সেরিনার উপরে কোনও রাগ নেই ওসাকার

ফাইনালে সেরিনার সঙ্গে চেয়ার আম্পায়ারের ঝামেলার জেরে জাপানের এই মেয়ের উপর থেকে প্রচারের আলো সরে যাচ্ছিল। ওসাকা যা নিয়ে ভাবছেনই না। সেই ঘটনা নিয়ে তাঁর কোনও খেদ বা অনুতাপও নেই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৩৯
Share:

যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে নতুন চ্যাম্পিয়ন নেয়োমি ওসাকা।ছবি এএফপি

যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে নতুন চ্যাম্পিয়ন নেয়োমি ওসাকা এখন নিজের দেশে সংবর্ধনায় ভাসছেন। কিন্তু একবারের জন্যও যাঁকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন, সেই সেরিনা উইলিয়ামসের সমালোচনার রাস্তায় হাঁটলেন না। অথচ ফাইনালে সেরিনার সঙ্গে চেয়ার আম্পায়ারের ঝামেলার জেরে জাপানের এই মেয়ের উপর থেকে প্রচারের আলো সরে যাচ্ছিল। ওসাকা যা নিয়ে ভাবছেনই না। সেই ঘটনা নিয়ে তাঁর কোনও খেদ বা অনুতাপও নেই।

Advertisement

সেরিনার মতো খেলোয়াড়কে ৬-২, ৬-৪ হারিয়ে ওসাকা চ্যাম্পিয়ন হন। অথচ পুরস্কার নেওয়ার সময় দর্শকদের চেঁচামেচিও সহ্য করতে হয়। ‘‘সে সময়টায় মনে হয়েছিল দর্শকরা আমাকেই টিটকিরি দিচ্ছে। কিন্তু ঠিক কী হচ্ছিল, আমি নিজেও বুঝিনি। কারণ চারদিকে বড্ড বেশি চিৎকার হচ্ছিল। নিজের মধ্যেও চাপ অনুভব করছিলাম,’’ বলেছেন ওসাকা। ঘটনা হচ্ছে, এত কিছুর মধ্যেও ওসাকা মেজাজ হারাননি। এমনকি চেয়ার আম্পায়ার কার্লোস র‌্যামোসকে যখন সেরিনা ‘চোর’ বলছিলেন, তখনও নিজের মধ্যেই ছিলেন। যা নিয়ে ওসাকার কথা, ‘‘ছোটবেলায় অনুশীলনের সময়ও আমাদের শেখানো হয়েছে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড় রেগে গেলে সে দিকে নজর না দিয়ে নিজের খেলাটা খেলে যেতে। আমি ঠিক সেটাই করেছি,’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘এটা ঘটনা যে ফাইনালের দিন উল্টো দিকে যা ঘটছিল তা নিয়ে আমিও ভেবেছি। তার উপর দর্শকেরাও প্রচুর চেঁচামেচি করছিল। তবে তখন আমার একটাই লক্ষ ছিল। সেরা খেলা খেলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হাতে রাখা।’’

ওসাকা অবশ্য পরে উপলব্ধি করেন, আসলে তাঁকে উদ্দেশ্য করে দর্শকরা টিটকিরি দেয়নি সে দিন। দিয়েছিল চেয়ার আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের জন্য। যার জেরে সেরিনাকে প্রথমে একটি পয়েন্ট এবং পরে একটি গেম হারাতে হয়। সেরিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ম্যাচ চলাকালীন কোচ প্যাট্রিক মোরাতাগলুর কাছ থেকে নির্দেশ নিচ্ছিলেন। যার জেরে সেরিনা চেয়ার আম্পায়রকে ‘চোর’ বলতেও ছাড়েননি।

Advertisement

এমনিতে ওসাকা সে দিনের ঘটনায় বেশ খানিকটা অবাকই হন। প্রশ্ন করা হয়, পুরস্কার নেওয়ার সময় সেরিনা তাঁকে কী বলেছিলেন? তাতে জাপানী প্রতিভার জবাব, ‘‘সেরিনা বলল, ও আমার জন্য গর্বিত। আর দর্শকরা আমাকে বিদ্রুপ করছে না। তাই এটা নিয়ে আমাকে ভাবতে নিষেধ করল।’’ ওসাকার জন্ম জাপানে হলেও টেনিসের যাবতীয় পাঠ নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতায় এখন তিনি জীবনের সেরা র‌্যাঙ্কিং সাত নম্বরে। যা নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘সাত নম্বরে ওঠাটা বিরাটা ব্যাপার। আর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে আমার মনের অবস্থাটা কী ছিল নিজেও বুঝতে পারিনি। সেরিনার ঘটনার জন্য মন খারাপেরও প্রশ্ন ছিল না। আর তা হবেই বা কেন? আমার তো গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেলার কোনও অভিজ্ঞতাই ছিল না।’’ সঙ্গে এটাও জানিয়েছেন যে, সেরিনা যাই করুন, তাঁর সম্পর্কে কোনও খারাপ কিছু মনে হয়নি, ‘‘ওকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা আমার কাছে অবিশ্বাস্য।’’

আপাতত পরবর্তী লক্ষ্য কী জানতে চাওয়া হলে ওসাকা বলেছেন, সিঙ্গাপুরে বছরের শেষ ডব্লিউটিএ-র মঞ্চে ভাল কিছু করতে চান। যদিও এটা নিয়ে নিজেকে চাপে ফেলছেন না। পাশাপাশি টোকিয়ো অলিম্পিক্স নিয়েও এখন থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখছেন, ‘‘সবারই স্বপ্ন থাকে অলিম্পিক্সে অংশ নেওয়ার। তার উপর নিজের দেশে খেলা। অবশ্যই টোকিয়োয় সোনা জিততে চাই। সে ভাবেই নিজেকে তৈরি করব।’’ এ দিকে জাপানের প্রাক্তন তারকা কিমিকো দাতে মনে করেন, কোনও একদিন এই মেয়ে বিশ্বের এক নম্বর মেয়েও হবেন। যা শুনে ওসাকার প্রতিক্রিয়া, ‘‘অত কিছু ভাবছি না। আপাতত মনে হচ্ছে কখন দিদির (টেনিস খেলোয়াড় মারি) বেরিয়ে শপিংয়ে যাব। আর আমরা আমাদের প্রিয় আইসক্রিমগুলো খাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন