ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে শান্ত মনোরঞ্জন

তিরিশ বছর যুক্ত রয়েছেন লাল-হলুদের সঙ্গে। পনেরো বছর খেলেছেন। এত দিন ইস্টবেঙ্গল এবং মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য ছিল সমার্থক শব্দ। লাল-হলুদ জার্সি পরে জিতে আসার পর আদরের ‘মনা’-কে নিয়ে উচ্ছ্বাসের আগ্নেয়গিরিই শুধু দেখেছে ময়দান। অসংখ্য ট্রফি দিয়েছেন ফুটবলার হিসাবে। কোচ হিসাবে মশাল বাহিনীকে গর্বিত করেছেন আই লিগ জিতিয়ে। গত বারও তো কোচ খালিদ জামিলের পরামর্শদাতা হিসাবে তিনি ইস্টবেঙ্গলকে জেতানোর জন্য নেমে পড়েছিলেন মাঠে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৮ ০৪:২২
Share:

চ্যালেঞ্জ: আজ প্রিয় ক্লাবের বিরুদ্ধে প্রত্যয়ী মনোরঞ্জন। ফাইল চিত্র

ইস্টবেঙ্গলকে হারাতে নামছেন মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য। চার মাস আগেও তো এটা ছিল অবিশ্বাস্য ব্যাপার। আপনার কাছে তো এটা বেশ অস্বস্তিকরও?

Advertisement

প্রশ্ন শুনে হাসি খেলে যায় টালিগঞ্জ অগ্রগামীর কোচ মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যের মুখে। বলে দেন, ‘‘এটা হচ্ছে আবেগ সরিয়ে দায়বদ্ধতার লড়াই। সেটা পালন করতেই কাল রিজার্ভ বেঞ্চে বসব। হয়তো আমার টিম ভাল কিছু করলে গালাগালি খেতে হবে। তবে আমি নিশ্চিত প্রকৃত ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা তা করবেন না।’’

তিরিশ বছর যুক্ত রয়েছেন লাল-হলুদের সঙ্গে। পনেরো বছর খেলেছেন। এত দিন ইস্টবেঙ্গল এবং মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য ছিল সমার্থক শব্দ। লাল-হলুদ জার্সি পরে জিতে আসার পর আদরের ‘মনা’-কে নিয়ে উচ্ছ্বাসের আগ্নেয়গিরিই শুধু দেখেছে ময়দান। অসংখ্য ট্রফি দিয়েছেন ফুটবলার হিসাবে। কোচ হিসাবে মশাল বাহিনীকে গর্বিত করেছেন আই লিগ জিতিয়ে। গত বারও তো কোচ খালিদ জামিলের পরামর্শদাতা হিসাবে তিনি ইস্টবেঙ্গলকে জেতানোর জন্য নেমে পড়েছিলেন মাঠে।

Advertisement

আজ শুক্রবার কলকাতা লিগের উদ্বোধনী ম্যাচ অবশ্য দেখবে অন্য ছবি। জীবনে প্রথম বার মশাল নেভানোর জন্য রণনীতি তৈরি করবেন মনোরঞ্জন, টালিগঞ্জ অগ্রগামীর রিজার্ভ বেঞ্চে বসে। এ রকম পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার রাতে ঘুম হবে তো? ‘‘দেখুন আমি ছোটবেলা থেকেই ইস্টবেঙ্গল সমর্থক। দু’বছর ছাড়া পুরো খেলোয়াড় জীবনই ইস্টবেঙ্গলে খেলেছি। টালিগঞ্জের দায়িত্ব নেওয়ার সময়ই জানতাম এই দিনটা আসবে। এবং আমাকে ভাল কিছু করার কথা ভাবতে হবে। সেটাই করার চেষ্টা করব। আমি কোচিং করাতে চাই বলেই দায়িত্ব নিয়েছি। এই মুহূর্তে আমার আলাদা কোনও আবেগ নেই।’’

চুক্তির সময় টালিগঞ্জ কর্তারা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা রাখতে পারেননি। তিন বিদেশির মধ্যে মাত্র একজনকে পেয়েছেন শুরু থেকে। বাকি দু’জন এসেছেন সপ্তাহ খানেক আগে। রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামে অনুশীলন না করতে পেরে মধ্যমগ্রামে গিয়ে অনুশীলন করিয়েছেন অসীম বিশ্বাস, গৌতম কুজুর, অ্যান্টনি সোরেনদের। তাতে খেদ থাকলেও লড়াই থেকে সরে আসার কথা ভাবেননি একবারও। ‘‘ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে ফল কী হবে জানি না। ছেলেদের বলেছি লড়াই ছাড়া চলবে না। আমার জীবনটাই লড়াই করে বেঁচে থাকার। ছেলেদের মনেও সেটা আনার চেষ্টা করছি।’’

প্রিয় ক্লাবে সুভাষ ভৌমিকের জায়গা হলেও তাঁকে নেওয়া হয়নি টিডি হিসাবে। এটা কী মনোরঞ্জনকে আরও বেশি জেদি করে তুলেছে? মনোরঞ্জনের জবাব, ‘‘ক্লাব যাঁকে ভাল বুঝেছে দায়িত্ব দিয়েছে। আমিও একটা দলের দায়িত্ব নিয়ে তা পালনের চেষ্টা করছি।’’

বছর চারেক আগে এক বার পোর্ট ট্রাস্ট টিমের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তবে সে বার ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে রিজার্ভ বেঞ্চে বসতে হয়নি। গ্রুপ করে লিগ হওয়ায় মোহনবাগানের সঙ্গে খেলতে হয়েছিল। টালিগঞ্জ কোচ বলছিলেন, ‘‘আমার সুবিধা আমি এ বারের ইস্টবেঙ্গলের অনেককে চিনি। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর চেষ্টা করব। এটুকু বলছি, আমার ছেলেরা লড়াই করবে। হারার আগে হারবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন