সাফল্যের পিছনে ধোনির নেতৃত্ব, বলছেন ফ্লেমিং

দু’বছরের নির্বাসনের পরে প্রত্যাবর্তনেই আইপিএল চ্যাম্পিয়ন। স্বভাবতই ক্রিকেটার এবং ভক্তদের মধ্যে আবেগের কমতি ছিল না। সোমবার চেন্নাই ফেরার পরে রাতে প্রাক্তন বোর্ড প্রেসিডেন্ট এন শ্রীনিবাসনের দেওয়া পার্টিতে যোগ দেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৮ ০৪:১২
Share:

স্বাগত: সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে হারিয়ে আইপিএল জয় করে চেন্নাই ফিরলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। বিমানবন্দরে ভক্তেরা বরণ করে নিলেন তাঁদের অধিনায়ককে। সোমবার। ছবি: পিটিআই

ট্রফি নিয়ে মুম্বই থেকে নিজের শহরে ফিরল চেন্নাই এক্সপ্রেস। শহরও দখল নিল হলুদ বাহিনী!

Advertisement

দু’বছরের নির্বাসনের পরে প্রত্যাবর্তনেই আইপিএল চ্যাম্পিয়ন। স্বভাবতই ক্রিকেটার এবং ভক্তদের মধ্যে আবেগের কমতি ছিল না। সোমবার চেন্নাই ফেরার পরে রাতে প্রাক্তন বোর্ড প্রেসিডেন্ট এন শ্রীনিবাসনের দেওয়া পার্টিতে যোগ দেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরা।

চ্যাম্পিয়ন হয়ে ধোনি বলেছিলেন, দলগত সংহতির কারণেই ট্রফি জেতা সম্ভব হয়েছে চেন্নাই সুপার কিংসের। আবার সিএসকের কোচ স্টিভন ফ্লেমিং বলছেন, চেন্নাইয়ের সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে ধোনির নেতৃত্ব। সোমবার চেন্নাইয়ে ফিরে সাংবাদিক বৈঠকে এসে ফ্লেমিং বলেছেন, ‘‘চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পিছনে ধোনির অবদান অনস্বীকার্য। ওর মতো অধিনায়ক থাকলে দলের আত্মবিশ্বাস আলাদা মাত্রায় পৌঁছে যায়। ক্রিকেটারদের থেকে সেরাটা বার করে আনার ক্ষমতা রয়েছে ধোনির মধ্যে। উদাহরণ অম্বাতি রায়ডু। আইপিএল শুরুর আগে কেউ বুঝতে পেরেছিল যে, রায়ডু এ রকম ব্যাট করবে?’’

Advertisement

বয়স যে শুধুমাত্র একটি সংখ্যা তা এ বারের চেন্নাই দলকে দেখেই বোঝা গিয়েছে। এই সিএসকে দলকেই নিলামের পরে অনেকে ব্যঙ্গ করে বলেছিলেন, ‘‘ড্যাড’স আর্মি’’— বাবাদের ফৌজ। কিন্তু সবাইকে ভুল প্রমাণ করে দিয়েছেন ধোনিরা। সিএসকের অধিকাংশ ক্রিকেটারের বয়স তিরিশের ঊর্দ্ধে। ফ্লেমিংয়ের মতে, বয়স যতই হোক, নিজের ফিটনেস ধরে রাখাই আসল ব্যাপার। চেন্নাই কোচের মন্তব্য, ‘‘ক্রিকেটারদের বয়স নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলে। আমরা প্রমাণ করে দিয়েছি যে, বয়স নয়, ফিটনেস থাকলেই তুমি সফল হতে পারবে।’’ প্রায় একই কথা বলেছেন ধোনিও।

সিএসকে দলে বয়স যে কোনও ছাপ ফেলতে পারেনি, তা স্পষ্ট ফ্লেমিংয়ের কথায়। তিনি বলেন, ‘‘রায়ডুরই যেমন ৩৩ বছর বয়স হয়ে গিয়েছে। কিন্তু মাঠে তরুণ ক্রিকেটারদের মতোই ও নড়াচড়া করতে পারে। দম ফুরিয়ে যাওয়ার কোনও ব্যাপার নেই ওর মধ্যে।’’ ফ্লেমিং যোগ করেন, ‘‘আমি আরও একটা কথা বিশ্বাস করতাম। শেন ওয়াটসন, রায়ডু, সুরেশ রায়না, রবীন্দ্র জাডেজা আর অবশ্যই ধোনির মতো ক্রিকেটার প্রতিযোগিতায় আমাদের অনেক দূর টেনে নিয়ে যেতে পারবে, এই বিশ্বাসটা আমার ছিল। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা আগে থেকে কিছু বলা যায় না। ফাইনালে আমরা ভাল খেলেছি, তাই আজ ট্রফি আমাদের হাতে উঠেছে।’’

কিংবদন্তি: আইপিএল ফাইনাল দেখলাম লতাদিদির বাড়িতে বসে। লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে ছবি টুইট করে লিখলেন সচিন। রয়েছেন স্ত্রী অঞ্জলিও।

কাবেরী জলবণ্টনের প্রতিবাদে চেন্নাই থেকে পুণেয় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় সিএসকের ঘরের ম্যাচ। ফ্লেমিং মনে করেন, সেই কারণেই হয়তো আরও জেদ চেপে গিয়েছিল ক্রিকেটারদের। সিএসকে কোচ বলেন, ‘‘চেন্নাইয়ের পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই নিলামে দল বাছা হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি আমাদের পুণেয় সরিয়ে নিয়ে যায়। প্রথম দিকে মানিয়ে নিতে সমস্যা হলেও, দলের অভিজ্ঞতাই শেষমেষ আমাদের বাঁচিয়েছে। দলের ক্রিকেটারদের নিয়ে আমি গর্বিত। সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশে ওরা যে ভাবে মানিয়ে নিতে পেরেছে, তা সত্যি কঠিন কাজ ছিল। সেখানেই প্রয়োজন ছিল ধোনির মতো একজন অধিনায়কের। যে ঠিক সময়ে ঠিক ক্রিকেটারকে খেলিয়ে ম্যাচ বার করে আনতে পারে।’’

ফাইনালে শেন ওয়াটসনের ৫৭ বলে অপরাজিত ১১৭ রানের ইনিংস মুগ্ধ করেছে কোচকে। ফ্লেমিং বলছেন, ‘‘বিগব্যাশে সে রকম ভাবে নজর কাড়তে না পারলেও আমরা ওয়াটসনকে অন্য ভাবে ব্যবহার করতে চেয়েছিলাম। ওকে ওপেন করিয়ে ওর আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে এনেছে এমএস।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘শুরুর দিকে অলরাউন্ডার হিসেবেই খেলানো হচ্ছিল ওয়াটসনকে। কিন্তু ফাইনালে ওর বোলিং আমাদের প্রয়োজন পড়েনি। আমরা চেয়েছিলাম, ব্যাটিংয়ে যেন একশো শতাংশ উজাড় করে দিতে পারে ও। সেটাই হয়েছে। তাই এই ট্রফিটা নিয়ে চেন্নাই উড়ে আসতে পেরেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন