ব্রিটিশদের চোখে ‘বিশ্বাসঘাতক’

স্কটিশ স্বাধীনতা নিয়ে মারের মন্তব্যে বিতর্ক

স্কটল্যান্ড আর গ্রেট ব্রিটেনের অঙ্গ থাকবে, নাকি তারা স্বাধীন দেশের মর্যাদা চায়, সেটা রাত পোহালেই জানা হয়ে যাবে গোটা বিশ্বের। বৃহস্পতিবারই স্কটিশরা এ ব্যাপারে নিজেদের মতামত জানিয়ে ভোট দিয়েছেন। ভোটের ফলাফল শুক্রবারই বেরোবে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৪:১৪
Share:

অতীত। এ ভাবেই বার বার ব্রিটিশ জাতীয় পতাকায় নিজেকে মুড়ে নিয়েছেন অ্যান্ডি মারে।

স্কটল্যান্ড আর গ্রেট ব্রিটেনের অঙ্গ থাকবে, নাকি তারা স্বাধীন দেশের মর্যাদা চায়, সেটা রাত পোহালেই জানা হয়ে যাবে গোটা বিশ্বের। বৃহস্পতিবারই স্কটিশরা এ ব্যাপারে নিজেদের মতামত জানিয়ে ভোট দিয়েছেন। ভোটের ফলাফল শুক্রবারই বেরোবে।

Advertisement

কিন্তু ভোটাভুটির দিন সকালেই এক বিখ্যাত স্কটিশ তাঁর ব্রিটিশ ভক্তদের চোখে এ ব্যাপারে ‘বিশ্বাসঘাতক’-এর তকমা পেয়ে গিয়েছেন।

অ্যান্ডি মারে। প্রাক্তন উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন এবং অলিম্পিক সোনা জয়ী টেনিস তারকা।

Advertisement

স্কটিশ অ্যান্ডি মারে-র ভোট কোন দিকে, তা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই বিশ্ব ক্রীড়ামহলে জল্পনা চলছিল। মারে ২০০২-এর ফেব্রুয়ারি থেকে ব্রিটেনের এক নম্বর টেনিস প্লেয়ার। ফ্রেড পেরির ৭৭ বছর পর প্রথম ব্রিটিশ পুরুষ প্লেয়ার হিসেবে ২০১৩-এ উইম্বলডন সিঙ্গলস চ্যাম্পিয়ন হওয়া ইস্তক ব্রিটিশ টেনিসপ্রেমীদের নয়নের মণি। উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আগের বছরই লন্ডন অলিম্পিকে সিঙ্গলসে সোনা জেতেন।

সেই মারে অবশেষে ভোটের দিন সকালেই মুখ খোলেন। এবং শেষ মুহূর্তে বলে দেন, “এই বিষয়ে কোনও নেতিবাচক প্রচারে আমি রাজি নই।” যে মন্তব্যকে ব্রিটিশ মিডিয়া মনে করছে, এটা অ্যান্ডি মারের স্কটিশ স্বাধীনতা প্রাপ্তির ব্যাপারে ‘হ্যাঁ’ বলাই। যার পরেই তীব্র বিতর্ক।

গতকাল পর্যন্ত এই স্পর্শকাতর ব্যাপারে মারে খুব সচেতন ভাবে নিজের অবস্থানে ছিলেন। বরাবর বলে এসেছেন, “আমি এক জন স্কটিশ বলে গর্বিত, একইসঙ্গে আমি এক জন ব্রিটিশ বলেও গর্বিত।” অথচ আজ ভোটের দিন সকালে বলেন, “আমার সাতাশ লক্ষ টুইটার ফলোয়ারের কাছে আজকের দিনটা বিরাট। কারণ আজই স্কটল্যান্ডের ভাগ্য নির্ণয় করবেন কয়েক মিলিয়ন স্কটিশ। তার আগে আমি কোনও নেতিবাচক প্রচার করতে চাই না।”

মারের এই মন্তব্যের পরেই তাঁর ব্রিটিশ ভক্তদের মধ্যে তীব্র বিরুদ্ধ প্রতিক্রিয়া হয়। মারের মন্তব্যকে মনে করা হচ্ছে, ঘুরিয়ে বলা যে, স্কটল্যান্ড স্বাধীন দেশ হোক! যে মন্তব্যের জেরে মারেকে ‘বিশ্বাসঘাতক’-এর তকমা পর্যন্ত দিচ্ছেন তাঁর ব্রিটিশ ভক্তরা। টুইটার, ফেসবুক-এর মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্কে মুহুর্মুহু পোস্ট আছড়ে পড়েছে। যার সারমর্ম; “এই লোকটা আজীবন টেনিসটা শিখেছে ব্রিটেনে। টেনিস তারকা হয়ে ওঠার সমস্ত সুযোগ সুবিধে ব্রিটেন থেকেই পেয়েছে। উইম্বলডন, অলিম্পিক, ডেভিস কাপে যখনই খেলেছে, প্রতিটা ম্যাচে ব্রিটিশদের থেকে সমর্থন পেয়ে এসেছে। অথচ, আজ বলছে, ব্রিটেনের থেকে আলাদা হয়ে যাক স্কটল্যান্ড। এটা বিশ্বাসঘাতকতা নয়তো কী!” উল্টো দিকে আবার স্কটিশ টেনিসপ্রেমীদের আশীর্বাদও পাচ্ছেন মারে। তাঁদের অনেকেই টুইট করেছেন, “মারেকে আশীর্বাদ করছি।”

কী দাঁড়াল? ৭৭ বছর পর ব্রিটিশ টেনিসকে উইম্বলডন এনে দেওয়া অ্যান্ডি মারে এই মুহূর্তে দ্বিখণ্ডিত—স্কটল্যান্ড আর ব্রিটেনে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন