রোমে শেষ চারে নাদালের সামনে জোকোভিচ

নোভাক কিন্তু রোমে চার বারের চ্যাম্পিয়ন। এবং বারো গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক শেষ কোনও প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার ফাইনালই খেলেছিলেন  গত বছরের উইম্বলডনে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৮ ০৪:১৫
Share:

আকর্ষণ: রোম ওপেনে সেমিফাইনালে ওঠার পথে রাফায়েল নাদাল। শুক্রবার। ছবি: এএফপি

রোম মাস্টার্সের সেমিফাইনালে নাদাল উঠবেনই ধরে নিয়েছিল সবাই। উঠলেনও। ফাবিও ফগনিনির বিরুদ্ধে প্রথম সেট হারলেও ছন্দ ফিরে পেতে খুব বেশি সময় লাগেনি রাফার। কিন্তু হালফিলের টেনিসে বড় খবর রোমে নোভাক জোকোভিচের সেমিফাইনালে ওঠা। টেনিস পণ্ডিতেরা তেমনটাই ভাবছেন।

Advertisement

এই যে নোভাক ৬-১, ৭-৫ সেটে স্পেনের আলবার্ট র‌্যামোস ভিনোলাসকে হারিয়ে শেষ আটে উঠলেন, আর কোয়ার্টার ফাইনালে ৬-২, ১-৬, ৬-৩ হারালেন কেই নিশিকোরিকে সেটা মোটেই নিছক দুটি সাদামাটা ম্যাচ জেতা না। কারণ এ’বছর এর আগে কোথাও কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতে পারেননি তিনি।

কনুই নিয়ে মারাত্মক কষ্ট পেয়েছেন। ছোটখাটো অস্ত্রোপচারের পরে কোর্টে ফিরে টানা হারতে হারতে এতটাই ভেঙে পড়েছিলেন বিশ্বের প্রাক্তন এক নম্বর যে এক বার হতাশা থেকে বলে ফেললেন, ‘‘খুব ভুল হয়ে গেল। এত তাড়াহুড়ো করে ফেরারই দরকার ছিল না। নিজের আত্মবিশ্বাসটাই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে যে কেউ এখন আমায় হারিয়ে দেবে।’’ হয়েছিলও তাই। বার্সেলোনায় তাঁকে দ্বিতীয় রাউন্ডেই হারিয়ে দেন বিশ্বের ১৪০ নম্বর মার্তিন ক্লিজান।

Advertisement

কিন্তু টেনিস ছেড়ে বেশি দিন যে থাকতেও পারেন না সার্বিয়ান মহাতারকা। নিজেই জানিয়েছিলেন সে কথা। তাই চেষ্টা ছাড়েননি। হতে পারে চাকা ঘুরতে শরু করল রোমেই। শেয চারে উঠে নোভাক নিজেও বললেন, ‘‘আমি ভীষণ খুশি। আসলে এ’বছর কখনও এতটা ভাল খেলতে পারিনি।’’

নোভাক কিন্তু রোমে চার বারের চ্যাম্পিয়ন। এবং বারো গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক শেষ কোনও প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার ফাইনালই খেলেছিলেন গত বছরের উইম্বলডনে। নোভাকের অবশ্য মনে হয়েছে রোমের মানুষেরা তাঁকে বড্ড ভালবাসে, ‘‘হতে পারে অনেক দিন পরে এত ভাল খেলার শক্তিটা ওরাই আমাকে দিল।’’

এ দিকে নাদাল আবার ২০১৪ সালের পরে প্রথম বার রোম মাস্টার্সের সেমিফাইনালে উঠে গেলেন। এবং প্রথম দু’টি ম্যাচে যতটা অনায়াসে জয় পেয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার হল ঠিক তার উল্টো। অবশ্য না হওয়ার কারণও নেই। এই ফগনিনি অতীতে তিন বার স্পেনীয় মহাতারকাকে হারিয়েছেন। ডান হাতের খেলোয়াড়। ব্যাক হ্যান্ড মারেন দু’হাতে। র‌্যাঙ্কিংয়ে এখন ২১ হলেও এক সময় প্রায় প্রথম দশে ঢুকে পড়েছিলেন। নাদালের মতোই ফুটবল বলতে পাগল। ইন্টার মিলানের ম্যাচে বহু বার তাঁকে বক্সে দেখা গিয়েছে। শুধু ফুটবল প্রেমের জন্য নয়, নাদালের সঙ্গে আরও এক জায়গায় মিল। তিনিও ট্যুরে পরিচিত ক্লে কোর্ট বিশেষজ্ঞ হিসেবে। অসম্ভব ফিট। কিন্তু চিরকালই মার খেয়েছেন একটা জায়গায়। বড্ড মেজাজি। একবার তো এক মহিলা আম্পায়ারকেই খারাপ কিছু বলে ফেললেন। যাতে তাঁকে একটা গ্র্যান্ড স্ল্যামে নামতেই দেওয়া হয়নি। বৃহস্পতিবার রোমের লাল মাটির কোর্টে অবশ্য বিতর্কিত কিছু ঘটাননি ফগনিনি। তবু যে প্রথম সেট জিতেও ম্যাচ হেরে বসলেন রাফার কাছে, সেটা তাঁর ব্যর্থতা নয়, প্রতিপক্ষের কৃতিত্ব। প্রথম সেটে নিজের ভুল বুঝতে পেরে লম্বা র‌্যালির রাস্তায় হাঁটলেন ক্লে কোর্টের রাজা। এবং দু’ঘণ্টা ১৪ মিনিটের যুদ্ধে শেষ হাসি হেসে বলে গেলেন, ‘‘ফগনিনি তো এখানকারই ছেলে। ভেবেছিলাম রোমের সবাই ওর জন্যই চেঁচাবে। অথচ আমিও প্রচুর হাততালি পেলাম। দুঃখিত রোম।’’ দুঃখিত না হলেও, নাদাল এখন উদ্বিগ্নও। কারণ এ বার তাঁর সামনে নোভাক। বললেন, ‘‘নোভাক বিশ্বের সেরা। বিশ্বাস করুন, ওর বিরুদ্ধে খেলতে চাইনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন