ওভালে বেশি চাপে থাকবে কিন্তু ভারতই

পাকিস্তান এমন একটা দলের বিরুদ্ধে খেলতে নামছে, যাদের শুরু থেকেই বিপক্ষের টুঁটি চেপে ধরার ক্ষমতা রয়েছে। শ্রীলঙ্কা ম্যাচটা ভারতের একটা খারাপ দিন ছাড়া আর কিছু ছিল না। বাকিটা পুরোটাই বিরাটদের রাজত্ব, ওদেরই দাপট।

Advertisement

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৭ ০৪:৩০
Share:

কলকাতায় দুই দেশের দুই ভক্তের সেলফি। ছবি সুদীপ্ত ভৌমিক

দু’টো দল সম্পূর্ণ দুই ভিন্ন মেরুতে থেকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতে এসেছিল। এক দল গতবারের চ্যাম্পিয়ন এবং এ বারেও সেই খেতাব ধরে রাখার দৌড়ে ফেভারিট। আর এক দল অতি সাধারণ, যাদের নিয়ে কারও কোনও আশা ছিল না। এমনকী তাদের নিজেদেরও না। সেই দুই দলই আজ, রবিবার ফাইনালে মুখোমুখি। ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা এক চিরশত্রুতার পুনরাবৃত্তি। ফেভারিট বনাম কালো ঘোড়া। ভারত-পাকিস্তান।

Advertisement

পাকিস্তান এমন একটা দলের বিরুদ্ধে খেলতে নামছে, যাদের শুরু থেকেই বিপক্ষের টুঁটি চেপে ধরার ক্ষমতা রয়েছে। শ্রীলঙ্কা ম্যাচটা ভারতের একটা খারাপ দিন ছাড়া আর কিছু ছিল না। বাকিটা পুরোটাই বিরাটদের রাজত্ব, ওদেরই দাপট। ভারতীয় বোলিংয়ের দাপটে বিপক্ষ ব্যাটসম্যানরা কখনওই মাথা তুলে দাঁড়াতে দেয়নি। দুর্দান্ত পার্টনারশিপ, অসাধারণ ফিল্ডিং, পার্টটাইমারদের ভাল ফর্ম— এ সবই ভারতকে এগিয়ে রেখেছে। আর অধিনায়ক বিরাটের মাথায় এত বিকল্প ভাবনা থাকে আর ও সেগুলো মাঝে মধ্যেই যে ভাবে প্রয়োগ করে, তা বিপক্ষকে ধন্দে ফেলে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। ব্যাটিংয়েও ভারতকে কেউ ছাপিয়ে যেতে পারেনি এই টুর্নামেন্টে। তবে সেরা আবিষ্কার অবশ্যই যশপ্রীত বুমরা। খেলাটা সম্পর্কে ওর জ্ঞান খুব স্পষ্ট আর চাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতাও দুর্দান্ত।

কিন্তু আসল লড়াইটা স্নায়ুর। মানসিকতার যুদ্ধ। পাকিস্তানের হারানোর কিছু নেই। ওরা ফাইনালে উঠেই অনেক অসাধ্য সাধন করেছে। টুর্নামেন্টের আগে পাকিস্তানের কিংবদন্তি ক্রিকেটাররাও কখনও দাবি করেননি যে তাঁদের দলের ফাইনাল ওঠা উচিত। ওঁরা চেয়েছিলেন পাকিস্তান ভাল ক্রিকেট খেলুক, এই পর্যন্তই। আর ভারতের কাছে প্রথম ম্যাচে হারের পর তো সবচেয়ে বড় পাকিস্তানি সমর্থকও এ রকম হবে, ভাবতে পারেননি বোধহয়। কিন্তু ভারতের বিরুদ্ধে হারের পর থেকে ওরা ধাপে ধাপে অসাধারণ উন্নতি করেছে। ফাইনালে হারলেও দেশের মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে হবে না। তাই ওরা ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে পারবে। কিন্তু ‘ফিয়ারলেস’ ক্রিকেট মানে তো আর ‘কেয়ারলেস’ ক্রিকেট নয়। তাই এ দিকটাও ওদের খেয়াল রাখতে হবে। দিনের দিন কী হবে, এটাই শেষ কথা। তবে চাপ বেশি থাকবে ভারতের ওপরই।

Advertisement

বোলিংটা তো এমনিতেই পাকিস্তানের ভাল। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওদের ফিল্ডিংটাও অবাক করে দিয়েছে। হাসান আলি ও জুনেইদ খানের সঙ্গে আমির, এমনকী রইসও দুর্দান্ত বোলিং করছে। আর ক্যাপ্টেন হিসেবে সরফরাজও প্রতি ম্যাচের সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত পরিণত হয়ে উঠছে।

ওদের সমস্যা ওদের ব্যাটিং। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভাল ব্যাট করলেও ভারতের চেয়ে পিছিয়েই আছে ওরা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো বড় টুর্নামেন্টের ফাইনালে যেখানে সব বিভাগেই শীর্ষে থাকতে হয়, সেখানে এই ধারাবাহিকতা ওরা দেখাতে পারবে কি না, সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন