ভারতীয় দলের অধিনায়ক হওয়ার পরে একটা ব্যাপার নিয়ে চিন্তায় পড়েছিলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। কী ভাবে দলের কিছু ক্রিকেটারের অহংয়ে আঘাত না দিয়ে তাঁদের মধ্যে সাধারণ জ্ঞানটা বাড়ানো যায়।
শনিবারই ৩৭তম জন্মদিন গিয়েছে ভারতের অন্যতম সেরা অধিনায়কের। যে জন্মদিনে নিজের অধিনায়কত্ব জীবনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে মুখ খুলেছেন ধোনি। একটি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে ধোনি বলেছেন, ‘‘আমি মাঝে মাঝে ভাবতাম, এ সব সামান্য জিনিস বাকিদের বলে কী হবে। এটা তো একটু সাধারণ জ্ঞান থাকলেই বুঝে নেওয়া যায়। কিন্তু অধিনায়ক হওয়ার পরে অনেক ক্ষেত্রেই দেখলাম, কারও কারও মধ্যে সে-ই জ্ঞানটাও নেই। তাই খুব ছোটখাটো ব্যাপারও বলে দিতে হত।’’
দলের মধ্যে যে দু’ধরনের ক্রিকেটার আছে, সেটা বলেছেন ধোনি। এক দল বলার আগেই বুঝে নিতে পারত অধিনায়ক কী চাইছেন। অন্য দলের জন্য সব কিছু ব্যাখ্যা করে দিতে হত। ধোনির মন্তব্য, ‘‘কারও কারও সাধারণ বুদ্ধিটা খুবই প্রখর ছিল। এদের কিছু বললে এরা মনে মনে ভাবত, ‘আরে এ সব কেন বলছে, এর কোনও প্রয়োজন নেই।’ কিন্তু কারও কারও জন্যে প্রয়োজন হত।’’ কিন্তু মুখের ওপর সবাইকে বলাটাও যে সহজ ছিল না, সেটা জানাচ্ছেন ধোনি। কাজটা করতে হত এমন ভাবে যাতে কোনও ক্রিকেটারের সম্মানহানি না ঘটে।
দলের প্রত্যেক ক্রিকেটারকে নিয়ে যে ধোনি আলাদা করে ভেবেছেন, সেটা তাঁর কথায় পরিষ্কার। ‘‘কাউকে ভাল মতো বুঝতে গেলে আমাকে ওর সঙ্গে সময় কাটাতে হত। আর কাউকে না বুঝলে তাকে পরামর্শ দেওয়াও খুব কঠিন হয়ে যায়,’’ বলেছেন ক্যাপ্টেন কুল।
ধোনি অধিনায়ক থাকার সময় আরও একটা ব্যাপার দেখা গিয়েছে। কখনও কোনও প্রতিযোগিতায় ভারত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে দেখা যেত, ধোনি সব সময় নেপথ্যে থেকে গিয়েছেন। সামনে আসতে চাননি। যা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ধোনি বলেন, ‘‘আপনাদের কি মনে হয় না, একটা দলগত খেলায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে শুধু অধিনায়ক গিয়ে ট্রফি নেবে, এটা ঠিক নয়? আমার কাছে ব্যাপারটা বাড়াবাড়ি। আমার ব্যক্তিগত মতামত হল, ট্রফি-সহ উৎসবে ১৫ সেকেন্ড থাকতে পারলেই হল। তার পরে আর ওখানে থাকার দরকার নেই। উৎসব করতে সবাই ভালবাসে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে ট্রফির সঙ্গে সব সময় থাকতে হবে।’’
অধিনায়ক হিসেবে সব চেয়ে অস্বস্তিকর মুহূর্ত কী? ধোনি বলেছেন, ‘‘কেউ যখন প্রশ্ন করত, ধোনি, কেন আমাকে দল থেকে বাদ দেওয়া হল! এর পরে ওরা বলত, ‘আমি একটা প্রশ্ন করছি, কিন্তু জবাবটা শুনতে চাই না।’ এই ব্যাপারটা খুবই অস্বস্তিকর ছিল।’’ এর পরেই অবশ্য একটু মজা করে ধোনি বলেন, ‘‘ট্রফির সঙ্গে বেশি সময় না কাটালে আপনার মনে আরও একটা ট্রফি জয়ের ইচ্ছে জাগতে পারে। মনে হতে পারে, আর একটা ট্রফি জিতলে আরও ১৫ সেকেন্ড সময় পাওয়া যাবে ট্রফির পাশে থাকার।’’