দ্বিতীয় রাউন্ডে নাদালের সামনে ফের রসুল-কাঁটা

এক নম্বর কোর্টে মারে-কে ৬-১, ৬-০ চূর্ণ করে মারিয়া শারাপোভার দুরন্ত শুরু। ঘাসের সাম্রাজ্যে রাজা রজারের প্রত্যাশিত স্ট্রেট সেটে জয়। প্রথম সেট খুইয়ে অনুরাগীদের রক্তচাপ বাড়ানোর পর রাফায়েল নাদালের দ্বিতীয় রাউন্ডে লুকাস রসুলের সামনে পড়া। শীর্ষ বাছাই সেরেনা উইলিয়ামসের নিখুঁত শুরু। তারকাদের ঘিরে টেনিস-বিনোদনের নানা উপাদানের মধ্যেই উইম্বলডনের দ্বিতীয় দিনে চর্চায় থাকলেন ভারতের সোমদেব দেববর্মন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৪ ০৩:৩০
Share:

নাদাল: আতঙ্ক জাগিয়ে জিতলেন।

এক নম্বর কোর্টে মারে-কে ৬-১, ৬-০ চূর্ণ করে মারিয়া শারাপোভার দুরন্ত শুরু।

Advertisement

ঘাসের সাম্রাজ্যে রাজা রজারের প্রত্যাশিত স্ট্রেট সেটে জয়।

প্রথম সেট খুইয়ে অনুরাগীদের রক্তচাপ বাড়ানোর পর রাফায়েল নাদালের দ্বিতীয় রাউন্ডে লুকাস রসুলের সামনে পড়া।

Advertisement

শীর্ষ বাছাই সেরেনা উইলিয়ামসের নিখুঁত শুরু।

তারকাদের ঘিরে টেনিস-বিনোদনের নানা উপাদানের মধ্যেই উইম্বলডনের দ্বিতীয় দিনে চর্চায় থাকলেন ভারতের সোমদেব দেববর্মন। প্রথম রাউন্ডে পনেরো নম্বর বাছাই বিগ সার্ভিং পোল, জের্জি জানোউইচের কাছে হেরে যাওয়া সত্ত্বেও। অফ ফর্মে থাকা ভারতের এক নম্বর সিঙ্গলস তারকা গত বছরের সেমিফাইনালিস্টের সঙ্গে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় পাঁচ সেটে যে লড়াইটা চালালেন, সেটা দেখে পরাজিতের জন্যই বেশি গলা ফাটাল গ্যালারি।

গত ফেব্রুয়ারিতে দিল্লি চ্যালেঞ্জার জেতার পর থেকে একেবারেই ছন্দে নেই সোমদেব। যিনি শেষ ১৩ টুর্নামেন্টে এই নিয়ে দশ বার প্রথম রাউন্ডে ছিটকে গেলেন। কিন্তু ৬-৪, ৩-৬, ৩-৬, ৬-৩, ৩-৬ হারার আগে বিনা যুদ্ধে ছাড়লেন না এক ইঞ্চি জমি। একটা সময় তো মনে হচ্ছিল, বিশ্বের পঁচিশ নম্বরকে ছিটকে দিয়ে অঘটন ঘটিয়েই ফেলবেন। অন্য দিকে, ছ’ফুট আট ইঞ্চির জানোউইচের সার্ভিস নির্ভর খেলা এ দিন ধাক্কা খায় তাঁর সার্ভিস ঠিকঠাক না পড়ায়। সব মিলিয়ে ১৯টি ডাবল ফল্ট করলেন পোলিশ তারকা। একগাদা আনফোর্সড এরর-ও। তবে প্রথম সেটের পর থেকে তাঁর ফোরহ্যান্ড ঠিকঠাক পড়তে শুরু করলে সমস্যা শুরু হয় সোমদেবের। প্রতিপক্ষের বুদ্ধিদীপ্ত ড্রপশটের জবাবও বেশিরভাগ সময় খুঁজে পাননি তিনি। পঞ্চম সেটের চতুর্থ গেমে সোমদেব চারটি ব্রেক পয়েন্ট বাঁচিয়েও জানোউইচের ৩-১ এগিয়ে যাওয়া রুখতে পারেননি। যার পর থেকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় পোলিশের হাতে।

সোমদেবের বেসলাইন নির্ভর টেনিস ঘাসের কোর্টে জানোউইচকে হারানোর জন্য শেষ পর্যন্ত যথেষ্ট হল না। তেইশ বছরের প্রতিপক্ষের সঙ্গে ঠিক একই ভাবে গত বছরের অস্ট্রেলীয় ওপেনের দ্বিতীয় রাউন্ডে পাঁচ সেটে লড়ে হেরেছিলেন। এ বছর উইম্বলডনে সেই হারের প্রতিশোধ নেওয়া হল না সোমদেবের।

ঘরের চ্যাম্পিয়ন অ্যান্ডিকে নিয়ে ব্রিটিশদের উন্মাদনার মধ্যেই মারিয়া শারাপোভা আবার হারিয়ে বসলেন আর এক মারেকে! ইনিও ব্রিটিশ। তবে অ্যান্ডি নন, সামান্থা। বিশ্বের ২৪৭ নম্বর, ছাব্বিশের সামান্থা মারে-কে ৬-১, ৬-০ হারাতে প্রায় কোনও পরিশ্রমই করতে হল না ২০০৪-এর চ্যাম্পিয়নকে। শীর্ষ বাছাই সেরেনা উইলিয়ামসও সেন্টার কোর্টে প্রায় একই রকম দাপট দেখিয়ে জিতলেন। নিজের থেকে বয়সে আট বছরের ছোট, স্বদেশের আনা তাতিশভিলিকে মার্কিন মহাতারকা হারালেন ৬-১, ৬-২।


সোমদেব: আশা জাগিয়ে হারলেন।

বিশ্বের ৮৩ নম্বর, ইতালির পাওলো লরেঞ্জিকে ৬-১, ৬-১, ৬-৩ দুরমুশ করে দ্বিতীয় রাউন্ডে পৌঁছে অল ইংল্যান্ড ক্লাবের সাত বারের চ্যাম্পিয়ন আবার বললেন, “আমার মনে হয়, আজ ভাল খেলেছি। অনেক ক’টা ব্রেক পেলাম। সার্ভিসও ভাল পড়ল।” রজার ফেডেরার এর পরে যোগ করেন, “প্রথম ম্যাচটা জিততে পারা সব সময় দারুণ স্বস্তির অনুভূতি!” দ্বিতীয় রাউন্ডে ফেডেরারের সামনে বিশ্বের ১০৩ নম্বর, লুক্সেমবুর্গের গিলেস মুলার।

অন্য দিকে, সহজ কাজকে কী করে কঠিন করে তুলতে হয়, সেটা দেখালেন বিশ্বের এক নম্বর রাফায়েল নাদাল। ফরাসি ওপেন চ্যাম্পিয়নকে এখানে দ্বিতীয় বাছাই করা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু ঘাসের কোর্ট ইদানীং তাঁর কাছে যে কত বড় জুজু, সেটা আরও একবার প্রমাণ করলেন ২০০৮ ও ২০১০-এর চ্যাম্পিয়ন। বিশ্বের ৫১ নম্বর স্লোভাক, মার্টিন কাইজানের কাছে প্রথম সেট ৪-৬ হেরে বসে। পরের তিনটে অবশ্য জিতলেন ৬-৩, ৬-৩, ৬-৩। তবে তারই মধ্যে চতুর্থ সেটে নিজের সার্ভিস খুইয়ে আবার চাপ তৈরি করে ফেলেছিলেন। তবে পরের গেমেই ক্লাইজানকে পাল্টা ব্রেক করে জয় নিশ্চিত করেন।

এ দিনের জয়টা নাদালকে উইম্বলডনের ঘাসে অতিপ্রয়োজনীয় আত্মবিশ্বাস জোগাবে। গত বছর প্রথম রাউন্ডে অখ্যাত বেলজিয়ান স্টিভ ডার্সিসের কাছে হারার পর যেটা তাঁর খুব দরকার ছিল। তবে দ্বিতীয় রাউন্ডে নাদালের সামনে লুকাস রসুল। ২০১২-য়, এই চেক প্লেয়ারের কাছেই দ্বিতীয় রাউন্ডে অবিশ্বাস্য হেরে বিদায় নিতে হয়েছিল নাদালকে। এ বার সেই অপমানের বদলা নিতে পারেন কিনা, সেটাই দেখার। নাদাল নিজে অবশ্য বলেছেন, “এ বছরটা আগের দু’বছরের থেকে আলাদা। উইম্বলডনের ঘাসে লড়তে আমি তৈরি।”

দিনের অঘটন বলে যদি কিছু থাকে, সেটা মেয়েদের সপ্তম বাছাই জেলেনা জানকোভিচ, চোদ্দো নম্বর বাছাই, ইতালির সারা ইরানি এবং আঠাশ নম্বর বাছাই শ্বেতলানা কুজনেৎসোভার হার। জো-উইলফ্রেড সঙ্গা, স্ট্যানিসলাস ওয়ারিঙ্কা, লেটন হিউইট, কেই নিশিকোরি, সিমোনা হালেপ, আনা ইভানোভিচ, ক্যারোলিন ওজনিয়াকির মতো বড় নামেরা সবাই জিতলেন।

ছবি: এএফপি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন