পয়লা বৈশাখে মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেন।
নববর্ষের প্রথম দিন দুই প্রধানের দুই কোচ দু’ রকম শপথ নিলেন।
বারপুজো করে বাগান কোচ সঞ্জয় সেন বলে গেলেন। ‘‘‘প্রার্থনা করছি, এ বছর যেন আমরাই আই লিগ পাই। শিলং থেকে শুরু করতে হবে পয়েন্ট সংগ্রহ।’’
আর ইস্টবেঙ্গলের ডাচ কোচ এলকো সতৌরির শপথ, ‘‘মোহনবাগান পয়েন্ট নষ্ট করলে আমাদের সুবিধা। তবে আমাদেরও জিততে হবে।’’
দুই প্রধানে বারপুজো হল দু’ রকম ভাবে। ইস্টবেঙ্গলে চিরাচরিত প্রথা মেনে সম্ভাব্য অধিনায়ক গুরবিন্দর সিংহ আর সহ অধিনায়ক রবার্ট পুজো করলেন। কিন্তু বাগান হাঁটল অন্য রাস্তায়। পরের মরসুমের অধিনায়ক নন, মোহনবাগানে বারপুজো করলেন কোচ সঞ্জয় সেন।
পরের মরসুমে সঞ্জয়কেই কোচ রাখা হচ্ছে এই ইঙ্গিত দিলেও সরকারি ভাবে কোনও ঘোষণা হয়নি। তবে কতার্রা জানাচ্ছেন, পরের রয়্যাল ওয়াহিংডো ম্যাচ-সহ আই লিগের পাঁচটা ম্যাচ যাতে জিতে ফেরে বাগান, সেই লক্ষ্যেই ফুটবল-ঈশ্বরের আশীর্বাদ নেওয়ার জন্য বাগান কোচকে বাছা হয়েছিল। সনি-বোয়ারা এয়ারপোর্টে বিমান ধরতে চলে গেলেও কোচকে নিয়ে আসা হয়েছিল।
এ দিন আই লিগের ম্যাচ খেলার জন্য সনি-বোয়ারা দুপুরের বিমানে শিলং উড়ে গিয়েছেন। সে জন্য হাতে গোনা রিজার্ভ বেঞ্চের দু’চার জন ছাড়া কোনও ফুটবলারই বাগানের বার পুজোয় আসেননি। উল্টো দিকে আবার সকালে ইস্টবেঙ্গলের প্র্যাকটিস থাকায় মেহতাব-র্যান্টি-খাবরারা সবাই বার পুজোতে উপস্থিত ছিলেন। তবে সবারই মন পড়ে রয়েছে আই লিগে। র্যান্টি যেমন বললেন, ‘‘আমাদের পুরো ফোকাস এখন আই লিগে। অন্য কোনও কিছু নিয়ে ভাবতে রাজি নই। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ এখনও আমাদের রয়েছে।’’ পাশাপাশি লাল-হলুদ ক্লাব তাঁবুতে গুঞ্জন, এলকোর সহকারী হিসেবে সঞ্জয় মাঝিকে ফেরানো হচ্ছে।
চিরাচরিত চেনা ছবি ইস্টবেঙ্গলেও।
বহু দিন পর বাংলা নববর্ষের দিন দু’ প্রধানই আই লিগে ভাল জায়গায় রয়েছে। সম্ভবত সে জন্যই দু’দলের কর্তাদের মুখেই স্বস্তি। বেজেছে সানাই, গান। বিতরণ করা হয়েছে মিষ্টি। তবে অন্য বারের তুলনায় সদস্য সমর্থকদের ঢল চোখে পড়েনি। এসেছিলেন বেশ কিছু প্রাক্তন ফুটবলার। মোহনবাগান মাঠে দেখা গেল আই লিগ নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি আসন্ন নির্বাচন নিয়েও ফিসফাস। এ দিন ফুটবলার সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখা গেল, ক্লাবের ক্ষমতাসীন কর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলতে। শোনা যাচ্ছে, তাঁকে ভাইস প্রেসিডেন্ট করতে চায় শাসক গোষ্ঠী। প্রসূন নিজেই বললেন, ‘‘যদি আইনগত সমস্যা না হয় তা হলে আমি ভাইস প্রেসিডেন্ট হতে রাজি। চাই সবাই মিলে মোহনবাগানের ভাল করতে।’’কিছু দিন আগেও সুব্রত ভট্টাচার্যের পাশে বসে প্রসূন সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। তাঁরা এক সঙ্গে নানা সিদ্ধান্তও নিয়েছেন। তবে এ দিনের ঘটনার পর স্পষ্ট, সুব্রতর সঙ্গে প্রসূনের দূরত্ব বেড়ে গিয়েছে। দু’ জনে দু’ দিকে হাঁটতে শুরু করে দিয়েছেন।
এ দিকে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের মতো ইউনাইটেড স্পোর্টস, ভবানীপুর, খিদিরপুর, হিন্দমোটরের জিএস গোলকিপার অ্যাকাডেমি সহ ময়দানের ছোট বড় সব ক্লাবেই এ দিন নিয়ম মেনে বার পুজো হয়েছে।
বুধবার ছবি তুলেছেন শঙ্কর নাগ দাস।