ইউরোপ সেরার ট্রফি হাতে। বৃহস্পতিবার। -রয়টার্স
‘পট ওয়ান’। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় মোনাকোয় হওয়া ২০১৬-১৭ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ বিন্যাসে বিশ্ব ফুটবলের নজর ছিল এই পটেই।
উয়েফার নতুন নিয়ম অনুযায়ী লা লিগা চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা ছিল। বুন্দেশলিগা চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখ ছিল। সেরি এ চ্যাম্পিয়ন জুভেন্তাস ছিল। গত মরসুমের চ্যাম্পিয়ন লিগ জয়ী দল রিয়াল মাদ্রিদ ছিল। আর এই সমস্ত হেভিওয়েট ক্লাবের সঙ্গেই পট ওয়ান-এ জায়গা করে নেয় ইংল্যান্ডের এমন একটা দল যাদের কাছে এক বছর আগেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শব্দটাই ছিল রূপকথার মতো! যাদের ফুটবলাররা টিভিতেই দেখতেন ইউরোপের সেরা ক্লাব টুর্নামেন্ট।
কিন্তু গত মরসুমের প্রিমিয়ার লিগ সব পাল্টে দিয়েছে। হেভিওয়েটদের সঙ্গে সেই ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দলের ভক্তরাও এ বার মাঠে বসে শুনতে পাবেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেই বিখ্যাত অ্যান্থেম। বৃহস্পতিবার রাত থেকে স্বপ্ন আর স্বপ্ন রইল না। বাস্তবে পরিণত হল, যখন লটারিতে গ্রুপ বিন্যাসের শুরুর দিকেই ক্ল্যারেন্স সিডর্ফের মতো কিংবদন্তি ফুটবলার ঘোষণা করলেন, ‘‘ওয়াও, গ্রুপ জি-তে লেস্টার সিটি!’’
ক্লদিও র্যানিয়েরির লেস্টার সিটির একটা রূপকথা শেষ হয়েছে কিছু দিন আগেই প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে। এ বার শুরু আর এক গৌরব পর্বের। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এটাই লেস্টারের প্রথম মরসুম। আর গ্রুপ বিন্যাসের পর দেখা যাচ্ছে খুব একটা কঠিন গ্রুপে পড়েনি তারা। লেস্টারের সঙ্গে রয়েছে এফসি পোর্তো, ক্লাব ব্রুজ ও কোপেনহাগেন।
কিন্তু তারকা কোচ পেপ গুয়ার্দিওলার চ্যালেঞ্জ অনেক কঠিন। ম্যাঞ্চেস্টার সিটিকে নকআউটে তুলতে হলে গুয়ার্দিওলাকে ওষুধ খুঁজতে হবে লিও মেসিকে আটকানোর। কারণ সিটির গ্রুপেই রয়েছে গুয়ার্দিওলার পুরনো দল বার্সেলোনা। এখানেই সমস্যার শেষ নয়। গ্রুপের বাকি দুটো দল বরুসিয়া মোনশেনগ্লাডবাখ আর সেল্টিক। নির্যাসে, অনায়াসে সিটির গ্রুপের পাশে মারণগ্রুপের তকমা বসিয়ে দেওয়া যায়।
আবার গত মরসুমের স্বপ্নের সেমিফাইনাল এ বার গ্রুপেই দেখা যাবে। কারণ দিয়েগো সিমিওনের আটলেটিকো মাদ্রিদের সামনে ফের বায়ার্ন মিউনিখ। এ ছাড়াও এই গ্রুপে রয়েছে পিএসভি আইন্দোভেন আর এফসি রস্তভ। ডজন বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে রিয়াল মাদ্রিদের সামনে শুরুতে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড, স্পোর্টিং লিসবন ও লেগিয়া ওয়ারস।
গ্রুপ বিন্যাস ছাড়াও ইউরোপের সেরা ফুটবললারও এ দিন বাছল উয়েফা। যে লড়াই চব্বিশ ঘণ্টা আগেই শুরু হয়ে গিয়েছিল যখন দুই দাবিদার রোনাল্ডো এবং গ্রিজম্যান একে অপরকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বসেছিলেন। কিন্তু মাঠের বাইরের মাদ্রিদ ডার্বিও জিতলেন রোনাল্ডো। একই মরসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ইউরো জেতার সৌজন্যে ২০১৫-১৬ মরসুমে ইউরোপের সেরা প্লেয়ার নির্বাচিত হলেন রোনাল্ডো। ‘‘এই পুরস্কার সতীর্থদের উৎসর্গ করতে চাই। ওদের সাহায্য না পেলে আমি এটা পেতাম না,’’ বলছেন রোনাল্ডো।
সেই রোনাল্ডো যিনি নিজেকে ছাড়া কাউকে চেনেন না। সতীর্থ গোল করলেও সেলিব্রেশনে যোগ দেন না। তাঁর গলাতেও আজ আমি-র আগে আমরা!