইটেড স্পোর্টস মুখোমুখি হয়েছিল রেলওয়ে এফসি-র। ম্যাচ শুরু হওয়ার ঠিক আগে হঠাৎ করেই অনাহুত অতিথির মতো মাঠে হাজির হয় গোটা চারেক বাঁদর। তারা মাঠে উপস্থিত, অথচ অন্যরা ফুটবল খেলবেন, এটা বোধহয় একেবারেই পছন্দ হয়নি চার মূর্তিমানের। তাই তারা প্রথমেই তাড়া করে লাইন্সম্যানকে। এর পর রেফারি, ফুটবলারদের। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আয়োজক, উদ্যোক্তা, আইএফএ-র কর্তা সবাই মিলে বাঁদর তাড়াতে মাঠে নামেন। কলা খাইয়ে তাদের শান্ত করে, কোনও মতে মাঠ থেকে বের করে দেওয়া হয়। কিন্তু খেলা শুরুর দেড় মিনিটের মধ্যেই আবার হাজির তারা। এ বার বাঁদর তাড়াতে গিয়ে রীতিমতো মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয় আয়োজকদের। আগুন জ্বেলে ভয় দেখিয়ে কোনও ক্রমে মাঠ থেকে বের করে, দ্বিতীয় বার ম্যাচ শুরু করা হয়।
বাঁদরের তাড়ায় ফুটবলারদের ওয়ার্ম আপ বোধহয় ভালই হয়েছিল। সম্ভবত তার জেরেই দশ মিনিটের মধ্যে দু’দলই গোল পেয়ে যায়।
খেলার ফল তখন ১-১ চলছে। ২৩ মিনিট সময় গড়িয়েছে। পুনরায় মাঠে হাজির হয় বাঁদরের দল। এ বার মাঠ ছেড়ে চলে যাওয়া তো দূরের কথা, ডিফেন্স করার কোনও লক্ষণই ছিল না তাদের। উল্টে বাঁদর-বাহিনীর দৌরাত্ম্যে গোটা মাঠ রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। শেষ পর্যন্ত হার মানতে বাধ্য হন ফুটবলার ও রেফারিরা। এ দিনের ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন রেফারি। ম্যাচটি হবে আজ মঙ্গলবার কল্যাণীতে। যেখানে আবার মাঝে মাঝেই সাপের উপদ্রব!